ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নায়ক যখন রোনাল্ডো-রামোস

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩০ মে ২০১৬

নায়ক যখন রোনাল্ডো-রামোস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফাইনালের আগেই রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। চূড়ান্ত মহারণে গোল পেলে কীর্তির তালিকাটা আরও দীর্ঘ হত। কিন্তু শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিট তেমন চেনা যায়নি সি আর সেভেনকে! এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ডিফেন্ডাররা অনেকটাই বোতলবন্দী করে রেখেছিলেন রিয়ালের সেরা তারকাকে। কিন্তু ভাগ্যে থাকলে রুখবে কে! যে প্রমাণ মেলে ভাগ্য নির্ধারণী টাইব্রেকারে। যেখানে পঞ্চম ও শেষ শটে গোল করে রিয়ালকে আবারও ইউরোপ সেরা করেছেন রোনাল্ডো। ম্যাচ শেষে তাই উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না তারকা এই ফরোয়ার্ডের। রোনাল্ডো স্মরণ করিয়ে দেন, টাইব্রেকারের আরেক নাম ‘লটারি’। এই নিয়ে ক্যারিয়ারে তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতলেন পর্র্তুগীজ তারকা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রথমটি জেতার পর ২০১৩-১৪ মৌসুমে রিয়ালের হয়ে দ্বিতীয়টি জেতেন। উচ্ছ্বাসিত রোনাল্ডো প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, পেনাল্টি সব সময়ই লটারির মতো, আপনি কখনই জানেন না কি হবে। আমরা সব পেনাল্টিতে গোল করে তা দেখিয়েছি। আমাদের জন্য এটা চমৎকার এক রাত। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাও অনেক বড় বিষয় জানিয়ে সি আর সেভেন বলেন, আমাদের দলের অধিক অভিজ্ঞতার দিকটিই প্রদর্শিত হয়েছে। এমন স্নায়ুচাপের মুহূর্তে অভিজ্ঞতা অনেক কাজে দেয়। তিনবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার যোগ করেন এটা কঠিন, এটা মৌসুমের শেষ এবং সবাই ফিট থাকে না। তাই আমাদের সবার এখন বিশ্রাম প্রয়োজন। ইউরোর জন্য প্রস্তুত হতে হবে। রেকর্ড আগেই করে রেখেছিলেন রোনাল্ডো। এবারে মৌসুমেও তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা। তবে নিজেরই গড়া বিশ্ব রেকর্ডটা ভাঙতে পারেননি মাত্র এক গোলের জন্য। ১৬ গোল নিয়েই শেষ হলো এবারের যাত্রা। রোনাল্ডোর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বেয়ার্ন মিউনিখের রবার্ট লেভানডোস্কি। পোলিশ ফরোয়ার্ড করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নয় গোল। মেসি করেছেন মাত্র ছয় গোল। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার এই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন রোনাল্ডো। সব মিলিয়ে ক্যারিয়ারে পঞ্চমবার। এবারের আসরেই হ্যাটট্রিক করেছেন তিনটি। সবমিলিয়ে ক্যারিয়ারে পাঁচটি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে পাঁচ হ্যাটট্রিক আছে কেবল মেসির। মৌসুমের শুরুটা খুব একটা ভাল না গেলেও শেষ পর্যন্ত ৪৮ ম্যাচে ৫১ গোল করেছেন রোনাল্ডো। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে সবাইকে ছাড়িয়ে তার গোলসংখ্যা এখন সর্বোচ্চ ৯৩টি। আগামী মৌসুমেই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গোলের সেঞ্চুরি করার সুযোগ পাবেন। রিয়ালের একযুগ পর দশম শিরোপা জয়ের কারিগর ছিলেন সার্জিও রামোস। তারকা এই ডিফেন্ডার দুই বছর পর একাদশ শিরোপা জয়েরও নায়ক। বেশিরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞের মতে, রোনাল্ডো-রামোস দু’জনই নায়ক হলেও রামোসের কৃতিত্বটাই বেশি। হওয়ারই তো কথা! কারণ গোল করাটা তার কাজ নয়। রামোসের আসল কাজই হচ্ছে প্রতিপক্ষকে গোল করতে না দেয়া। কিন্তু স্পেনের তারকা এই ডিফেন্ডার মাঝে মধ্যেই দলের হয়ে মহামূল্যবান গোল করেন। এক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন্স লীগটা যেন বেশি পছন্দ রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়কের। দুই বছর আগের ফাইনালে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ যখন শিরোপা উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখন গোল করে সমতা ফেরান রামোস। পরে অতিরিক্ত সময়ে রিয়াল ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় এ্যাটলেটিকোকে। লা ডেসিমা জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল রামোসেরই। ঠিক দুই বছর পর আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে গোল করেছেন রামোস। এবারও ঠিক একই মঞ্চ, একই প্রতিপক্ষ। অবাক ব্যাপার, চ্যাম্পিয়ন্স লীগের বর্তমান সংস্করণের ফাইনালে একাধিক গোলের কীর্তি ছিল শুধু রোনাল্ডো, মেসি, স্যামুয়েল ইতো ও রাউল গঞ্জালেসের। এবার এই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তারকা ডিফেন্ডার রামোস।
×