ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীর রেকর্ড দশমবার বাজেট উপস্থাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩ জুন ২০১৬

অর্থমন্ত্রীর রেকর্ড দশমবার বাজেট উপস্থাপন

সংসদ রিপোর্টার ॥ সরকার ও বিরোধী দলের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এবারও বাজেট উপস্থাপনে ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ১০ম বারের মতো জাতীয় সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন। এর আগে সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রী পরিষদের বিশেষ বৈঠকে ওই বাজেট অনুমোদন করা হয়। আলোচনা শেষে আগামী ৩০ জুন বাজেট পাস হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বেলা সাড়ে তিনটায় অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশন কক্ষের দর্শক গ্যালারিতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ দেশী-বিদেশী কূটনীতিক, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বাজেট উত্থাপন শেষে অর্থ বিল-২০১৬ সংসদে উত্থাপন করা হয়। বাজেট উত্থাপনকে কেন্দ্র করে পুরো সংসদ ভবন ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। আর সংসদের ভিতরে বাইরে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট থেকে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। এর আগে সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে ৭ মিনিটের একটি ভিত্তিও চিত্র দেখানো হয়। ভিডিও চিত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাফল্যচিত্র তুলে ধরা হয়। বাজেট উপস্থাপনের জন্য অধিবেশন কক্ষে ৪টা বড় স্ক্রিন স্থাপন করা হয়। যার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বাজেট বক্তৃতার পুরো অংশ ধারাবাহিকভাবে দেখানো হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পীকার ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের পাশে ৪টি এলসিডি মনিটর বসানো হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে বসে বাজেট বক্তৃতা করেন অর্থমন্ত্রী। বাকিগুলো পঠিত বলে গণ্য করেন স্পীকার। বয়সে প্রবীণ হলেও সংসদে বাজেট পেশকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে কর্মে নবীন ও তেজদীপ্ত মনে হয়েছে। দীর্ঘ সময়ে বাজেট বক্তৃতকালে উৎফুল ও হাস্যোজ্জ¦ল অর্থমন্ত্রী মাঝেমাঝেই হাস্যরসের মাধ্যমে অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। সংসদ সদস্যরাও বারবার টেবিল চাপড়ে তাকে উৎসাহ দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে অধিবেশন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ॥ পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কালো ব্রিফকেস নিয়ে সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একই সময় অধিবেশন কক্ষে আসেন স্পীকার। অধিবেশনের শুরুতে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্পীকার বলেন, আপনি বাজেট উত্থাপনের অনুমতি চাইতে পারেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী ভিডিওচিত্র দেখানোর অনুমতি প্রার্থনা করেন। ভিত্তিও চিত্রটি দেখানোর পর তিনি স্পীকারের অনুমতি নিয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। অর্থ বিল উত্থাপন ॥ বাজেট বক্তৃতা শেষে অর্থমন্ত্রী অর্থ বিল- ২০১৬ সংসদে উত্থাপন করেন। সরকারের আর্থিক প্রস্তাবাবলী কার্যকরণ এবং কতিপয় আইন সংশোধনের লক্ষ্যে বিলটি উত্থাপন করা হয়। বিলটি আগামী ৩০ জুন পাস হবে। প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন ॥ বাজেট বক্তৃতার আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রিপরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। পরে তা অনুমোদনের জন্য সংসদ ভবনের সপ্তম তলায় রাষ্ট্রপতির দফতরে পাঠানো হয়। বাজেট উত্থাপনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিবছর মন্ত্রিপরিষদের বিশেষ বৈঠক সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদসহ ভিআইপিদের আগমন উপলক্ষে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় সকাল থেকেই নিñিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। একমাত্র বৈধ পাস ছাড়া আর কাউকে সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি দর্শক গ্যালারিতে পাস ইস্যুতেও ছিল কড়াকড়ি। তাই দর্শক গ্যালারিতে অনেক আসনই ছিল ফাঁকা। বাজেট বক্তৃতা শুনতে সংসদ সচিবালয়ে আসেন রাষ্ট্রপতি। তাঁর অফিস কক্ষের সামনেও বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে শক্তিশালী আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়। র‌্যাব-পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিপুলসংখ্যক সদস্য পুরো ভবনে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলেন।
×