ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশেষ বক্তৃতায় ব্যাঙ্কক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেমস গোমেজ

বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্রুত বিকাশ ঘটছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৩ জুন ২০১৬

বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়ার দ্রুত বিকাশ ঘটছে

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সোশ্যাল মিডিয়া বাধাগ্রস্ত হলেও বাংলাদেশে বিকশিত হচ্ছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সামরিক শাসকরা মিডিয়া বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়ালেও ধীরে ধীরে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে সোশ্যাল মিডিয়া শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে। বৃহস্পতিবার ‘পরিবর্তিত মিডিয়া ও সাংবাদিকতা : বাংলাদেশের জন্য সুযোগ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাধা’ শীর্ষক এক বিশেষ বক্তৃতায় ব্যাঙ্কক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. জেমস গোমেজ এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ বিশেষ বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন- দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ ও সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ আহমেদ আবিদ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জেমস গোমেজ তার বিশেষ বক্তৃতায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সোশ্যাল মিডিয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশে সামরিক সরকারের শাসনকালে সামাজিক গণমাধ্যমের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। থাইল্যান্ডে এখন বিভক্তি এসেছে। এ সামরিক সরকার ও গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে এ বিভক্তি। মিয়ানমারে সামরিক শাসন থাকায় সেখানে সামাজিক গণমাধ্যম বিকশিত হয়নি। এছাড়া আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, লাওসেও ঠিকমতো সামাজিক গণমাধ্যম বিকশিত হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। সামাজিক গণমাধ্যমের ওপর বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন ড. জেমস গোমেজ। তার অন্যতম বিখ্যাত বই ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ : সিঙ্গাপুর শেম’। এশিয়া অঞ্চলের সামাজিক গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ গোমেজ বলেন, চীনের শাসকগোষ্ঠী সামাজিক গণমাধ্যম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে ফেসবুক, গুগল, জি-মেইল ইত্যাদি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া রয়েছে। গণমাধ্যমের এ নিয়ন্ত্রণ রোখাটা এখন সেখানকার তরুণ সমাজের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তিনি জানান। সামাজিক গণমাধ্যমের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, সামাজিক গণমাধ্যম সাধারণ মানুষ যেমন ব্যবহার করছে, আবার বিভিন্ন গোষ্ঠীও তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে। বর্তমান সময়ে জঙ্গীগোষ্ঠী এ গণমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাইছে। এসব বিষয় আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এখন অনেক বেশি। এক মুহূর্তেই যে কোন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী। আর সে সংবাদই পরে প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায় বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে একটি বিতর্ক রয়েছে। কেননা সোশ্যাল মিডিয়ার খবর সম্পাদিত হয় না। কোন খবর সম্পাদিত না হলে সেটা খবর কি-না এ বিতর্ক রয়ে গেছে। তবে সেটা হলেও সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব এখন অনেক বেশি। এ প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশের সমাজ এগিয়ে চলেছে। এশিয়ার দেশ হিসেবে একে অপরের দিকে আমাদের তাকাতে হবে। পশ্চিমাদের দিকে বেশি না তাকিয়ে এশিয়ার নিজেদের দেশগুলো শক্তিশালী হলে ভবিষ্যতে এশিয়াই বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
×