ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএনএ প্রোফাইল আদালতের নির্দেশে মেডিক্যাল বোর্ড প্রধানের হাতে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৩১ মে ২০১৬

ডিএনএ প্রোফাইল আদালতের নির্দেশে মেডিক্যাল বোর্ড প্রধানের হাতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ৩০ মে ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলনের পর সংগৃহীত দাঁত ও সোয়াবের ডিএনএ সিআইডির ল্যাবে পরীক্ষার পর প্রস্তুত করা প্রতিবেদন আদালতের নির্দেশে সোমবার মেডিক্যাল বোর্ড প্রধানের হাতে পৌঁছেছে। এদিকে দুই মাস অতিবাহিত হলেও তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেনি মেডিক্যাল বোর্ড। জানা যায়, সোহাগী জাহান তনুর লাশ গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধারের পর গত ৪ এপ্রিল ১৫ দিনের মাথায় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডাঃ শারমিন সুলতানা। পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাঃ কামদা প্রসাদ সাহা ওই প্রতিবেদনটি সাংবাদিকদের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরেন। প্রথম ময়নাতদন্তে তনুর মৃত্যুর কারণ বা ধর্ষণের আলামত উল্লেখ ছিল না। মামলার দ্বিতীয় তদন্তকারী সংস্থা ডিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে এর আগে ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। এ সময় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডি তনুর দাঁত ও ভেজাইন্যাল সোয়াবসহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে। সিআইডির ল্যাবে ডিএনএ পরীক্ষার পর তিনজন পুরুষের বীর্য পাওয়া যায় এবং ওই তিনজন পুরুষের পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল সিআইডির হাতে রয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়। সূত্র জানায়, গত ১৪ মে কুমিল্লা আদালতে এসে পৌঁছায় নিহত তনুর কাপড় ও শরীরের ৭টি বিষয়ের ডিএনএ প্রতিবেদন। ১৫ মে তনুর কাপড়, চুল, দাঁত, নখের ডিএনএ এবং সোয়াব পরীক্ষার প্রতিবেদন চেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছিল ময়নাতদন্তকারী দলের প্রধান ডাঃ কামদা প্রসাদ সাহা। সেই চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর কাছে। কিন্তু গত ১৯ মে তনুর ডিএনএ প্রতিবেদন আদালতের মাধ্যমে নেয়ার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী বোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন। এরই মধ্যে তনুর দাঁত ও সোয়াব পরীক্ষার ডিএনএ প্রতিবেদন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে প্রদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রবিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুস্তাইন বিল্লা এ আদেশ দেন। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তনুর দাঁত ও সোয়াব পরীক্ষার আলাদা আলাদা প্রতিবেদন সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। দাঁত ও ভেজাইন্যাল সোয়াবের পৃথক ডিএনএ প্রতিবেদন আদালতের নির্দেশে সোমবার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধানের হাতে পৌঁছেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে বোর্ডের প্রধান ডাঃ কামদা প্রসাদ সাহা প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এদিকে সিআইডির ল্যাবে প্রস্তুত ডিএনএ রিপোর্ট প্রাপ্তির যুক্তি দেখিয়ে দুই মাসেও দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। তবে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ ও ধর্ষণের আলামত চিহ্নিত হয়ে থাকে। আর হত্যাকারী শনাক্ত করতে প্রয়োজন ডিএনএ। তনুর পরিবার ও স্বজনরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করার জন্য ডিএনএ প্রতিবেদন প্রাপ্তির যুক্তি দেখানো হচ্ছে শুধুই কালক্ষেপণের জন্য। তারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে অবিলম্বে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশেরও দাবি জানান।
×