ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রুইফের অজুহাত!

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৪ জুন ২০১৬

ক্রুইফের অজুহাত!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথায় আছে, মানুষের হাত তিনটি। ডান হাত, বাম হাত এবং অজুহাত! দুশানবেতে সেন্ট্রাল রিপাবলিক স্টেডিয়ামে (পামির স্টেডিয়াম) চর্মগোলকের দ্বৈরথে অবতীর্ণ হওয়ার আগে অনেক আশার কথা (ফুটবল রসিকদের মতেÑ ‘যত বড় মুখ নয়, তত বড় কথা!’) শুনিয়েছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। ‘খেলোয়াড়রা প্রত্যেকেই উদ্দীপ্ত ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ম্যাচটির জন্য, দলের অবস্থা ভাল, কোন সমস্যা নেই, ভাল অনুশীলন-প্রস্তুতি হয়েছে ...’ এমনি আরও কত কি! কিন্তু কথাকে কাজে পরিণত করেনি সুযোগ্য দ্রোণাচার্যের সুযোগ্য শিষ্যরা! এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্লে-অফের এ্যাওয়ে ম্যাচে বৃহস্পতিবার রাতে স্বাগতিক তাজিকিস্তানের কাছে ৫-০ গোলে বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। হারের পর বিভিন্ন অজুহাত যুক্তি সহকারে পেশ করার চেষ্টা করেন ডাচ কোচ ক্রুইফ, ‘এই রেজাল্টে ভীষণ হতাশ। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ছিল। কিন্তু স্কোরলাইন ২-০ বা ৩-১ হলে তা মানতে পারতাম। কঠিন মুহূর্তে গোল হজম করলেও কথা ছিল। কিন্তু গোলগুলো খেয়েছি অকারণে। খেলায় ১টি গোল খেয়েছি কর্নার কিক থেকে, দুটি খেয়েছি ফ্রি কিক থেকে। এই হারের কোন ব্যাখ্যা নেই। কারণ ছেলেদের ভালমতোই ট্রেনিং করিয়েছিলাম। তারপরও যদি তারা মাঠে নেমে খেলতে না পারে, তাহলে কি করার আছে! অনেক অজুহাতই হয়তো দাঁড় করাতে পারব। পেশাদার খেলোয়াড় হলে এটা বোঝা উচিত তাদের কি করতে হবে বা কি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ হারলেও আগামী ৭ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য হোম ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছেন ক্রুইফ। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘আরেকটা অজুহাত হতে পারে, আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ছয়জন খেলোয়াড়কে মিস করেছি যারা ঘরের মাঠে ২-৩ মাস এমনকি ৯০ মিনিটও খেলেনি। ওই ম্যাচে তাজিকদের হারানোটা হবে আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তবে একজন পেশাদার কোচ হিসেবে আমি ঘরের মাঠে জিততেই চাইব। ৭ জুনের জন্য আমরা নতুন রণ-পরিকল্পনা করবো। ম্যাচটি জিতে দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চাই। আমি একজন স্পোর্টসম্যান। চাই প্রতিটি খেলাতেই জিততে। তাজিকিস্তান দলকে জেতার জন্য অভিনন্দন।’ বৃহস্পতিবারের ম্যাচে কেন হারলো বাংলাদেশ? ক্রুইফের ব্যাখ্যা, ‘ম্যাচে আমরা প্রতিপক্ষকে ঠিকমতো সামাল দিতে পারিনি। ওরা প্রচুর জায়গা নিয়ে খেলেছে যেমনটা আমরা হল্যান্ডে খেলে থাকি। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু শেখার আছে। এর আগে দশ মাস আগে তারা কঠিন অবস্থায় থেকেও ম্যাচ ড্র করেছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে (১-১), আজ অন্যরকম একটি দলকে খেলতে দেখলাম। প্রথমার্ধে আমাদের খেলা ভালই ছিল, কিন্তু ক্রমশ আমরা খেই হারিয়ে ফেলি। প্রচুর ভুল খেলেছি আমরা। বিদেশী লীগে খেলা ওদের খেলোয়াড়রা আমাদের ভুলগুলো কাজে লাগিয়ে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশে যা হয়, ৮-১০ বছর বয়সে ফুটবলটা কেউই ভালমতো প্রশিক্ষণ নেয় না। তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবলটা সেভাবে হচ্ছে না। তবে আমি আশাবাদী একদিন বাংলাদেশ এই সমস্যাটা কাটিয়ে উঠবে, প্রচুর প্রতিভাবান ফুটবলার পাবে এবং এশিয়ার ভাল একটা ফুটবল দলে পরিণত হতে পারবে।’ বাফুফে সূত্রে জানা গেছেÑ ম্যাচে হারার পর বাংলাদেশের ফুটবলাররা কেউই ভাল মুডে ছিল না। কেউ ঠিকমতো কথাও বলেনি। তবে তারা নাকি আগামী ৭ জুনের ম্যাচে না হারতে বদ্ধপরিকর! ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী প্রচ- মাথাব্যথার কারণে তাজিকদের বিরুদ্ধে খেলেননি। শুক্রবার দলের সবাই দুশানবের স্থানীয় একটি মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন। তারপর দুপুরে লাঞ্চের পর তারা বিশ্রাম করে বিকেলে জিম করেন এবং সাঁতার অনুশীলন করেন।
×