ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৪ জুন ২০১৬

বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র

সংস্কৃতি চর্চার ৯২ বছরের অহঙ্কার বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র। তাড়াশের খ্যাতনামা জমিদার রায়বাহাদুর বনমালী রায়ের স্মৃতি রক্ষার্থে পাবনা শহরে ১৯২৪ সালের ৫ মার্চ এর গোড়াপত্তন হয়। রায়বাহাদুর বনমালীর দু’ছেলে -রায়বাহাদুর ক্ষিতিশ ভূষণ রায় ও রায়বাহাদুর রাধিকা ভূষণ রায়ের দানকৃত ৩৯ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলা হয় বনমালী ইনস্টিটিউট। যার বর্তমান নাম বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র। এ সময় বনমালী হল, কান্ত মেমোরিয়াল স্টেজ, কিশোরী মোহন স্টুডেন্ট লাইব্রেরী ও অফিস নির্মান করা হয়। ১৯২৯ সালে নির্মাণ করা হয় মিলনায়তন। ১৯৪৯ সালে এক সঙ্গীতানুষ্ঠানে এসেছিলেন দেশবরেণ্য গায়ক আব্বাস উদ্দিন আহম্মেদ। বনমালী মঞ্চে ১৯৯৬ সালে দেড় মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় উপমহাদেশের অন্যতম বড় নাট্যোৎসব। দেশের ৩৬টি নাট্য সংগঠন এখানে নাটক মঞ্চস্থ করে। বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র নিজস্ব শিল্পীদের অংশ গ্রহণে এ পর্যন্ত দু’সহস্রাধিক নাটক মঞ্চস্থ করেছে। এছাড়া নিজস্ব প্রযোজনায় অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রযোজিত ‘সীতা’ নাটকে অভিনয় করতে কলকাতা থেকে এসেছিলেন চলচ্চিত্র জগতের শক্তিমান অভিনেতা ছবি বিশ্বাস, রবি রায়, মমতা ব্যানার্জী প্রমুখ। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা সুচিত্রা সেনও একাধিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে বনমালীর উদ্যোগে ৩৩টি নাট্যসংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃজেলা নাট্যোৎসব। ১৯৪৯ সালে পাবনার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মাহাতাব উদ্দিন সরকারের উদ্যোগে এখানে মঞ্চস্থ হয় নাটক সিরাজদ্দৌলা। সিরাজ চরিত্রে অভিনয় করেন শিল্পী তেজেন চক্রবর্তী, আলেয়া চরিত্রে অভিনয় করেন নিশিকান্ত বকশী। দেশবরেণ্য কবি-সাহিত্যিক ডা. মাযহারুল ইসলাম, ড. আবুহেনা মোস্তফা কামাল, কবি বন্দে আলী মিয়া, সৈয়দ শামছুল হক, কবির চৌধুরী, কবি শামসুর রাহমান, বদরুদ্দিন উমর, নির্মলেন্দু গুণ, কামাল লোহানী, গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদার, শান্তি নিকেতনের অধ্যক্ষ ড. শৈলজারঞ্জন মুখোপাধ্যায়, কবি সুফিয়া কামাল, সুপ্রিয়া বারী, মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদ, হাসান আজিজুর হক, ড. আব্দুল খালেক, জুলফিকার মতিন, নাজিম মাহমুদ প্রমুখ। নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বারীণ মজুমদার, জগন্ময় মিত্র, অহীন্দ্র চৌধুরী, ফেরদৌসী রহমান, নিত্য গোপাল জোয়ার্দার, বুলবুল চৌধুরী, পিলু মমতাজ, তপন চৌধুরী, আব্দুল জব্বার, ফরিদা ইয়াসমিন, ওস্তাদ ইয়াছিন খান, আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা, আনোয়ার হোসেন, ডলি জহুর, হুমায়ুন ফরীদী, সুবর্ণা মোস্তফা, পিযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাইসুল ইসলাম আসাদ, মামুনুর রশিদ, আলী যাকের, রামেন্দু মজুমদার, ড. এনামুল হক, মাসুম আজিজসহ দেশের অগণিত শিল্পী-কুশলীগণ বনমালীতে এসে এ প্রতিষ্ঠানকে মহিমান্বিত করেছেন। -কৃষ্ণ ভৌমিক, পাবনা থেকে
×