ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রিও অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন বাকীর

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১ জুন ২০১৬

রিও অলিম্পিকে পদক জয়ের স্বপ্ন বাকীর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এখন পর্যন্ত আটবার গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন পদকই জিততে পারেনি বাংলাদেশের এ্যাথলেটরা। এবারও রিও ডি জেনিরো অলিম্পিকে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেখানে অংশগ্রহণের জন্য শ্যুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকী আগেভাগেই পেয়েছেন ওয়াইল্ড কার্ড। প্রতিবারই ওয়াইল্ড কার্ড পেয়েই বাংলাদেশ থেকে এ্যাথলেটরা সুযোগ লাভ করেন এ আসরে অংশ নেয়ার। দারুণ গর্বিত বাকী এবার মর্যাদার অলিম্পিকে দেশের পদক খরা কাটাতে। সম্প্রতি এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছেন অলিম্পিকে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়াটাই মর্যাদার। কিন্তু সেই মর্যাদা কাজে লাগিয়ে তিনি পদক শিকারের উদ্দেশ্য নিয়েই নামবেন এমন প্রত্যয়ই জানিয়েছেন। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ। ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস এদেশে। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ হিসেবে বিবেচিত অলিম্পিকে সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে কোন পদক জিততে না পারার তালিকায় বাংলাদেশ আছে এক নম্বরে। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার মাত্র ১ জন সুযোগ করে নিয়েছিলেন অলিম্পিকে। এরপর থেকে সবগুলো আসরেই একাধিক এ্যাথলেট অংশ নিয়েছেন। কিন্তু কেউ বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনতে পারেননি পদক জিতে। সেটা সব সময়ই দুরূহ ব্যাপার। কারণ কোন এ্যাথলেটই এর আগে অলিম্পিকে সরাসরি অংশ নেয়ার যোগ্যতা দেখাতে পারেননি। বিশেষ বিবেচনার ওয়াইল্ড কার্ডই ছিল ভরসা। তাই এ্যাথলেটরা এবং সংগঠকরা সব সময়ই স্বীকার করতেন যে পদক জয়ের জন্য যেমন প্রস্তুতি প্রয়োজন সেক্ষেত্রে তারা নানাবিধ সমস্যার মধ্যে পড়েন। এর মধ্যে অন্যতম ফ্যাসিলিটিজের সমস্যা, বিনিয়োগের ঘাটতি এবং দেশে ক্রিকেটের অত্যধিক জনপ্রিয়তা যেটি অলিম্পিকের অংশই নয়। কিন্তু বাকীই প্রথম সরাসরি অংশগ্রহণের সেই সুযোগটা লাভের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। এ কারণে স্বপ্নটা বড় হয়েছে বাংলাদেশের। বাকী ২০১৪ কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে জিতেছেন রৌপ্যপদক। আর সে কারণেই স্বপ্নটা বড় হয়েছে। বাকীও সেই স্বপ্ন নিয়ে এবার রিও অলিম্পিকে দারুণ কিছু করতে চান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সব এ্যাথলেটের স্বপ্ন অলিম্পিকে অংশ নেয়া এবং দারুণ কিছু করা। আমারও সেটাই উদ্দেশ্য।’ জাতীয় শূটিং ফেডারেশনে অনুশীলনের সময় বিরতিতে বাকী এসব কথা বলেন। বাকী আরও বলেন, ‘আমি অনুশীলনে যেভাবে নৈপুণ্য দেখাচ্ছি সেটাই যদি আবার করতে পারি সেক্ষেত্রে আশা করছি ফাইনালে উঠতে পারব। আমি অবশ্যই একটি পদক জেতার শিকারেই নামব।’ সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগটা অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়েছে বাকীর। তবে মিউনিখে সদ্যই শেষ হওয়া বিশ্বকাপে প্রথম অবস্থায় লিডারবোর্ডেই ছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত শেষের দিকে থেকে সমাপ্ত হয়েছে তার বিশ্বকাপ। তবে দারুণ নৈপুণ্যের জন্য আগেভাগেই ওয়াইল্ড কার্ড পেয়েছেন তিনি। রিও অলিম্পিকে পদক জয়ের ক্ষেত্রে যদিও বেশ দূরেই আছেন তিনি, কিন্তু ডাচ কোচ ক্লাভস ক্রিস্টেনসেন মনে করেন বাকীর ভবিষ্যত বেশ উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘অনেক মেধা আছে এখানে। তবে অনেক বিষয়ই আছে যেখানে আমরা উন্নতি করতে পারি। আমি আশাবাদী যে আগামী চার বছরের মধ্যে ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে অনেক শক্তিশালী একটি শূটিং টিম থাকবে বাংলাদেশের।’ এবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনও (বিওএ) পদক খরা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে আশাবাদী। বিওএ ডিরেক্টর জেনারেল ফখরুদ্দীন হায়দার বলেন, ‘যেই কোন স্বর্ণপদক জিতবে তাকে ১ কোটি টাকা, রৌপ্য জিতলে ৫০ লাখ টাকা এবং ব্রোঞ্জ জিতলে ২৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। যে প্রথম কোন পদক জিততে পারবে নিশ্চিতভাবেই সে জাতীয় কিংবদন্তি হয়ে যাবেন।’
×