ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টেলি খাতে টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়ার পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ৪ জুন ২০১৬

টেলি খাতে টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়ার পরিকল্পনা

ফিরোজ মান্না ॥ সৌন্দর্য সুরক্ষা ও নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করতে দেশের প্রথম টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বোট ক্লাব ভবনের ছাদে নির্মাণ করা হয় এই টাওয়ার। মালয়েশিয়া ভিত্তিক কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড ক্যামোফ্ল্যাগ টাওয়ারটি তৈরি করে। পরিবেশ বান্ধব নান্দনিক ডিজাইনের উদ্ভাবনী টাওয়ার চলতি বছর সারাদেশে নির্মাণ শুরু করা হবে। ইডটকোর পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। সরকার টেলিযোগাযোগ খাতে নেটওয়ার্ক নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আলাদা করে টাওয়ার কোম্পানির লাইন্সেস দেয়ার আগেই ইডটকো দেশে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবেশবান্ধব টাওয়ার নির্মাণ শুরু করেছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উন্নত দেশে টেলিযোগাযোগ খাতে পৃথক টাওয়ার কোম্পানি রয়েছে। তার আলোকে দেশেও পৃথক টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টি সরকারের পরিকল্পনায় আছে। আগে সব পক্ষের মতামত নিয়ে একটি উপযুক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। কারও কোন ক্ষতি না করে সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়ার কাজ শুরু করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, ইডটকো’র অনন্য উদ্ভাবনী ক্যামোফ্ল্যাগ ডিজাইনের টাওয়ার অবকাঠামো নান্দনিক সৌন্দর্যকে রক্ষা করে ভবনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না হয় এমন টাওয়ারের সংখ্যা কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে। ইডটকোর তৈরি এ ধরনের অবকাঠামো নগরীর সৌন্দর্য বাড়ায়, ভবনের ওপর চাপ কমায়, নেটওর্য়াক সংযোগ নিশ্চিত করে। বিদ্যুত খরচও কমায়। বাংলাদেশে ইডটকো প্রথমবারের মতো এই ক্যামোফ্ল্যাগ টাওয়ার স্থাপন করলেও মালয়েশিয়াতে গ্রুপটি ক্যামোফ্ল্যাগ অবকাঠামো টাওয়ার নির্মাণ করে যাচ্ছে। দেশে প্রতিষ্ঠানটি মালয়েশিয়ার মতো টাওয়ার নির্মাণ করে দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ফাইবারগ্লাস রিইনফোর্সড প্রডাক্ট (এফআরপি) দিয়ে নির্মিত এ ধরনের নান্দনিক এবং পরিবেশবান্ধব ক্যামোফ্ল্যাগ অবকাঠামো টেকসই। অবকাঠামো উপাদানগুলো ভারি বৃষ্টি এবং ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ কারণেই নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক নিশ্চিত হয়। ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যারেল সিনাপ্পা বলেন, ভবনের স্থাপত্য নক্সার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা টেলিকম অবকাঠামো ডিজাইন করছি। সারাদেশে নান্দনিক উদ্ভবানী ক্যামোফ্ল্যাগ অবকাঠামো নির্মাণে শীর্ষে থাকাই আমাদের লক্ষ্য। ইডটকো বাংলাদেশ নগরের পরিবেশ এবং নান্দনিকতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সারাদেশের ডিজিটাল উন্নয়নের উদ্দেশে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। আজিয়াটা বারহাদ গ্রুপের একক মালিকানাধীন টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা প্রদানকারী সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ইডটকো। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত ইডটকোর ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালন কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্বাধীন। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় টাওয়ার, ট্রান্সমিশন এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণসহ সব ধরনের অবকাঠামো সেবা দিয়ে আসছে। এশিয়ার প্রথম অবকাঠামো সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইডটকো মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশে মোট ১৪ হাজার টাওয়ারের টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা দিয়ে আসছে। আর ইডটকোর এ ধরনের সেবা দিতে সহায়তা করে থাকে ইকো সেন্টার। ইডকটো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ঢাকাকে উদ্ভাবন এবং নতুন প্রযুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোবাইল অপারেটরদের টাওয়ারের অতিরিক্ত চাপ কমাতে টেলিযোগাযোগ খাতে পৃথক টাওয়ার কোম্পানির লাইসেন্স দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ভবিষ্যতে দেশে ফোর জি (চতুর্থ প্রজন্মের) নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হলে মোবাইল টাওয়ার ব্যবস্থাপনা নিখুঁতভাবে করতে হবে। অপারেটরদের টাওয়ার দিয়ে ফোর জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। দেশে অবশ্যই আরও বেশিসংখ্যক টাওয়ারের প্রয়োজন আছে। বেশিসংখ্যক টাওয়ার তৈরিতে আবার জায়গারও অপচয় হবে। তারপরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাওয়ার নির্মাণ করা জরুরী। এ জন্য দেশী-বিদেশী মালিকানায় মোবাইল টাওয়ার করার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে।
×