ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আইপিএলের ‘সেরা উদীয়মান’

ভারত কাঁপিয়ে ফিরলেন মুস্তাফিজ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৩১ মে ২০১৬

ভারত কাঁপিয়ে ফিরলেন মুস্তাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকে বিমোহিত করে আইপিএল মিশন শেষ করলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ক্রিকেটের জনপ্রিয় এ আসরে নিজের অভিষেকেই মাত করলেন বাংলাদেশী পেসার। পঞ্চম সর্বাধিক ১৭ উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদের প্রথম শিরোপা জয়ে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। কেবল তাই নয়, প্রথম বিদেশী ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলের সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছেন টাইগার কাটার-মাস্টার। এক্ষেত্রে তার ধারে কাছেও ছিলেন না কেউ। আইপিএলের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ‘ইমার্জিং ক্রিকেটার অব দ্য সিজন’ হিসেবে মুস্তাফিজের প্রাপ্য ভোট ৮৩.২ শতাংশ, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লোকেশ রাহুলের ৬.৫! ৬১ ওভার বল করে টুর্নামেন্টে তার ইকনোমি ৬.৯০। কিপটে বোলিংয়ে মুস্তাফিজই সবার ওপরে। আইপিএল মাতিয়ে সেনসেশনাল বাংলাদেশী ক্রিকেটারের সোমবার রাতেই দেশে ফেরার কথা। আইপিএলের বিভিন্ন আসরে আলাদা নামে পরিচিত এই পুরস্কার (সেরা উদীয়মান) এতদিন কেবল ভারতীয়রাই যা পেয়ে এসেছেন। এবারই প্রথম কোন ভিনদেশী হিসেবে সেটি মুস্তাফিজের হাতে। গত বছর এপ্রিলে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর থেকেই মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন। ২ টেস্ট, ৯ ওয়ানডে আর ১৩ টি২০তে তুলে নিয়েছেন ৫২ উইকেট (টেস্টে ৪টি, ওয়ানডেতে ২৬টি, টি২০ ২২টি)। ক্রিকেট দুনিয়াকে মুগ্ধ করেছেন তার দুর্দান্ত কাটার আর সেøায়ারে। আইপিএলে হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে গিয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের সাফল্যেরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। ১৬ ম্যাচে ২৪.৭৬ গড়ে তুলে নিয়েছেন ১৭ উইকেট, ইকনোমি রেট ৬.৯০। টি২০ ক্রিকেট বোলারদের জন্য কঠিন হলেও মুস্তাফিজের বল খেলাই ছিল আইপিএলে ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় পরীক্ষা। ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ফাইনালেও খারাপ করেননি। রান-উৎসবের মাঝে ৪ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়েছেন। ক্রিস গেইল আর বিরাট কোহলির ঝড়ের মধ্যে বল হাতে সমীহ জাগিয়েছেন বারবারই। শেন ওয়াটসনের উইকেটটি পেয়েছেন, কিন্তু সতীর্থ ফিল্ডার ক্যাচ মিস না করলে পেয়ে যেতে পারতেন আরও একটি উইকেট। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম জিনিউজ এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানও মুস্তাফিজের বল ঠিকমতো খেলতে পারেনি। নির্ভুলভাবে সঠিক বল করার স্বীকৃতি হিসেবেই এ বছরের আইপিএলের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করা হয় মুস্তাফিজের নাম। ধীর পায়ে হাসিমুখে মঞ্চে এসে তিনি হাতে তুলে নেন পুরস্কার। মুস্তাফিজ প্রমাণ করলেন, ইংরেজি বলতে না জানা, হিন্দি ভাষা না বোঝা, প্রথমবার দল ছাড়া একা একা অন্য একটি দেশে থাকার বিড়ম্বনা ভাল ক্রিকেটার হওয়ার পথে কোন বাধা নয়। ক্রিকেটের ভাষা বোঝাটাই বড় কথা। দ্য ফিজ যেটা সবচেয়ে ভাল বোঝেন।’ প্রথমবারের মতো শিরোপ-উল্লাসে ভাসছে হায়দরাবাদ। আসর জুড়ে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের তুরুপের তাস হয়ে ছিলেন ২০ বছরের বাংলাদেশী পেসার। ‘ভুবনেশ্বরকে নিয়ে গোটা আইপিএলে সে যেভাবে বোলিং করেছে, তাতে এই সাফল্যের বড় একটা কৃতিত্ব ওকে দিতেই হবে। মুস্তাফিজ প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার, বাংলাদেশের বড় সম্পদ। আশা করছি সে সুস্থ থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও দুর্দান্ত হয়ে উঠবে।’ বলেন ওয়ার্নার। ইংরেজী বলতে না পারলেও উদযাপনটা ভালই উপভোগ করেছেন মুস্তাফিজ, নেচেছেন, ট্রফি ও অধিনায়কের সঙ্গী ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন।
×