ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ

বায়ু, পানি ও শব্দ দূষণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৫ জুন ২০১৬

বায়ু, পানি ও শব্দ দূষণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে

নিখিল মানখিন ॥ পরিবেশ দূষিত হওয়ার মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। শিল্প বর্জ্য, মেডিক্যাল বর্জ্য, প্রাণিজ এবং অন্যান্য বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ু, পানি ও শব্দ দূষণ যেন আজ স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। জলবায়ুর প্রতিকূল প্রভাবও পরিবেশের ওপর পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা জটিল ও অপরিচিত রোগ হয়ে থাকে। বেড়ে গেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দশম। আর বায়ুদূষণের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৭৮টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে পেছনে বাংলাদেশের অবস্থান। গত এক যুগে দূষণ ও পরিবেশের বিচারে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। পরিবেশের বিপর্যয় মানে জীবনের বিপর্যয়। পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের মধ্যে সমন্বয় নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ রবিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বাঁচায় প্রকৃতি, বাঁচায় দেশ’। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দশম। আর বায়ুদূষণের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৭৮টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে পেছনে বাংলাদেশের অবস্থান। আট বিষয় বিবেচনা করে ১শ’ স্কেলে বাংলাদেশের স্কোর ২৫ দশমিক ৬১। আর কেবল বায়ুদূষণের কথা বিবেচনা করলে বাংলাদেশের স্কোর ১শ’-এর মধ্যে মাত্র ১৩ দশমিক ৮৩। আর অবস্থান সবার শেষে, অর্থাৎ ১৭৮ নম্বরে। তবে জনস্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন ও কৃষি খাতের চিত্রে সামান্য উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। গত এক যুগে দূষণ ও পরিবেশের বিচারে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত ‘গ্লোবাল এনভায়রনমেন্টাল পারফর্মেন্স ইনডেক্স ২০১৪’ অনুযায়ী, বিশ্বের ১৭৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৯ নম্বরে। পরিবেশ ও জীবনমানের ওপর এর প্রভাব নিয়ে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বৈশ্বিক সূচক প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে খারাপ দশায় থাকা এই দেশগুলো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্দশার মধ্যে থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই পরিবেশের বিষয়গুলো পাশ কাটিয়ে যায়। জনস্বাস্থ্যের ওপর দূষণের প্রভাব, বায়ুর মান, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন, পানিসম্পদ, কৃষি, বনায়ন, মৎস্যসম্পদ, জীববৈচিত্র্য ও বাসস্থান এবং আবহাওয়া ও জ্বালানিÑ এ আট বিষয় বিবেচনা করে ১শ’ স্কেলে বাংলাদেশের স্কোর ২৫ দশমিক ৬১। জলবায়ু ও পরিবেশ ॥ পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ রইছউল আলম ম-ল জানান, পরিবেশ ও জীবন একে অপরের পরিপূরক। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অব্যাহত থাকে জীবনচক্র। তবে মানুষের জীবনচক্রে গৃহপালিত প্রাণীর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আবার প্রাণীদেরও বেঁচে থাকতে নির্ভর করতে হয় পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার ওপর। পরিবেশের বিপর্যয় মানে জীবনের বিপর্যয়। প্রাণিস্বাস্থ্য, প্রাণী উৎপাদন ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন একটি আন্তঃসম্পর্কিত জটিল প্রক্রিয়া, যার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে রোগের প্রাদুর্ভাব, উৎপাদন ব্যবস্থাসহ আরও অনেক কিছু। বৈরী জলবায়ুর করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না বাংলাদেশও। এর পাশাপাশি যোগ হয়েছে পরিবেশদূষণ। দূষণের দোষে দূষিত হয়ে উঠছে চারপাশ। শিল্প বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, প্রাণিজ এবং অন্যান্য বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গৃহপালিত প্রাণী। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে চারণভূমির অভাবে প্রাণী খাদ্যের অভাব হচ্ছে, তাপজনিত, ভেক্টরবাহিত এবং সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে প্রাণিসম্পদ উৎপাদন হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। অতিবৃষ্টি, উচ্চতাপমাত্রা এবং খরার ফলে মানুষের অজান্তেই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক শক্তিশালী ভাইরাস। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, ভেক্টর প্রভাবিত এবং খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা রোগ হয়ে থাকে। নদীর এক কূল ভেঙ্গে গড়ে উঠছে আরেক কূল। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন পরিবেশ, যা অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জন্য বাসযোগ্য হয়ে ওঠে না। নদ-নদী দূষণ ॥ ঢাকার চার নদীকে দখল, দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে জরুরী ভিত্তিতে এ্যাকশন প্ল্যান নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে গঙ্গা এ্যাকশন প্ল্যানের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনা, অভিজ্ঞতা ও পারস্পারিক সহযোগিতা গ্রহণ করা যেতে পারে। এছাড়া রাইন ও টেমস নদীর উদাহরণও কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীদূষণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হলেও দূষণ রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। দখল রোধে কিছু অভিযান চালানো হয়েছে মাত্র। এছাড়া অন্য কোন উপায়ে ঢাকার নদীগুলো রক্ষা করা যাবে না। তারা বলছেন, গাজীপুর, টঙ্গী, সাভার, কেরানীগঞ্জ, কামরাঙ্গীরচর, রূপগঞ্জ ঢাকা শহরের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল থেকে নির্গত তরল বর্জ্য নির্গমনের মুখগুলো নদীর দিক থেকে ঘুরিয়ে নিতে হবে যাতে নদীতে বর্জ্য নিক্ষিপ্ত হতে না পারে। নতুন লাইন তৈরি করে নদীর ধার বরবার কিনারা দিয়ে দূরে বিশাল বাঁধানো কূপ, শোধনাগার বা কারখানা (রিসোর্স অব রিসাইকেল ইউনিট) স্থাপন করতে হবে। ইউরোপে বর্জ্য নিক্ষেপের চার হাজার রিসাইকেল ইউনিট রয়েছে। এর মাধ্যমে মিথেন গ্যাস দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করা হয়। ভারতের গঙ্গা এ্যাকশন প্ল্যানে অনুরূপ প্রযুক্তি গ্রহণ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতের এ্যাকশন প্ল্যানের হিসাবে দেখা গেছে, প্রতি এক লাখ নাগরিকের জন্য এ ধরনের একটি ইউনিট স্থাপন করা হলে মাথাপিছু ২৫ টাকা ব্যয় হবে। আয় হবে ৩৬ টাকা। এতে প্রকল্প গ্রহণকালীন সময়েই মাথাপিছু ১১ টাকা লাভ হবে। এছাড়াও ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশন ও শিল্প বর্জ্য গৃহস্থালি বর্জ্য নিষ্কাশন, পাগলা পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার, মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার উন্নতি সাধন, হাজারীবাগ ট্যানারি স্থানান্তর ও সেখানে সেন্ট্রাল পরিশোধনাগার স্থাপন করা যেতে পারে। শোধানাগারের নির্গত গ্যাস দ্বারা বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। এছাড়াও শিল্পকারাখানার বর্জ্য শোধনাগার বাধ্যতামূলক করা, বাসাবাড়ির পায়খানার জন্য সেপটিক ট্যাঙ্ক ও চোক অয়েল দ্বারা শোধনাগার বাধ্যতামূলক যেতে পারে। পানিতেও বিশেষ আলোড়নের মাধ্যমে অক্সিজেন সৃষ্টি করে রোগ-জীবাণু ও বীজাণুর বংশবিস্তার রোধ করা। উজানের প্রবাহ দ্বারা ঢাকার চারদিকের নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি ও নদীর পানি নবায়ন করা যেতে পারে। তারা বলেন, ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও হাতিরঝিলের চারদিকে ২-৩ কিলোমিটার দূরত্বে রামপুরা খালে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। ঢাকার বর্জ্য পর্যায়ক্রমে বা স্তরে স্তরে শোধন-পরিশোধনের মাধ্যমে ভাটিতেও মেঘনা ও সাগরের সংযোগস্থলে ৩শ’ কিলোমিটার দূরত্বে নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করে সাগরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বর্জ্য নেয়া যেতে পারে। শব্দদূষণ ॥ মহানগরী ঢাকায় সহনীয় মাত্রার দেড় থেকে দু’গুণ বেশি শব্দ বিরাজ করছে। শব্দদূষণের কারণে উচ্চরক্তচাপ, অনিদ্রা, শ্রবণশক্তি হ্রাস, মনসংযোগ কমে যাওয়া, মাথাব্যথা ও মাথা ধরার জটিলতায় ভুগছে নগরবাসী। শুধু তাই নয়, রাজধানীবাসীকে খিটখিটে মেজাজ, বিরক্তি বোধসহ অস্বাভাবিক আচরণ করার মতো মানসিক ও দৈহিক নানা সমস্যার পড়তে হচ্ছে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদফতর, সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, স্থানীয় সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) পরিচালিত বিভিন্ন স্থানের শব্দের মাত্রা পরিমাপের ভিত্তিতে পরিচালিত জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সোবহান জানান, রাজধানীতে নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৭৫ থেকে ৯৭ ডেসিবেল, যা মানমাত্রার চেয়ে দেড় থেকে দু’গুণ বেশি। আবাসিক এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৭৬ থেকে ১০৭ ডেসিবেল, যা মানমাত্রার চেয়ে দেড়গুণের বেশি। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৭৩ থেকে ১০২ ডেসিবেল, যা মানমাত্রার চেয়ে দেড়গুণের বেশি। আর বাণিজ্যিক এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৭১ থেকে ১০৭ ডেসিবেল, যা মানমাত্রার চেয়ে দেড়গুণ বেশি। জরিপ হতে প্রাপ্ত ফলাফল মানুষের মানসিক ও শারীরিক সমস্যার জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এভাবে শব্দদূষণ চলতে থাকলে শিশুদের মধ্যে বধিরতার হার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। আর লেখাপড়ায় অমনোযোগী ও বিকার মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠবে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, উচ্চশব্দ শিশু, গর্ভবতী মা এবং হৃদরোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। আকস্মিক উচ্চশব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশীর সঙ্কোচন করে এবং পরিপাকে বিঘœ ঘটায়। কণ্ঠনালীর প্রদাহ, আলসার ও মস্তিস্কের রোগও হতে পারে। হঠাৎ খুব জোরে শব্দ, যেমন যানবাহনের তীব্র হর্ন বা পটকা ফাটার আওয়াজ মানুষের শিরা ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রচ- চাপ দেয়। উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী হর্ন মোটরযানের চালককে বেপরোয়া ও দ্রুতগতিতে যান চালাতে উৎসাহিত করে। এতে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ ॥ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বনাঞ্চলের ওপর আগ্রাসন বেড়েছে। প্রতিনিয়ত বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে। নিরাপদ আবাস হারিয়ে হিংস্র হয়ে উঠছে বন্যপ্রাণীগুলো। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বন উজাড় হয়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। চাষাবাদের জমি ও বাড়িঘর তৈরির জন্য ক্রমাগতভাবে এসব বন ধ্বংস হচ্ছে। বনাঞ্চলের সবুজ অবয়ব বিনষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফলে হাজার বছরের পরিচিত অনেক প্রজাতির পশু-পাখি চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনার ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে টিকে থাকার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তবে এজন্য নেতিবাচক মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যা আছে সেখান থেকে আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শুরু করতে হবে। আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, কোনকিছুই অসম্ভব নয়। আমরা পারবÑ এ মনোভাব ধরে রেখে কাজ করতে হবে। এক সময় সারাদেশে বাঘ ছিল, এখন তা শুধু সুন্দরবনে গিয়ে ঠেকেছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্য বাঘ রক্ষায় আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। পানি দূষণমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের মধ্যে সমন্বয় নেই ॥ নদীর পানি দূষণমুক্ত করতে আইনের কার্যকরী প্রয়োগে উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বর্তমানে দেশের অনেক নদী রাজনৈতিক দল মদদপুষ্ট ভূমিদস্যূদের দখলে যাওয়া এবং পানি ও পরিবেশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় নদী দখল ও দূষণ বাড়ছে। বাংলাদেশে পানি খাতের ব্যবস্থাপনায় সরকারের অন্তত ১৩টি মন্ত্রণালয় যুক্ত থাকায় খাতটিকে অনেক জটিল উল্লেখ করে তারা বলেন, যদি পানি ব্যবস্থাপনায় সুশাসন ও শুদ্ধাচার নিশ্চিত করা না যায় তাহলে জনস্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্প উন্নয়ন, বাস্তু সংস্থানসহ মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির সম্মুখীন হবে।
×