ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তাজিকিস্তানের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ২ জুন ২০১৬

তাজিকিস্তানের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জয়, পরাজয়, নাকি ড্র? কোনটা লেখা হবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের পাশে? এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের প্লে-অফের এ্যাওয়ে ম্যাচে আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ১৬৪ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী স্বাগতিক তাজিকিস্তানের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দুশানবেতে সেন্ট্রাল রিপাবলিক স্টেডিয়ামে (পামির স্টেডিয়াম) ফুটবল দ্বৈরথে অবতীর্ণ হবে দু’দল। স্বাগতিকদের সুবিধাটা তাজিকিস্তানের পক্ষে। চেনা মাঠ, সমর্থক, র‌্যাঙ্কিং এমনকি পরিসংখ্যানেও এগিয়ে তাজিকরা। সেখানকার আবহাওয়া অবশ্য বাংলাদেশের মতোই (৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস)। ফলে আবহাওয়ার কারণে খেলতে সমস্যা হয়েছেÑ এমন অজুহাত দেয়ার কোন অবকাশ নেই! বিশ্বকাপ বাছাই উতরানোর স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলেও এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার সুযোগ এখনও আছে। তাই পয়েন্ট পেতে বদ্ধপরিকর ১৭৮ র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তান ৯ ম্যাচে পরস্পরের মোকাবিলায় তাজিকিস্তান জিতেছে ৫ ম্যাচে, বাংলাদেশ ১ ম্যাচে। ড্র হয়েছে ৩টি ম্যাচ। ক্রুইফের অধীনে আড়াই বছরে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও অলিম্পিক দল মোট ম্যাচ খেলেছে ৩০টি। জিতেছে ৭টিতে, ড্র ৮টিতে, হার ১৫টিতে। ২০০৩ সালের ২৬ নভেম্বর বিশ^কাপ প্রাক-বাছাইয়ের ম্যাচে তাজিকিস্তানের কাছে ০-২ গোলে হেরেছিল। ৩০ নভেম্বর ফিরতি ম্যাচেও একই ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের ৪ এপ্রিল এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ হারে ১-৬ গোলে। ২০০৭ সালের ১০ আগস্ট বিশ^কাপ বাছাইপর্বে জুমরাতুল ইসলাম মিঠুর গোলে তাজিকদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। ওই বছরই ২৮ আগস্ট ফিরতি ম্যাচে ০-৫ গোলে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কলম্বোতে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে ২-১ গোলে জেতে বাংলাদেশ। গোল করেছিলেন এনামুল ও মিশু। ২০১৫ সালের ১৬ জুন বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইয়ে এমিলির গোলে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ প্রাক বাছাইয়ে তাজিকদের কাছে আবারও ০-৫ গোলে হারে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগেরদিন বৃহস্পতিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ ডি ক্রুইফ বলেন, ‘আমরা এমন একটি ম্যাচ নিয়ে কথা বলছি, যে ম্যাচটি এখনও খেলা হয়নি। খেলোয়াড়রা প্রত্যেকেই উদ্দীপ্ত ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ম্যাচটির জন্য। কিছুদিনের জন্য দলটি থেকে দূরে ছিলাম, এখন আবার ফিরেছি। দীর্ঘদিন ধরেই দলটি কঠোর পরিশ্রম করে আসছে। বাংলাদেশ ফুটবলের কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি আমরা এবং অনেকটাই এগিয়েছি। আমরা সেরাদের বেছে নিয়ে তৈরি করেছি এই ম্যাচের জন্য। ফল যাই হোক, তাদের কাছ থেকে আমার চাওয়া ইতিবাচক ফুটবল।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে ক্রুইফ বলেন, ‘বাংলাদেশ ছোট হলেও এর জনসংখ্যা অনেক। আর সারাদেশে ছড়িয়ে আছে হাজারও ফুটবল প্রতিভা। আমরা সেই প্রতিভাগুলোর খোঁজেই কাজ করে চলেছি। আমরা তাকিয়ে আছি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের দিকে।’ তাজিকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের হোম ম্যাচটিতে ক্রুইফই ছিলেন দলটির সঙ্গে। সেখানে বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেছিল। এ প্রসঙ্গে ক্রুইফের আক্ষেপ, ‘যদিও ম্যাচটি বাংলাদেশের জেতা উচিত ছিল। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের গোল হজমে সেটা হয়নি।’ প্রতিপক্ষ দল সম্পর্কে ক্রুইফের ভাবনা, ‘আমরা জানি দল হিসেবে তাজিকিস্তান কতটা শক্তিশালী। কারণ তাদের দলে বেশ ক’জন রাশান লীগ খেলা ফুটবলার আছে। আমরা জানি আমাদের কি করতে হবে। শেষ পর্যন্ত আমাদের দলটি কতটা কি করতে পারে সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি। দলের অনুশীলন নিয়ে আমি তৃপ্ত। এখন দেখতে চাই কি ঘটে। ফুটবলে যে কোন কিছুই ঘটতে পারে। একটি লাল কার্ড পুরো পাল্টে দিতে পারে একটি দলের অবস্থান। আমাদের চেষ্টা থাকবে সুযোগগুলো কাজে লাগানো, যতটা সম্ভব।’ দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দলটি এখন ভাল অবস্থায় আছে। গত কিছুদিন কঠোর পরিশ্রমের পর এখন লড়াইয়ের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। সফরকারী দলের জন্য এ্যাওয়ে ম্যাচ সব সময়ই কঠিন। এখানেই শেষবার আমরা হেরেছিলাম ৫-০ গোলে। তখন অবশ্য আবহাওয়া খুবই প্রতিকূল ছিল আমাদের জন্য। প্রচন্ড ঠা-া, তার উপর বৃষ্টি। স্বাভাবিক খেলাটাই কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্ত এখন আবহাওয়া অনেকটাই সহনীয়। আমরা মোটেই ভিত নই তাজিকিস্তানকে নিয়ে। তবে এটা মানতে হবে দলটিতে রয়েছে বেশকিছু মানসম্পন্ন খেলোয়াড়। যতদূর জানি, নুরুদ্দিন তাদের মধ্যে একজন। তবে এটা নিশ্চিত যে আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়েই লড়াই করবো কালকের ম্যাচে।’ এদিকে বাংলাদেশ ম্যাচ ভেন্যুতে গতকাল সন্ধ্যায় শেষবারের মতো ঝালিয়ে নেয় নিজেদের।
×