ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৯ ভাগ বেড়েছে শিশুকেন্দ্রিক বাজেট

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩ জুন ২০১৬

২৯ ভাগ বেড়েছে শিশুকেন্দ্রিক বাজেট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সাত মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ আগের অর্থবছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঘটেছে শিশুদের কল্যাণে গৃহীত কার্যক্রম ও প্রকল্পগুলোতে। ফলে এ সময়ে শিশুকেন্দ্রিক বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ‘বিকশিত শিশু : সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শিরোনামে জাতীয় সংসদে শিশু বাজেট ২০১৬-১৭ উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেন, শিশু বাজেট শিশুদের জন্য প্রথম বাজেট নয় বরং এটি হচ্ছে একটি কাঠামো, যা শিশুদের আর্থ-সামাজিক অধিকার আদায় করা এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই মানবউন্নয়ন প্রয়াস শুরু করার ক্ষেত্রে সরকারী খাতের বিনিয়োগের প্রকৃতি ও পরিধি নির্ধারণে নির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ, নির্বাচিত সাত মন্ত্রণালয়, শিশুকেন্দ্রিক মন্ত্রণালয়ে গত অর্থবছরের বরাদ্দ ছিল ৮৪০ দশমিক ২৪ বিলিয়ন। এ বছর তা দাঁড়িয়েছে ১০২২ দশমিক ৯২ বিলিয়ন টাকা। এর আওতায় জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল, শিশুদের বিষয়ে শিশুদের মতামত নেয়া, বাল্যবিবাহ নিরসনে পর্যাপ্ত বরাদ্দ, শিশুশ্রম নিরসনে কর্মসূচী, স্কুল ফিডিংয়ে সুযোগ তৈরি করে দেয়াসহ দশটি পর্যবেক্ষণ হাজির করেছে মন্ত্রণালয়। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, মধ্যম আয়ের দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা উচিত। প্রাথমিক স্তরে ভর্তির হার বজায় রাখা এবং মাধ্যমিক স্তরে ভর্তির হারের উন্নতি ঘটানোর মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য ভৌগোলিক সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করে প্রয়োজনভিত্তিক পন্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে আরও বলা হয়, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা যেমন- নবজাতক ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশু এবং মাতৃমৃত্যু হারের উন্নতি, দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও ধাত্রীদের দ্বারা প্রসবÑ ইত্যাদি খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ পাওয়া উচিত। বাজেট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেটের ৯৯.৪১ শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেটের ৬৬.৫৫ শতাংশ শিশু কল্যাণের জন্য রাখা হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬.১৬ শতাংশ, যা জিডিপির শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের ৩৮. ৪৫ শতাংশ শিশুদের কল্যাণের জন্য রাখা হয়েছে, যা জিডিপির শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং কিশোর স্বাস্থ্য উন্নয়নে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮.১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি কর্মসূচী রাখা হয়েছে। কর্মজীবী মায়ের শিশুদের জন্য দিবাযতœ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শিশুদের কল্যাণের জন্য রাখা হয়েছে ৭ কোটি ৮ লাখ টাকা, যা ওই মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটের ১৮.৬ শতাংশ। মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, শিশুদের ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে এ ধরনের প্রকল্পের আওতা বাড়ানো যেতে পারে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দের প্রায় ২০ শতাংশ অর্থ শিশুদের কল্যাণে রাখা হয়েছে।
×