স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ন্যাটওয়েস্ট টি২০ ব্লাস্ট টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানকে কাউন্টি দল সাসেক্স দলেও ভিড়িয়েছে। সাসেক্স দুটি ম্যাচ খেলেও ফেলেছে। দুটিতে জিতেছেও। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাসেক্সে খেলবেন কি না মুস্তাফিজ, তার কোন সুরাহা হয়নি। আদৌ মুস্তাফিজ কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে যাবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে চান মুস্তাফিজ সাসেক্সে খেলুক। কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে যাক। তবে এর সঙ্গে একটি শর্তও জুড়ে দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে, ফিট মুস্তাফিজকে সবার আগে চান হাতুরাসিংহে।
টি২০ বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরই অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান হাতুরাসিংহে। পরিবারের সঙ্গে দুই মাস সময় কাটিয়ে বুধবার বাংলাদেশে আসেন। এসেই বৃহস্পতিবার মুস্তাফিজকে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাতুরাসিংহে জানান, ‘আমি মনে করি ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে খেললে মুস্তাফিজ উপকৃত হবে। কাউন্টিতে যদি তারা বাংলাদেশের চার পেসারকেও নিত, তাহলে চারজনকেই পাঠিয়ে দেয়ার পক্ষে আমি সায় দেব।’ সঙ্গে যোগ করেন হাতুরাসিংহে, ‘মুস্তাফিজুর রহমানকে যেহেতু কাউন্টির সাসেক্স দল নিয়েছে, আমি চাই শরীর ফিট হলে সে সেখানে খেলুক।’ মুস্তাফিজ ফিট কি না, এখন সেটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। যে প্রশ্নের উত্তর মিলবে, আজকের পর সপ্তাহের যে কোন দিন।
বৃহস্পতিবার বিসিবির মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন কোচ। বিসিবি কার্যালয়ে এসে হিসাব বিভাগ ও প্রশাসনিক বিভাগে ব্যক্তিগত কাজ সারেন। এরপর ক্রিকেট অপারেশন্স কটিমির চেয়ারম্যান আকরাম খান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন এবং ওয়ানডে ও টি২০ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে আলোচনায় বসেন হাতুরাসিংহে। আলোচনা শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন। টেস্টেও মুস্তাফিজ ভাল অবদান রাখতে পারবেন বলে জানান হাতুরাসিংহে। বলেন, ‘মুস্তাফিজ মাত্র দুইটা টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। যার প্রথমটিতেই সে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে। টেস্টে তার শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছে। তবে সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে। তাকে ফিট থাকতে হবে। সে একজন বুদ্ধিমান ক্রিকেটার। সেই খুঁজে বের করবে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জ নিতে হলে কিভাবে সবদিক থেকেই উন্নতি ঘটানো যায়। তাহলে বাংলাদেশ দলও উপকৃত হবে।’
হাতুরাসিংহেকে নির্বাচক কমিটিতে রাখতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই কোচকেই দলের সঙ্গেও রাখতে চায়। হাতুরাসিংহেও নির্বাচক কমিটিতে থাকতে চান। এ নিয়ে বলেছেন, ‘নির্বাচক কমিটিতে রাখায় আমি খুশি। সবার সঙ্গে আমার যোগাযোগটা আরও বাড়বে। গত বছর বাংলাদেশ দলের পারফর্মেন্স সোনালী হরফে লিখে রাখার মতো ছিল। সামনের সময়গুলোতে কিভাবে কাজ করব তার পরিকল্পনা দুই-একদিনের মধ্যে করে ফেলব। কেবল তো আসলাম।’ দেশে অনেক সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে বিদেশের মাটিতে এ সাফল্য ধরে রাখা চ্যালেঞ্জই। হাতুরাসিংহে মনে করছেন, ‘দেশের বাইরের কন্ডিশনে খেলাটাই চ্যালেঞ্জ। আমরা দেশের বাইরে গত বছর খুব কম খেলতে গিয়েছি। আর টেস্টে জিততে হলে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে হবে। কনসিসটেন্ট গুড বোলিং ইউনিট দরকার আমাদের।’ ২০১৭ সালের জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বাংলাদেশ কঠিন গ্রুপে পড়েছে। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু হবে। বাংলাদেশের গ্রুপের বাকি দুটি দল হচ্ছেÑ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। হাতুরাসিংহে এ টুর্নামেন্ট নিয়ে বলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কঠিন গ্রুপে পড়েছি। সেখানে ভাল কারা খুব কঠিন। সেখানে বোলারদের অবশ্যই ভাল করতে হবে। পাশাপাশি সাকিব, তামিম, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিকদের দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে হবে। ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ খুব কমই খেলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলব আমরা। সেখানে নিউজিল্যান্ডকে পাব। এটিই চ্যাম্পিয়ন ট্রফির জন্য ভাল প্রস্ততি হবে।’
