ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পদায়ন নীতিমালা জারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের

মাঠ পর্যায়ে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়া মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং নয়

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩০ মে ২০১৬

মাঠ পর্যায়ে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়া মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং নয়

তপন বিশ্বাস ॥ মাঠ প্রশাসনে কমপক্ষে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রশাসন ক্যাডারের কোন কর্মকর্তাকেই মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করবে না সরকার। এমনকি মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে নিয়োগ পেতে হলেও মাঠ প্রশাসনে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। চাকরিকাল ছয় বছর হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং মাঠ প্রশাসনের অভিজ্ঞতাসহ চাকরির মেয়াদ আট বছর হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পাবেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এসব বিধান রেখে সম্প্রতি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন নীতিমালা জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জারিকৃত এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, অভিজ্ঞতা অর্জন এবং কাজে গতিশীলতা আনতে এই নীতিমালা করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, চাকরির শুরুতে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেয়া সহকারী কমিশনারদের নিজ বিভাগ ব্যতিত অন্য বিভাগে পদায়ন করা হবে। শিক্ষানবিসকালে কোন কর্মকর্তাকে বদলি করা হবে না। তবে প্রশাসনিক কারণে কোন কোন কর্মকর্তাকে একই বিভাগের আওতাধীন অন্য কোন জেলায় বদলি করা যাবে। চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্তি এবং চাকরি স্থায়ীকরণের পর জ্যেষ্ঠতার ক্রম অনুসরণ করে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য পদায়ন করা হবে। সহকারী কমিশনার পদ থেকে প্রত্যাহারের পর সহকারী কমিশনার বা জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার পদে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের জন্য কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বিভাগে ন্যস্ত করা হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সিনিয়র স্কেল প্রাপ্তি এবং চাকরির মেয়াদ কমপক্ষে ছয় বছর পূর্ণ হওয়ার পর একজন কর্মকর্তাকে ইউএনও হিসেবে পদায়নের জন্য যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকায় (ফিটলিস্ট) অন্তর্ভুক্তির জন্য বিবেচনা করা যাবে। এই তালিকায় থাকা কোন কর্মকর্তাকে নিজ বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগে কমপক্ষে দুই বছরের জন্য ইউএনও হিসেবে পদায়ন করা হবে। কোন কর্মকর্তাকে তার স্বামী কিংবা স্ত্রীর জেলায় পদায়ন করা যাবে না। সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ইউএনও হিসেবে চাকরির অভিজ্ঞতা এবং মোট চাকরিকাল কমপক্ষে আট বছর পূর্তিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হবে। নীতিমালা অনুযায়ী, মাঠ প্রশাসনে কমপক্ষে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন কর্মকর্তা মন্ত্রণালয় বা বিভাগে প্রেষণে কোন পদে পদায়িত হবেন না। মন্ত্রণালয় বা বিভাগে পদায়নের এই শর্ত ২০০৬ সালের ১ জুলাই এবং এরপরে চাকরিতে যোগ দেয়াদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মাঠ প্রশাসনে পদায়নের ক্ষেত্রে দেশের জেলাগুলোকে অবকাঠামোগত অবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা সুবিধা; রাজধানী, বিভাগ ও জেলা শহর থেকে দূরত্ব বিবেচনায় ‘ক’, ‘খ’, ও ‘গ’ শ্রেণীতে এবং উপজেলাগুলোকে ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের জ্যেষ্ঠতা ও কর্মদক্ষতা বিবেচনায় বিভিন্ন শ্রেণীর জেলা/উপজেলায় পদায়ন করা হবে উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, পার্বত্য ও অন্য দুর্গম কর্মস্থলে কোন কর্মকর্তার কর্মকাল হবে দুই বছর। কোন কর্মকর্তাকে এই জেলায় একাধিকবার পদায়ন করা যাবে না। তবে শিক্ষানবিসকালে পদায়নকে নিয়মিত পদায়ন হিসেবে গণ্য করা হবে না। কোন কর্মকর্তার উচ্চশিক্ষার স্বার্থে কর্মরত পদে ন্যূনতম চাকরিকালের শর্ত শিথিল করা যাবে বলেও নীতিমালায় বলা হয়েছে। কোন কর্মকর্তার নিজের অথবা স্ত্রী/স্বামী/সন্তানের দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসার স্বার্থে মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত মেয়াদকালের পূর্বে সুবিধাজনক স্থানে পদায়ন করা যাবে। কোন কর্মকর্তার স্বামী/স্ত্রী উভয়েই চাকরিজীবী হলে একই কর্মস্থলে বা যথাসম্ভব নিকটবর্তী কর্মস্থলে পদায়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হবে। চাকরি স্থায়ীকরণ এবং মাঠ প্রশাসনে চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোন কর্মকর্তাকে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সচিবের একান্ত সচিব, সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
×