ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোহামেডানকে লজ্জা দিল সিসিএস

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩০ মে ২০১৬

মোহামেডানকে লজ্জা দিল সিসিএস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভিক্টোরিয়ার পর ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) কাছে ধরাশায়ী হয়েছে মোহামেডানও! বৃষ্টি আইনে ৩১ রানে হেরে গেছে মোহামেডান। তবে এই হারেও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে পড়েনি ‘সাদা-কালো’ শিবির। সিসিএস দুই জয় তুলে নিয়েছে। সবারই অনুমিত ছিল, ফতুল্লার ম্যাচটিতে মোহামেডানই জিতবে। কিন্তু সিসিএস সেই অনুমান ভেঙ্গে দিয়েছে। মিরপুরে অবশ্য প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবই জয় পেয়েছে। কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমিকে (সিএ) ৮ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। এই জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে যায় প্রাইম ব্যাংক। কলাবাগান সিএ পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে নেমে গেছে। সালমান, মেহরাবে সিসিএসের দ্বিতীয় জয় ॥ এবার ঢাকা লীগের সবচেয়ে দুর্বল দলটি সিসিএস। অথচ এ দলটিই কিনা বড় দুটি দলকে হারিয়ে দিয়েছে! শুরুতে জিতলেই পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠতে পারত ভিক্টোরিয়া, এমন ম্যাচে গিয়ে সিসিএসের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে। রবিবার মোহামেডানকেও সেই একই পথের পথিক বানালো সিসিএস। পয়েন্ট তালিকা থেকে মোহামেডানকে কক্ষচ্যুত করতে পারেনি, তবে জয় ঠিকই তুলে নিয়েছে সিসিএস। তাতে করে যে দলগুলো দুই বা তার অধিক জয় পেয়েছে, দুর্বল দল হয়েও তাদের দলে সামিল হয়ে গেল সিসিএস। মোহামেডানকে যে হারিয়েছে সিসিএস, তাতে নায়ক বলতেই হবে সালমান হোসেনকে। সিসিএস ইনিংসের একমাত্র অর্ধশতক করা ব্যাটসম্যান সালমান। তার ৫৮ রানেই তো বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ১৪৯ রান করতে পেরেছিল সিসিএস। এরপর মোহামেডান ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিংয়ে নেমে এই সালমানেই বিধ্বস্ত হয়েছে। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরাও হন সালমান। যখন নাজমুল হোসেন মিলন (৩২) মোহামেডানকে জয়ের আশা দেখাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই সালমানের বলে আউট হয়ে যান মিলন। এরপর টপাটপ উইকেট পড়তে থাকে এবং ২১ ওভারে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় মোহামেডান। তবে নায়ক যদি হন সালমান, তাহলে পার্শ্বচরিত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোলটি করেছেন মেহরাব হোসেন জোসি। এজাজ (৩৫), মুশফিক, ভারতের মিঠুন, আরিফুল হককে দ্রুতই সাজঘরে ফেরান। ৫২ রানে যে মোহামেডানের ৫ উইকেটের পতন ঘটে, এর মধ্যে চারটি উইকেটই শিকার করে নেন মেহরাব। শুরুতেই মোহামেডানের ইনিংসে ধস নামিয়ে দেন। এরপর এক এক করে উইকেট পড়তে থাকে। মোহামেডানের ২ ব্যাটসম্যান এজাজ ও মিলন দুই অঙ্কের ঘরে পেঁছাতে পারেন। বাকিরা সাজঘর থেকে ক্রিজে আসা এবং যাওয়ার মিছিলেই শরিক হন। শনিবার যখন বৃষ্টির জন্য ২৫ ওভার করে ম্যাচে সিসিএসের ইনিংস শেষ হয়। তখন থেকেই সবার ধারণা হয়ে যায়, মোহামেডানই জিতবে। রবিবার রিজার্ভ ডে’তে বৃষ্টি আইনে আবার টার্গেট থেকে এক রান কমেও যায়। তাতে ১৩৬ বলে ১৩৫ রান লাগে। কাজ হয়নি। ধারণা সিসিএসের অলরাউন্ডার সালমান ও পেসার মেহরাব একেবারে বদলে দেন। দু’জন মিলে সিসিএসকে দ্বিতীয় জয় এনে দেন। ৬৩ বলেই জিতে গেল প্রাইম ব্যাংক ॥ শনিবার আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২১ ওভারে মনির হোসেন (৩/১২) ও মোহাম্মদ আজিমের (৩/২৩) দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ৮৯ রানে অলআউট হয় কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি। পরে মাঠে আলোস্বল্পতা দেখা দেয়ায় খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচের দুই আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি। ফলে প্রাইম ব্যাংক ও কলাবাগান সিএ’র মধ্যকার ম্যাচটি রবিবার রিজার্ভ ডে’তে অনুষ্ঠিত হয়। প্রাইম ব্যাংক ৯০ রান করলেই জিতবে। আর যদি ম্যাচ না হয়, তাহলে দুই দলই ১ পয়েন্ট করে পাবে। তাতে ২ পয়েন্ট পাওয়া কলাবাগান সিএ’র তেমন কোন ক্ষতি না হলেও ৮ পয়েন্ট পাওয়া প্রাইম ব্যাংকের সুপারলীগে ওঠার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থায় খেলতে নেমে ৬৩ বলেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে প্রাইম ব্যাংক। হাতে আরও ৬৩ বল থাকতে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে। সাব্বির রহমান রুম্মনের অপরাজিত ৪০ ও শানাজ আহমেদের ২২ এবং নুরুল হাসান সোহানের অপরাজিত ১৫ রানে ১০.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান করে প্রাইম ব্যাংক। মোহামেডান-সিসিএস ম্যাচ-ফতুল্লা-২৫ ওভার ম্যাচ- সিসিএস ইনিংস ১৪৯/১০; ২৪.৫ ওভার (সালমান ৫৮, অমিত ২৪, উত্তম ২৩*, সাইফ ১৩; আরিফুল ৩/২৯, হাবিবুর ২/২৩)। মোহামেডান ইনিংস (টার্গেট ২৫ ওভারে ১৪৯ রান) আগের দিন ১৩/০; ২.২ ওভার (এজাজ ১২*, নাঈম ১*) ও রবিবার ১১৭/১০; ২১ ওভার (এজাজ ৩৫, মিলন ৩২, হাবিবুর ২০, নাঈম জুনিয়র ৮; মেহরাব ৪/১৪, সালমান ৩/২৭)। ফল ॥ সিসিএস বৃষ্টি আইনে ৩১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সালমান হোসেন (সিসিএস)। কলাবাগান সিএ ইনিংস ৮৯/১০; ২১ ওভার (মিরাজ ১৯, ইরফান ১২, তাপস ১২, প্রসেঞ্জিত ১১; মনির ৩/১২, আজিম ৩/২৩)। প্রাইম ব্যাংক ৯২/২; ১০.৩ ওভার (সাব্বির ৪০*, শানাজ ২২, সোহান ১৫*; মিরাজ ১/১২)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মনির হোসেন (প্রাইম ব্যাংক)।
×