ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রী অনড়, সময় বাড়বে না

সিম নিবন্ধন সময় শেষ হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৩১ মে ২০১৬

সিম নিবন্ধন সময় শেষ হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি

ফিরোজ মান্না ॥ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধন, এই মহা কর্মযজ্ঞ শেষ হতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় বাকি। আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত সিম নিবন্ধনের কাজ চলবে। এরপর আর সময় বাড়বে না। এ কথা ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। তবে মোবাইল অপারেটররা আরও এক মাস সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন সময় না বাড়ালে সোয়া দুই কোটি সিম নিবন্ধনহীন থেকে যাবে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হবে। তাই সিম নিবন্ধনের সময়সীমা আরও এক দফা বাড়ালে এই সিমগুলো নিবন্ধনের আওতায় আসবে। তারা বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে কথাও বলেছেন। এ বিষয়ে বিটিআরসি জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সিম পুনঃনিবন্ধনের কাজ শুরু হয়। ৩০ এপ্রিল ছিল সিম নিবন্ধনের শেষ দিন। পরে আরও এক দফা সময় বাড়িয়ে ৩১ মে করা হয়েছে। সাড়ে ৫ মাস ধরে সিম নিবন্ধনের কাজ চলার পরে আর নতুন করে সময় বাড়ানো হবে না। সময় বাড়াতে হলে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হবে। সিম নিবন্ধন নিয়ে আর কোন সময় বাড়ানো হবে না এমন কথা ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম গত রবিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে যারা সিম নিবন্ধন করতে পারেননি তারা আবার সময় বাড়িয়ে দিলেও নিবন্ধন করতে পারবেন না। রবিবার পর্যন্ত ১০ কোটি ৯ লাখের বেশি মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধিত হয়েছে। বাকি দুই দিনে আরও প্রায় এক কোটি সিম নিবন্ধন হবে। ৩১ মের পরে আর কোন সিম নিবন্ধন হবে না। তবে দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের জন্য নিবন্ধন করার সুযোগ থাকবে। জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের আঙ্গুলের ছাপ না মেলাসহ সিম নিবন্ধনে এনআইডি সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে (এনআইডি) ১৬১০৩ নম্বরে ফোন করে সমাধান করা যাবে। ওই সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি সেখান থেকে সবচেয়ে কাছের নিবন্ধন সেন্টারের ঠিকানাও জানিয়ে দেয়া হবে। এর বাইরে আগামী ৩১ মে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই নম্বরে ফোন করে সেবা পাওয়া যাবে। ১০ কোটির বেশি সিম নিবন্ধিত হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী। জনগণের স্বার্থে নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছিল, আর সময় বৃদ্ধি করা হবে না। ৩১ মের পর অনিবন্ধিত সিমগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। যা দুই মাসের আগে কেউ চালু করতে পারবেন না। এর আগে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। পরে আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে আর সময় বাড়ানো হবে না। একটি এনআইডির বিপরীতে গ্রাহকের কয়টি সিম রয়েছে তা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। আগামী জুনের শেষ বা জুলাইয়ের শুরুতে গ্রাহকদের এসএমএস করে জানিয়ে দেয়া হবে কার কয়টি সিম রয়েছে। কোন গ্রাহক যদি মনে করেন তার নামে নিবন্ধিত সিম বন্ধ করে দেবেন সে প্রক্রিয়াতেও তিনি যেতে পারবেন। সময় শেষ হবার পর অনিবন্ধিত সিম বন্ধ হলে রাজস্ব ক্ষতি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, আমাদের ডেটা ব্যবহার বাড়ছে। নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল বা এমএনপি চালু হবে। ফোরজিও নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। ফলে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করার পরই ঘোষণা দেন, মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধন করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে মোবাইল অপারেটর, টেলিযোগাযোগ নিন্ত্রয়ক সংস্থার (বিটিআরসি) প্রতিমন্ত্রী কয়েক দফা বৈঠক করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে মতবিনিময় করেন। পরে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সিম নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়। পরে জানুয়ারি মাস থেকে সিম নিবন্ধন পুরোপুরিভাবে শুরু করা হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন নিয়ে নানা মহল নানাভাবে বিরোধিতা শুরু করে। কিন্তু মন্ত্রী এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেন। তিনি বিভিন্ন সেন্টারে সেন্টারে ঘুরে নিবন্ধন কার্যক্রম দেখেন। বিভিন্ন সময় জামায়াতিদের গুজবের মোকাবেলাও করতে হয় তাকে। হাল ছড়েননি তিনি। মোবাইল সিম নিবন্ধন কর্যক্রমে কোন বাধাকে বাধাই মনে করেননি। তার প্রচেষ্টায় দেশে প্রায় ১১ কোটি মোবাইল সিম নিবন্ধন হয়েছে।
×