ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভিন্ন মত দমনের কার্যকর হাতিয়ার

বেড়েই চলেছে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের ব্যবহার

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৩১ মে ২০১৬

বেড়েই চলেছে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যারের ব্যবহার

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবাধিকার কর্মী আহমেদ মনসুর। গত পাঁচ বছরের জীবনে তার জেল খাটা ও চাকরিচ্যুতির অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি তার পাসপোর্ট জব্দ, গাড়ি চুরি, ই-মেইল হ্যাক, অবস্থান চিহ্নিত হওয়া ও ব্যাংক হিসাব থেকে এক লাখ ৪০ হাজার ডলার খোয়া যাওয়ার অভিজ্ঞতাও পেয়েছেন। তাকে একই সপ্তাহে দুইবার পিটুনিও খেতে হয়েছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। মনসুরের এই কাহিনী ভিন্নমত পোষণকারী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। আগে হাতেগোনা কয়েকটি দেশ সুকৌশলে হ্যাকিং ও গোয়েন্দাগিরির অস্ত্র ব্যবহার করত। কিন্তু বর্তমানে, তেলসমৃদ্ধ আমিরাতের মতো ছোট দেশ হোক বা ইথিপিয়ার মতো জনবহুল দেশ হোক, সবাই বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার কিনছে। অথবা তারা তাদের নিজ নিজ হ্যাকিং ও নজরদারি ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রোগ্রামারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ইসরাইলের এনএসও গ্রুপ ও সেলিব্রাইট থেকে শুরু করে জার্মানির ফিনিশার ও ইতালির হ্যাকিং টিম বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে ডিজিটাল গোয়েন্দা সরঞ্জমাদি বিক্রি করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে কয়েকটি বিদেশী কোম্পানি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এসব সরঞ্জাম ফাঁদে ফেলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিছু দেশ এগুলো ব্যবহার করছে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর নজরদারি করতে। অন্যরা এগুলো ব্যবহার করছে তাদের সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে ও শাস্তি দিতে, আর তা করা হচ্ছে তাদের দেশের ভেতরে ও বাইরে দুই জায়গাতেই। সারা বিশ্বে স্পাইওয়্যার সফ্্টওয়্যারের বিস্তার নিয়ে গবেষণাকারী ইউনিভার্সিটি অফ টরোন্টোর সিটিজেন ল্যাবের সিনিয়র ফেলো বিল মার্কজাক বলেন, “এ ব্যাপারে কার্যত কোন আইন নেই।” “যে কোন সরকার চাইলেই স্পাইওয়্যার সফ্্টওয়্যার কিনতে অথবা এটিকে সমৃদ্ধ করতে প্রোগ্রামার ভাড়া করতে পারে। আর যখন দেখি, সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলো স্পাইওয়্যার ছড়াচ্ছে, তখন পরিষ্কার যে এ ক্ষেত্রে অর্থ কোন বাধা নয়।” মার্কজাক মনসুরের ই-মেইল পরীক্ষা করে দেখতে পান, মনসুর গ্রেফতার হওয়ার আগেই স্পাইওয়্যারের টার্গেটে পরিণত হয়েছিলেন। এই স্পাইওয়্যার ফিনিশার ও হ্যাকিং টিম বিক্রি করেছিল। আমিরাতের শাসকদের মানহানি করার অভিযোগে ২০১১ সালে আরব বসন্ত বিপ্লবের মাঝামাঝি সময়ে মনসুরসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেন। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×