ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় নেতার সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২ জুন ২০১৬

বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় নেতার সংখ্যা বাড়ছে

শরীফুল ইসলাম ॥ জাতীয় কাউন্সিলের আড়াই মাস পরও দলের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি না হওয়ায় বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় নেতার সংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। এর ফলে এ দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে গতিশীল হওয়ার পরিবর্তে ঝিমিয়ে পড়ছে। দলের কোন কোন সিনিয়র নেতা কথায় কথায় আন্দোলনের কথা বললেও বাস্তবে আন্দোলনের কোন প্রস্তুতিই নেই। সূত্র মতে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পর রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় থাকায় বিএনপির অনেক কেন্দ্রীয় নেতা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এ বছর ১৯ মার্চ জাঁকজমকভাবে জাতীয় কাউন্সিলের পর নিষ্ক্রিয় নেতারা আবার দলে সক্রিয় হওয়ার জন্য নড়েচড়ে বসেন। কিন্তু জাতীয় কাউন্সিলের আড়াই মাস পার হলেও নির্বাহী কমিটিতে ৪২ জন ছাড়া আর কোন নেতা স্থান না পাওয়ায় নতুন করে আরও অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। অবশ্য নিষ্ক্রিয় নেতাদের সক্রিয় করার ব্যাপারে বিএনপি হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপও নেই। এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, পদ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে কখনও কখনও রাজনৈতিক নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। বিএনপিতেও এখন কিছু নেতা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। তবে কেন তাদের সক্রিয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে না তা আমি বলতে পারব না। উল্লেখ্য, বিএনপির ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের আগে ৩৮৬ সদস্যের নির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই এখন দলে নিষ্ক্রিয়। তবে কাউন্সিলের পর ৪ দফায় যে ৪২ জনকে পদ দেয়া হয়েছে তারাসহ আগের কমিটির কিছু নেতা সক্রিয় এবং আরও কিছু নেতা মাঝেমধ্যে দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নেন। আর বাকিরা রয়েছেন নিষ্ক্রিয়ের তালিকায়। পুরনো কমিটির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, এম সামসুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও সারোয়ারী রহমান পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়। আর মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান। তবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আসম হান্নান শাহ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সক্রিয় রয়েছেন। আগের কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী কিছুটা সক্রিয় থাকলেও পুরোপুরি সক্রিয় বলা চলে না। আগের কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বিচারপতি টি এইচ খান, সাদেক হোসেন খোকা, এম মোরশেদ খান, রাবেয়া চৌধুরী ও হারুন আল রশিদ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়। আর গ্রেফতারের ভয়ে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। আগের কমিটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টাদের মধ্যে আবদুল আউয়াল মিন্টু, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু ও এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন কিছুটা সক্রিয় থাকলেও হারুনার রশিদ খান মুন্নু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, মেজর জে. (অব) মাহমুদুল হাসান, ফজলুর রহমান পটল, মোসাদ্দেক আলী ফালু, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল হালিম, ড. মুশফিকুর রহমান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী. নুরুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম ও এম মনজুর আলম এখন নিষ্ক্রিয়। এ ছাড়াও এখন বিএনপির নিষ্ক্রিয় নেতাদের তালিকায় রয়েছেন আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান খান আজাদ, আনম এহসানুল হক মিলন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক আবদুল হাই, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক একেএম মোশাররফ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমিনুল হক, আখতার হামিদ সিদ্দিকী, মেজর (অব.) মঞ্জুর কাদের, সিরাজুল ইসলাম সরদার, এন আই খান, খন্দকার আহসান হাবিব, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শামসুদ্দিন, এম আকবর আলী, আনোয়ার হোসাইন, মিজানুর রহমান, শাহানা রহমান রানী, মতিয়ার রহমান তালুকদার, রাবেয়া সিরাজ, খালেদা পান্না, আলমগীর মোঃ মাহফুজুল্লাহ ফরিদসহ আরও অনেক নেতা। ১৯ মার্চ রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলের কর্ম অধিবেশনে প্রথম দফায় খালেদা জিয়াকে চেয়ারপার্সন ও তাঁর লন্ডন প্রবাসী ছেলে তারেক রহমানকে পুনরায় সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। আর ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে মহাসচিব, রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মিজানুর রহমান সিনহাকে পুনরায় কাষাধ্যক্ষ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
×