ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঢাবি প্রাচ্যকলা বিভাগের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী দ্দরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২ জুন ২০১৬

ঢাবি প্রাচ্যকলা বিভাগের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী দ্দরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ২০১৫’ শুরু হয় বুধবার বিকেলে। অনুষদের জয়নুল গ্যালারি এক ও দুইয়ে সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাচ্যকলা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুস সাত্তার, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের পুত্র প্রকৌশলী ময়নুল আবেদিন ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এবারের প্রদর্শনীতে মেয়েরা এগিয়ে আছে, সেজন্য আমরা আনন্দিত। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের সমানভাবে এগিয়ে যেতে হবে, পিছিয়ে থাকলে চলবে না। শিল্পীদের সৃষ্টিশীল মানসিকতা নিয়ে শিল্পকর্ম করতে হবে। শুধুমাত্র পেশাজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ নয়, দেশের জন্য শিল্প সৃষ্টি করতে হবে। পৃথিবীর জন্য শিল্পী তার শিল্পকর্ম নিয়ে মানবতার জয়গান গেয়ে এগিয়ে যাবেন। উপাচার্য শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে পরিচিত করে তুলতে যে ক’জন মনীষী ভূমিকা রেখেছেন, তিনি তাদের অন্যতম। বাঙালী জাতির স্বাতন্ত্র্য, স্বকীয়তা জাগ্রত করতেও তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন। রুচিবোধের এই দীনতা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসতে হবে শিল্পী সমাজসহ সকলকে। সকলের মাঝে রুচিবোধ সৃষ্টি করতে হবে। শিল্পের সাধনা করলে, সুন্দরের অনুসারী হলে রুচির দীনতা থাকবে না। তাই শিল্পের সঙ্গে থাকতে হবে। আমরা শিল্পকে সেজন্যই গুরুত্ব দেই। উপাচার্য নবীন শিল্পীদের শিল্পের গুণগতমানের প্রতি দৃষ্টি রাখতে আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৮ জন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। তাদের জমা দেয়া শিল্পকর্ম থেকে ৫৪টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়। ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে প্রাচ্যকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা মিমি ও ফেরদৌস নিশাতের নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। তাদের এ নৃত্যের পরই শুরু হয় অনুষ্ঠানের আলোচনাপর্ব। এ পর্বের প্রথমেই স্বাগত বক্তব্য দেন প্রাচ্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মলয় বালা। এর পর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ফকির ও অধ্যাপক মিজানুর রহমান। বক্তারা বলেন, প্রতি বছর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে কেন্দ্র করে চারুকলার শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়ে থাকে। ক্রমবর্ধিত কলেবরে চারুকলা অনুষদের সকল বিভাগের প্রদর্শনী একসঙ্গে আয়োজনে গ্যালারি সঙ্কট দেখা দেয়। এজন্য শিল্পকলা একাডেমি কিংবা জাতীয় জাদুঘর গ্যালারিতে সমন্বিত আায়োজনের প্রচেষ্টা এবং সে প্রচেষ্টা সফল না হওয়ায় প্রাচ্যকলা বিভাগ কর্তৃক স্বতন্ত্রভাবে ২০১৫ সালের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজনে বিলম্ব হলো। তারা আরও বলেন, সমকালীন প্রাতিষ্ঠানিক প্রাচ্য চিত্রকলা চর্চারত শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক পথ সন্ধানের পাশাপাশি তাদের নিজস্ব অস্তিত্ব খোঁজায় তাগিদ কতটুকু অনুভব করতে পারছেন তার নির্দেশনা পাওয়া যাবে এ প্রদর্শনীতে। প্রাচ্য চিত্রকলার মূলনীতি বজায় রেখে জলরং ওয়াশ পদ্ধতির কাজ, ক্যালিগ্রাফি ও মিনিয়েচার বিষয়ক কাজ, পেন্সিল স্কেচ, কালি ও তুলি, এ্যাক্রেলিক, ক্যানভাসসহ বিভিন্ন মাধ্যম ও বিষয়ভিত্তিক কাজ রয়েছে। তাদের এ বক্তব্যের পরই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের মধ্য থেকে পাঁচটি পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীরা হলেনÑ নিরীক্ষাধর্মী পুরস্কার- সুস্মিতা সাহা রিমি (এমএফএ, ২য় পর্ব, ২০১৩-২০১৪), শ্রেষ্ঠ মাধ্যম পুরস্কার- হরেন্দ্র নাথ রায় (বিএফএ সম্মান, ৩য় বর্ষ, ২০১৪-২০১৫), শিল্পী শফিকুল আমীন স্মৃতি পুরস্কার- হাসুরা আক্তার (বিএফএ সম্মান, ৪র্থ বর্ষ, ২০১৪-২০১৫), শিল্পী আমিনুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার- শাহনাজ আক্তার (বিএফএ সম্মান, ৩য় বর্ষ, ২০১৫-২০১৬) এবং শিল্পী রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার-মুনমুন আলম খান (বিএফএ সম্মান, ২য় বর্ষ, ২০১৫-২০১৬)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। শিল্পকর্ম পরিদর্শন করে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস প্রাচ্যরীতিতে আঁকা চিত্রকর্মগুলো শিল্পপ্রেমীদের বিমোহিত করবে। শিল্পকর্মগুলোতে প্রাচ্য চিত্রকলার সমৃদ্ধ ধারা এবং ঐতিহ্যের অনুষঙ্গের প্রভাব পাওয়া যায়। প্রাচ্যকলা বিভাগের বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী আগামী ৭ জুন পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে। ‘মেকিং এ কমন কজ : পাবলিক ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব ॥ ‘মেকিং এ কমন কজ : পাবলিক ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও প্রকাশনা উৎসব হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার আর্টস মিলনায়তনে বুধবার বিকেলে। একাডেমিক প্রেস এ্যান্ড পাবলিশার্স লাইব্রেরি প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বইটি লিখেছেন যৌথভাবে অধ্যাপক জামাল খান ও মাহাবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবির। সভাপতিত্ব করেন একাডেমিক প্রেস এ্যান্ড পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান ড. মীজানুর রহমান শেলী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল কবির বলেন, বইটি সম্পর্কে আমার অনুভূতি শেয়ার করতে পারি। আর তা হচ্ছেÑ স্বাধীনতা সংগ্রামগুলো যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংঘঠিত হয়েছে পরবর্তীতে তার থেকে খানিকটা দূরে সরে আসা হয়েছে। সেখানে প্রতিশ্রুতি ছিল গণতন্ত্র থাকবে, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, ব্যক্তির মানবিক বিচার থাকবে। কিন্তু যুদ্ধ বিজয়ের পর নানা রানৈতিক দল সেটা করতে দেয়নি। যা হোক আমার সবচেয়ে যে বিষয়টি বলার তা হলোÑ যদি বইটি বাংলা ভাষায় লেখা হতো তাহলে হয়ত কিছু লোক পড়ত। কী করে আরও কিছু লোককে বইটি পড়ানো যায়, সে বিষয়ে চেষ্টা করলে খুব ভাল হয়। প্রায় সাত শ’ পৃষ্ঠাসংবলিত এ বইটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সাত শ’ টাকা।
×