ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নৌবাহিনীতে নারী নাবিক

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ৩ জুন ২০১৬

নৌবাহিনীতে নারী নাবিক

অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশে নারীরা অনেকদূর এগিয়েছে। সাধারণ পেশার বাইরেও তারা বৈচিত্র্যময় ও চ্যালেঞ্জিং পেশায় অংশগ্রহণের ফলে দেশের গ-ি পেরিয়ে নারীরা এখন বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। তার স্বীকৃতিও মিলেছে। এ দেশের নারী পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন ও সেবা খাতে শ্রমসাধ্য এবং চ্যালেঞ্জিং পেশায় অংশগ্রহণ করেছেন। নারী অগ্রযাত্রার পেছনে নারীদের যোগ্যতা, মেধা ও এগিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে অবশ্যই ভূমিকা রেখেছে সরকারের অনুকূল নীতি ও পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জরিপের ফল বলছে, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের নারী এখন দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে। এক দশক আগেও যেখানে দেশের নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণের হার ছিল খুবই কম। এখন নারী কর্মসংস্থান দক্ষিণ এশিয়ার দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। নারী শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন সরকারী কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সব মন্ত্রণালয়ে জেন্ডার সেন্সেটিভ বাজেটও আজ এদেশে তৈরি হচ্ছে। এসব কিছুরই ফলে নারীর এই অগ্রযাত্রা। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী অনেকদিন ধরে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছেন কমিশন র‌্যাঙ্কে। নারী পাইলটও রয়েছেন। বছরদেড়েক আগে সেনাবাহিনীতে নারী সৈনিকের অন্তর্ভুক্তি ছিল আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আর এবার বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মতো যোগ দিলেন চুয়াল্লিশ মহিলা নাবিক। এর মধ্য দিয়ে পুরুষ নাবিকের পাশাপাশি নৌবাহিনীতে মহিলা নাবিকের গর্বিত পথচলা শুরু হলো। এটি দেশের নারীর অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। সেনাবাহিনী তথা নৌবাহিনীর মতো একটি চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীর অংশগ্রহণ নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেনাবাহিনীতে এতদিন বিভিন্ন কোরে নারী অফিসার ও সৈনিক থাকলেও নাবিক হিসেবে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি এই প্রথম। আমাদের অভিনন্দন ও শুভ কামনা নবীন নারী নাবিকদের প্রতি। নৌবাহিনী এর মাধ্যমে একটি ত্রিমাসিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। নবীন নাবিকরা পেশা হিসেবে দেশ সেবা ও দেশগড়ার পবিত্র দায়িত্ব রূপে বেছে নিয়েছে যা গর্বিত করে পুরো জাতিকে। দেশ রক্ষায়, বিপন্ন মানুষের সহায়তায়, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অবশ্যই রাখবেন। তাদের পথ ধরে দেশের নারীরা আরও চ্যালেঞ্জিং কর্মক্ষেত্রে নিজেদের নিয়োজিত করবেন- এ প্রত্যাশা দেশবাসীর।
×