ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উটকো ঝামেলায় ক্লান্ত মেসি-আর্জেন্টিনা!

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১ জুন ২০১৬

উটকো ঝামেলায় ক্লান্ত মেসি-আর্জেন্টিনা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বর্ণময় ক্যারিয়ার। অথচ জাতীয় দলের হয়ে কিছুই জেতা হয়নি লিওনেল মেসির। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যথাক্রমে বিশ্বকাপ ও কোপা আমেরিকার শিরোপা হাতছাড়া করে মেসির আর্জেন্টিনা। এবার আরও একবার ব্যর্থতা ঘোচানোর সুযোগ পাচ্ছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ৩ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বুনছে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। দীর্ঘ ২৩ বছর পর শিরোপাস্বপ্ন বুনলেও বর্তমানে উটকো ঝামেলায় ক্লান্ত মেসি ও তার দেশ আর্জেন্টিনা। কর ফাঁকি মামলা নিয়ে বেশ বিপাকে আছেন পাঁচবারের ফিফাসেরা তারকা। কদিন বাদেই খেলতে হবে কোপায়। অথচ প্রীতিম্যাচে হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে চোট পান মেসি। এর চেয়ে বড় কথা, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা মেসির স্পেনে কর ফাঁকি মামলায় হাজিরা দিতে যাওয়ার কথা ছিল। যদিও চোটের কারণে মেসি যাননি, যে কারণে মঙ্গলবার থেকে তাকে ছাড়াই শুরু হয়েছে শুনানি। কিন্তু কোপার মতো বড় আসরের আগে যা হচ্ছে, তা নিয়ে মেসির সঙ্গে আর্জেন্টিনাও নাকি ক্লান্ত বোধ করছে! আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, মেসির ঘটনায় উদ্বিগ্ন আর্জেন্টিনা। এমন অবস্থায় মানসিকভাবে দল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল, শুনানির সময় আদালতে থাকবেন মেসি। এ কারণে শত শত দেশ-বিদেশী সাংবাদিক, আলোকচিত্রী, বার্সিলোনার সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন বার্সিলোনার আদালত প্রাঙ্গণে। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে তাদের। আদালতে আসেননি মেসি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার আইনজীবী জাভিয়ার সানচেজ-ভিরা। মেসির অনুপস্থিতিতেই স্পেনের একটি আদালতে তার বিরুদ্ধে উঠা কর জালিয়াতির মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। কোপা আমেরিকায় চিলির বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে শুরু হয়েছে মামলাটির কার্যক্রম। বেলিজ এবং উরুগুয়ের কোম্পানির নকল কাগজপত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইমেজ স্বত্ব থেকে আয় করা ৪.১৬ মিলিয়ন ইউরোর কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে ২৮ বছর বয়সী মেসি এবং তার পিতা জর্জ হোরাসিও মেসিকে অভিযুক্ত করে আদালত। তিন দফা কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আদালতে মেসির না থাকার মূল কারণ চোট। মেসির পক্ষের আইনজীবী আদালতের কাজের শুরুতে জানিয়ে দিয়েছেন, গত ২৮ মে হন্ডুরাসের বিরুদ্ধে প্রীতিম্যাচে পিঠের নিচের অংশে আঘাত পেয়েছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। এ কারণে মেসির সেরে উঠতে এখন ডাক্তারের সঙ্গেই বেশি সময় দিতে হচ্ছে। তবে মেসি না আসতে পারলেও তার বাবা হোরাসিও মেসি উপস্থিত ছিলেন আদালতে। কর ফাঁকির বিষয়ে তিনটি ভিন্ন মামলা আছে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে। স্পেনের আইন অনুযায়ী বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে মেসি ও তার পিতাকে কমপক্ষে সাড়ে ২২ মাস জেল খাটতে হবে। সেই সঙ্গে যে পরিমাণ অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ থাকবে সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা দিতে হবে। তবে এমন পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো অপরাধ করলে শাস্তির পরিমাণ কমিয়ে দেয়ার নজির স্প্যানিশ আদালতে আছে। শুনানির প্রথম দিনটি শুধু সাক্ষীদের প্রাথমিক জেরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এ সময় বার্সিলোনা তারকার পক্ষ নিয়ে তার আইনজীবীরা বলেন, বিশ্ব নন্দিত এই ফুটবল তারকার পিতাই তার আর্থিক বিষয়াদিগুলো দেখাশুনা করেন। যে কারণে কোন প্রকার ভুলত্রুটির জন্য মেসি দায়ী নন। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে তদন্তকারী বিচারকের প্রশ্নের জবাবে মেসি বলেছিলেন, আমার আর্থিক বিষয়গুলো পরিচালনা করেন আমার বাবা। আমি বিভিন্ন নথিতে স্বাক্ষর করেছি ঠিকই, কিন্তু আমি চুক্তির নথিগুলো কখনও পড়ে দেখিনি। কোথায় কোথায় স্বাক্ষর করেছি তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না। এই বিষয়গুলো আমার বাবাই দেখভাল করেন। তার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি সব সময় ফুটবলের প্রতি মনযোগী। তিনি যা যা করতে বলেন তাই আমি করেছি। মামলার শুনানি শুরু হওয়ার আগেরদিন এই বিষয়টি সাক্ষাতকারে জানান মেসি। তার মতে, কোথায় স্বাক্ষর করেছেন তা তিনি জানেন না। আদালতে একজন বিচারকের সামনে নিজের জবানবন্দীতে মেসি বলেছিলেন, তার কাছে যে চুক্তিপত্রগুলো আনা হতো তা তিনি কখনও পড়ে দেখে স্বাক্ষর করতেন না।
×