ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষক লাঞ্ছনা: ফের প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশিত: ২২:৩০, ২৯ মে ২০১৬

শিক্ষক লাঞ্ছনা: ফের প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নারায়ণগঞ্জে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফের প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রবিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনায় ডিসি, এসপি ও বন্দর থানার ওসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন আজ আদালতে জমা দেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন। পরে আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, নারায়ণগঞ্জের ডিসি, এসপি ও বন্দর থানার ওসি যে প্রতিবেদন দিয়েছেন, তা দায়সারাগোছের। এতে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা সুস্পষ্ট করা হয়নি। এ জন্য আগামী ৮ জুনের মধ্যে তাঁদের ফের প্রতিবেদন দিতে হবে। আদালত আরও বলেন, দ্বিতীয় দফায় ঠিকমতো প্রতিবেদন না দিলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ৯ জুন বিষয়টি ফের আদালতের কার্যতালিকায় আসবে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ৮ মে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে শাসন করার সময় শ্যামল কান্তি ধর্ম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ১৩ মে বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সভা চলার সময় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাঁর শাস্তির দাবিতে লোক জড়ো করা হয়। এরপর উত্তেজিত লোকজন তাঁকে মারধর করে। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, জাতীয় পার্টির সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষককে মারধর ও কান ধরে ওঠবস করানো হয়। শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৮ মে রুল দেন হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে জানাতে নারায়ণগঞ্জের ডিসি ও এসপিকে নির্দেশ দেন আদালত। শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগের সত্যতা পায়নি সরকারের তদন্ত কমিটি। কমিটি বলেছে, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি ওই শিক্ষককে অবৈধভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। এ জন্য তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বাতিল এবং ওই প্রধান শিক্ষককে নিজের পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে।
×