ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ

জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার আদৌ চালু হবে কি?

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১ জুন ২০১৬

জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার আদৌ চালু হবে কি?

কবি ফররুখ আহমেদের কবিতা ‘রাত পোহাবার কত দেরীর’র মতো বলতেই হয়, জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার আবার চালু হওয়ার কত দেরি? এ প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? মন্ত্রণালয়ে গেলে দেখিয়ে দেবে এনএসসির পথ, এএসসিতে গেলে পাঠিয়ে দেবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। চলবে পিলো রেসিং। দেবে সেটা বোঝা মুশকিল। ১৯৭৬ সাল থেকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। মাত্র পাঁচ বছর দেয়ার পর এ পুরস্কার দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। ’৮১ সালের পর তা বন্ধ থাকে দীর্ঘ ১৫ বছর। ’৯৬ সালে আবার তা চালু হয় এবং তা অব্যাহত থাকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত। এরপর আবার যথারীতি বন্ধ। ’৭৬ থেকে ২০১৬। এই চল্লিশ বছরের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের ইতিহাসে পুরস্কার দেয়া হয়েছে ১৭ বছর আর ২৩ বছরই পুরস্কার দেয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তারও কোন সদুত্তর ক্রীড়ানুরাগী মহলের জানা নেই। সরকারের দোষ দিয়ে কোন লাভ নেই। সব সরকারের আমলেই জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান বন্ধ হয়েছে। প্রতিবছর যদি ১০ জনকেও পুরস্কার দেয়া হতো ওই তাহলে বাদ পড়া ২৩ বছরে অন্তত ২৩০ জন খেলোয়াড়-সংগঠক জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত হতেন। কর্তৃপক্ষের গড়িমসি ও গাফিলতির কারণে এতগুলো ক্রীড়াব্যক্তিত্ব জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কে নেবে এর দায়ভার? সেটা কিন্তু কেউ নেবেন না। কেন দেয়া হয়নি তার কোন সদুত্তরও কারও কাছে নেই। এ কথা কারও অজানা নয় যে বাংলাদেশের ক্রীড়া পুরস্কারের পথিকৃত বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি। ১৯৬৩ সালে ‘ক্রীড়া পুরস্কার’র সূচনাটা হয় বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির হাত ধরে। আর তাই বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতিই ‘ক্রীড়া পুরস্কার’ দেয়ার পথিকৃত। বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি সে বছর তারকা ফুটবলার জহিরুল হককে ‘বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ’ হিসেবে পুরস্কৃত করে। এর পরের বছর সমিতির ‘বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ’ পুরস্কার পান সব্যসাচী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব বশির আহমেদ। এটাই বাঙালীর ক্রীড়া ইতিহাসে প্রথম ‘ক্রীড়া পুরস্কার।’ ক্রীড়া পুরস্কারের সেই শুরু পথচলা। দেশ স্বাধীন হবার পর থেকে বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতি তো তাদের পুরস্কার দেয়ার ধারা অব্যাহত রেখেছেই। বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির ‘ক্রীড়া পুরস্কার’ এ দেশের একটি রোল মডেল। দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে সমিতি এই দুটি ক্ষেত্রে একশ পার্সেন্ট নিরপেক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে। অনেক পুরস্কার দেয়া নিয়ে অনেক কথা উঠতে দেখা যায়। এমন কী জাতীয় পুরস্কার নিয়েও আঙ্গুল তুলতে দেখা গেছে। অন্য সব পুরস্কার প্রদানে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ হর-হামেশাই হতে দেখা যাচ্ছে। আগের রাতে ফোন করে পুরস্কারপ্রাপ্তির খবর জানানোর পর পরেরদিন তালিকা থেকে নাম হাওয়া হওয়ার ঘটনাও যে নেই তা নয়। পুরস্কার পাওয়ার জন্যে নির্বাচকদের বাসায় মাছ-মিষ্টি, উৎকোচ নেয়ার ঘটনাও কম ঘটছে না। তবে বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির পুরস্কার নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ আঙ্গুল তুলতে পারেননি। কারও বাসায় মাছ-মিষ্টি নিতে হয় না। পুরস্কার প্রদান কমিটিতে কারা থাকেন সেটাও কেউ জানে না। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। ক্রীড়ালেখক সমিতির পুরস্কার পাওয়ার জন্য কোন কিছুই করতে হয় না। না কোন আবেদন, না কোন তদবির। পারফর্মেন্স বিবেচনা করে সমিতিই পুরস্কারে মনোনীত করে। অনেক পরে সমিতির সঙ্গে যোগ হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার, বিএসজেএ পুরস্কার দিচ্ছে প্রথম আলোসহ অনেক পত্রিকা ও সংগঠন পুরস্কার দিচ্ছে। একটা পুরস্কার একজন খেলোয়াড়-কোচ-সংগঠকের কাছে কতটা বড় সেটা নির্বাচকরা কতটুকু উপলব্ধি করেন আমার জানা নেই। যদি করতেন তাহলে বিগত সাতটা বছর একটা দেশ জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ‘প্রদানহীন’ হয়ে থাকত না। একজন খেলোয়াড় বা কোচ অথবা সংগঠক দীর্ঘকাল পিক ফর্মে থাকেন না। পাঁচ বছর আগে তিনি যে ফর্মে ছিলেন পাঁচ বছর পর সে ফর্মে নাও থাকতে পারেন। পাঁচ বছর পর পুরস্কার দিতে গিয়ে পাঁচ বছর আগের পারফর্মেন্স বিবেচনা করতে গিয়ে অনেকের কৃতিত্ব ম্লান হয়ে যায়। ফলে অনেকে পুরস্কারের তালিকা থেকে ছিটকে পড়ে অনেক কীর্তিমানের নাম। ভাল খেলে বা সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেও অনেকের ভাগ্যে ‘পুরস্কার’ নামের সোনার হরিণটা আর ধরা দেয় না। এটাকে ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস’ বলে মেনে নেন তারা। কিন্তু যাদের কারণে তাদের ‘ভাগ্য বঞ্চিত’ হওয়া তাদের কিন্তু এ নিয়ে এতটুকু আফসোস নেই। ক্রীড়া পুরস্কার নিয়ে অনেক কথা আছে, আছে অনেক অঘটন-ঘটন। অনেকের যেমন প্রাপ্তির আনন্দ আছে, আবার অনেকের মন না পাওয়ার হতাশাও ভরে আছে। আগেই বলা হয়েছে, জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়ার সূচনা হয় ১৯৭৬ সালে। একুশে পুরস্কারও এ বছরই প্রথম দেয়া হয়। একুশে পুরস্কারে ক্রীড়াঙ্গনের মানুষদের অতটা বেশি মূল্যায়ন করা হয় না। খেলার মাঠের মানুষ হিসেবে একমাত্র প্রয়াত আবদুল হামিদ ২০০৪ সালে একুশে পুরস্কারে ভূষিত হন। এ ছাড়া ক্রীড়ালেখক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবিএম মুসা ১৯৯৯ সালে একুশে পুরস্কার পেয়েছেন তবে সেটা ক্রীড়া সাংবাদিকতা বা ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে নয়। পেয়েছেন সাংবাদিকতায়। ক্রীড়ালেখক বা ক্রীড়া সাংবাদিক অথবা ক্রীড়া ধারাভাষ্যকারদের পুরস্কার দেয়ার কোন রেওয়াজ নেই বললেই চলে। কেন নেই সেটাও কারও জানা নেই। সাহিত্যের সব শাখায় পুরস্কার পাওয়া গেলেও ক্রীড়া লেখালেখি বা ক্রীড়া সাংবাদিকতা করে অথবা ক্রীড়া ধারাভাষ্য দিয়ে কেন পাওয়া যায় না সে হিসেব আমার কখনোই মেলেনি। একজন ঔপন্যাসিক বা কবি অথবা ছড়াকার তার সাহিত্যকর্মের জন্যে পুরস্কৃত হন। ক্রীড়া সাংবাদিকতা বা ক্রীড়ালেখনীও একটা সাহিত্য। ক্রীড়া সাহিত্য। ক্রীড়াধারাভাষ্যও একটা শিল্প বা আর্ট। ক্রীড়াকথন শিল্প। ক্রীড়াঙ্গনে একজন খেলোয়াড় বা সংগঠকের যতটুকু অবদান একজন ক্রীড়ালেখক বা ক্রীড়া সাংবাদিকের অথবা একজন ক্রীড়া ধারাভাষ্যক্যকারের অবদান তাদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তারপরও তারা পুরস্কার পান না। এই না পাওয়া বা না দেয়ার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে আমার তা জানা নেই। নির্বাচকরা বিষয়টি বিবেচনায় আনেননি বলে বদরুল হুদা চৌধুরী, তওফিক আজিজ খান, বদি-উজ-জামান, মুহম্মদ কামরুজ্জামান, আলফাজ আহমদ, খোদাবক্স মৃধা, নূর আহমেদ, এম এ রশিদদের মতো ক্রীড়ালেখক-সাংবাদিকরা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। নির্বাচকরা বিষয়টি ভেবে দেখবেন কী? ক্রীড়া সাংবাদিকদের মধ্যে প্রয়াত আবদুল হামিদ (ক্রীড়াঙ্গনের একমাত্র ব্যক্তি যিনি একুশে পদক ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন) ও আরেক প্রয়াত ক্রীড়া সাংবাদিক আতাউল হক মল্লিক জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছেন। তবে দুজনের কেউ-ই ক্রীড়া সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য পাননি। একজন পেয়েছেন ভলিবল খেলোয়াড় হিসেবে অন্যজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। ক্রীড়া সাংবাদিকতার স্বীকৃতি তাঁরা পাননি। ক্রীড়ালেখক-সাংবাদিকদের মতো উপেক্ষিত হয়ে আছেন রেফারি, আম্পায়ার, জাজ, কোচরাও। তারাও পান না ভাল কাজের মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়ার ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতার কথা কম-বেশি সবার জানা। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার অনিয়মিতর কারণে কাজী সালাহউদ্দিন, নিয়াজ মোর্শেদ, আতিকুর রহমান, নায়েক সুবেদার শাহ আলম, হাবিলদার মুস্তাক আহমেদরা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বলা হয়, তারা আগে ‘স্বাধীনতা পদক’ পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া হয়নি। এটি হয়েছে সমন্বয়হীনতার কারণে। এঁদের যদি আগে জাতীয় ‘ক্রীড়া পুরস্কার’ দেয়া হতো তাহলে পরে ‘স্বাধীনতা পদক বা একুশে পদক’ পেতে কোন বাধা থাকত না। অন্য অনেক তারকা খেলোয়াড় কোনটাই পাননি। যেমন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ছাড়াও একুশে পদক পেয়েছেন আবদুল হামিদ এবং জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন ব্রজেন দাস, আব্বাস মির্জা, মোশাররফ হোসেন, জাকারিয়া পিন্টু অথবা কাজী আবদুল আলীমরা। এটা হতে পারত সালাহউদ্দিন, নিয়াজ, আতিকদের বেলায়ও। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের এক রকম মূল্যায়ন, স্বাধীনতা বা একুশে পদকের মূল্যায়ন আলাদা। একটির সঙ্গে অন্যটির তুলনা করা চলে না। আমার মনে হয়, একজন খেলোয়াড় জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারটাই সবার আগে চাইবেন। আর সেটা না পেলে পৃথিবীর যত পুরস্কারই পান না কেন মনের গহীনে একটা হাহাকার, একটা অতৃপ্তি থেকেই যায়। বলছিলাম সমন্বয়হীনতার অভাবের কথা। সমন্বয়হীনতার কারণে দেখা গেছে অনেক জুনিয়র অনেক সিনিয়রের আগে পুরস্কার পেয়ে গেছেন। এনএসসির প্রথম সচিব কাজী আনিসুর রহমান এবং সব্যসাচী ক্রীড়াব্যক্তিত্ব প্রয়াত আতাউল হক মল্লিক পুরস্কার পান ২০০৭ সালে। যা তাদের অনেক আগেই পাওয়া উচিত ছিল। আতাউল হক মল্লিক জীবদ্দশায় পুরস্কার পাননি। পেয়েছেন মৃত্যুর সাত বছর পর। এমন ঘটনা ঘটেছে আরও অনেকের বেলায়ও। ক্রীড়া পুরস্কার নিয়ে অনেকেরই অভিযোগ আছে। সেটা স্বাধীনতা বা একুশে অথবা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার হোক। খন্দকার নাসিম, হাজি রমিজরা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেলেও ফুটবল মাঠ কাঁপানো জাদুকর সামাদ একুশে বা স্বাধীনতা অথবা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার কোনটিই পাননি। কেন তাঁকে বিবেচনা করা হয়নি সেটাও কেউ জানেন না। সামাদের মতো আরও অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড় আছেন, আজকের ক্রীড়াঙ্গন গড়ার পেছনে যাঁদের অবদান ছিল অপরিসীম তাঁদের অনেকেরই যথাযোগ্য মূল্যায়ন করা হয়নি। না পেয়েছেন কোন পুরস্কার বা সম্মাননা না হয়েছে তাঁদের নামে কোন টুর্নামেন্ট। শুধুমাত্র আগের দিনের খেলোয়াড়রা অবমূল্যায়িত হয়েছেন তা নয়। আজকের দিনেও হচ্ছেন। দলীয় পরিচয় বা নির্বাচকদের রোষানলের কারণে আজও অনেকে অনেক পুরস্কারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পুরস্কারের দৌড়ে বাদের তালিকায় রয়েছে শত শত নাম। এ সাতকাহন সাত রাত লিখলেও শেষ হবে না। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ, সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ চৌধুরীরা রাজনৈতিক বিবেচনায় ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেলেও আসাফউদদৌল্লাদের মতো ক্রীড়াঙ্গনের অনেক নিবেদিতপ্রাণ মানুষ আছেন যাদের জীবনের সোনালি দিনগুলো মাটি করেছেন খেলার অঙ্গনে। ঘর-সংসারকে তুচ্ছজ্ঞান করে ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নের জন্যে, ক্রীড়াঙ্গনেই কাটিয়ে দিলেন গোটা জীবন। পুরস্কার বিবেচনায় সেই সব নিবেদিতপ্রাণ মানুষগুলোর নাম আসে না। তাদের কাজের স্বীকৃতি মেলে না। এটা খুবই দুঃখজনক। একটা কথা সবার মনে রাখা দরকার, সরকার বদল হলেই ক্রীড়াঙ্গনের চিত্র বদলে যাওয়ার কালচার ভাল নয়। একটা গোটা দেশের মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের পরিধিই বা কতটুকু? আর সেখানে মানুষের সংখ্যাই বা কতজন? ঘুরে ফিরে তো সেই ক’জন মানুষই। আর তাই নিজেদের মধ্যে দলাদলি না করে যার যা পাওনা তাকে তা দিয়ে দিলেই ক্রীড়াঙ্গনের জন্যে উপকারই হবে বৈকি। কথায় বলে, ‘যার কাজ তারই সাজে, অন্য লোকের লাঠি বাজে।’ যে বছর যে বা যারা ভাল খেলেছে তাদের পুরস্কৃত করলে কারও কোন ক্ষতি নেই। তা নিয়ে কোন কথাও উঠবে না। বরং যোগ্যতার মূল্যায়ন হলেই সবাই বেশি খুশি হবে। দলীয় পরিচয়ে, তোষামোদ করে; প্রভাব খাটিয়ে পুরস্কৃত হওয়ায় কোন আনন্দ নেই। তাতে সুনামের চেয়ে বদনামই বেশি হয়। অনেকে বলবেন, ‘কেউ তো সামনে বদনাম করে না।’ তা করে না ঠিক, তবে প্রকৃত মূল্যায়নও করে না। অগোচরের কথা নাই বা বললাম। সুতরাং যারা পুরস্কার দেন এবং পুরস্কার নেন উভয়েরই বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার, ‘যেন মুক্তোর হারটি রাজপুত্রের গলায়ই পড়ে।’ বর্তমান সরকারকে ‘ক্রীড়াবান্ধব’ সরকার বলা হয়। তারপরও এই সরকারের মেয়াদের দীর্ঘ ৭ বছরেও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দেয়া হয়নি। এই বন্ধ্যাত্ব অচিরেই ঘুচবে বলে ক্রীড়াঙ্গনের মানুষের প্রত্যাশা লেখক : কবি, কথাসাহিত্যিক ও ক্রীড়ালেখক e-mail : [email protected]
×