ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেরীনা চৌধুরী

ত্বকের যত্নে প্রতিদিন

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৩০ মে ২০১৬

ত্বকের যত্নে প্রতিদিন

দেহের সব থেকে স্পর্শকাতর অঙ্গ হলো ত্বক। এখন আবহাওয়ায় শুষ্কতার টান- যা ত্বককে করে তোলে বিবর্ণ ও রুক্ষ। তাই এই সময় ত্বকের যত্ন বিশেষভাবে প্রয়োজন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিন্তু আমরা জোর দেই মুখের যতেœর প্রতিÑ চোখ, নাক, ঠোঁটের গড়নের ওপর। মাঝে মাঝে ভুলেই যাই যে এই অঙ্গগুলোকে ধারণ করে রাখে যে ত্বক সেই ত্বক যদি সুন্দর না হয় তাহলে অন্যদের কোন মূল্যই নেই। একবার ভেবে দেখুন তো বড় বড় পলকে ঘেরা মায়াবী চোখের জাদুও কি নষ্ট হয়ে যায় না। যদি তার ঠিক নিচেই থাকে কাকের পায়ের আঁচড়। গম রঙা ত্বকের সৌন্দর্যও খোলে না যদি তা হয় শুষ্ক ও বিবর্ণ। অথচ শ্যামলা রঙের সাধারণ মুখশ্রীর তরুণী অনায়াসে নজর কাড়ে উজ্জ্বল-মসৃণ ত্বকের জোরে। তাই শুধুই মুখের যতœ নয়, যতœ নিতে হবে সারা শরীরের ত্বকের। ত্বকের পরিচর্যা সমন্ধে জানার আগে জেনে নেয়া দরকার কী কী কারণে ত্বক সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ত্বকের সব থেকে বড় শত্রু কিন্তু প্রখর সূর্যরশ্মি। তাই রোদ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকাই ভাল। শীত-গ্রীষ্ম সারা বছরই বেরোতে হলে ছাতা ও রোদ চশমা ব্যবহার করুন। শুধু রোদ নয় ধুলো-বালি, ধোঁয়াতেও ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু আপনি ঘরে তো বসে থাকতে পারবেন না। আপনাকে বের হতেই হবে কাজকর্মও করতে হবে। সব কিছু করেও আপনাকে ত্বকচর্চার জন্য একটু সময় বের করে নিতে হবে। সামান্য কিছু নিয়ম বা অভ্যাসের পরিবর্তনে কিন্তু আপনার ত্বক হয়ে উঠবে ঝলমলে। সতেজ যা নজর কাড়বে। এর জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলুন- হ বেশিরভাগ মেয়েদেরই অভ্যাস থাকে, ঘুম থেকে উঠে মুখে-চোখে অল্প একটু পানি দিয়ে রান্নাঘরের কাজে লেগে যাওয়া। এটা কিন্তু একেবারে ঠিক নয়। রান্নাঘরের কাজ করতে গেলে চোখে-মুখে তাপ লাগবেই। আর এই তাপ ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাই রান্নাঘরে ঢোকার আগে মুখে গলায় হাতে ভালভাবে ময়েশ্চারাইজার মেখে নেবেন। হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজার না থাকলে নারকেল তেলও মাখতে পারেন। রান্না হয়ে গেলে ভালভাবে গোসল করে তেল বা ময়েশ্চারাইজার তুলে ফেলবেন। হ গোসলের সময় শক্ত কাপড় দিয়ে শরীর ভালভাবে ঘষে নিন। এর ফলে শুকনো ত্বক বা মরা চামড়া উঠে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়ে যাবে। এতে রক্তসঞ্চালন দ্রুত হয়ে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে। হ যারা চাকরি করেন তারা গোসলের পর বাইরে বেরুনোর আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। মেকআপের বেস হিসেবেও এর ব্যবহার জরুরী। যারা বাড়িতে থাকেন তারা যে কোন বডি লোশন সারা শরীরে মেখে নিতে পারেন। হ সন্ধ্যাবেলা অফিস থেকে ফিরেই মুখটা ভালভাবে ডিপক্লেনজিং মিল্ক দিয়ে পরিষ্কার করে নেবেন। সাবান দিয়ে ধোবেন হাত-পাও। তারপর যে কোন নাইটক্রিম লাগান মুখ হাত পা এবং গলায়। শোবার আগে আবার ভিজে তুলো দিয়ে নাইট ক্রিম মুছে নেবেন। ভারি ক্রিম মুখে লাগিয়ে কখনোই শোবেন না। হ মনে রাখবেন, প্রতিদিন সকালে এবং রাতে মুখ পরিষ্কার করাটা অবশ্য কর্তব্যের অঙ্গ। হ শীতের দিনে সরষের তেল দিয়ে শরীর পরিষ্কার করতে পারেন। এতে ময়লা যেমন দূর হবে, তেমনি আবার ত্বকের তৈলাক্ত নষ্ট হয় না। হ যাদের তেল সহ্য হয় না, তারা সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে সারা শরীরে মেখে নেবেন। ত্বক নরম রাখার জন্য এটিও ভাল কাজ করে। এই মিশ্রণটি ফ্রিজে রেখে বেশ কিছুদিন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে মিশ্রণটি মুখে মাখবেন না। হ আপনার খাদ্যাভাসও কিন্তু ত্বককে অনেকখানি প্রভাবিত করে। অতিরিক্ত ভাজাভুজি এবং তেল-মসলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খান। এছাড়া সেদ্ধ শাকসবজি কাঁচা সালাদ আর ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেলে ত্বক অনেক সহজে উজ্জ্বল এবং লাবণ্যময় হয়। হ ত্বকে রাসায়নিক জিনিস যত কম ব্যবহার করা যায়, ততই ভাল। সাবানের পরিবর্তে বেসন ব্যবহার করতে পারেন। দুধ কিন্তু ভাল ক্লিনজার। এক টুকরো তুলো দুধে ভিজিয়ে তা দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। হ সপ্তাহে সম্ভব না হলে মাসে দু’বার ফেসপ্যাক নেয়া ভাল। হ ত্বক ভাল রাখার জন্য ঘুম খুব জরুরী। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাবেন। ঘুম যাতে ভাল হয় সেজন্য রাতের খাবার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নেয়া ভাল। যদি সম্ভব হয় খাওয়ার পর একটু হেঁটে আসা ভাল। হ ত্বকচর্চার আগে কোন অভিজ্ঞ বিউটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী তিনি বলে দেবেন কিভাবে ত্বক পরিচর্চা করবেন। ছবি : আরিফ আহমেদ মডেল : সুজানা
×