ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অধিকার আদায়ে ঝুঁকি নিতে হবে সাংবাদিকদের ॥ ইকবাল সোবহান

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৯ মে ২০১৬

অধিকার আদায়ে ঝুঁকি নিতে হবে সাংবাদিকদের ॥ ইকবাল সোবহান

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ টেলিভিশন সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। শনিবার চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের জন্য একটি বেতন কাঠামো তৈরি করেছিলেন। করেছিলেন গণমাধ্যমের জন্য বিধিমালা। সেই আইন বিএনপি-জামায়াত সরকার রাতারাতি পরিবর্তন করে শ্রম আইনের অধীনে নিয়ে যায়। বেতন কাঠামোর পরিবর্তন করে তারা করে মজুরি বোর্ড। তিনি বলেন, টেলিভিশন সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনা হবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্যেও নীতিমালা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের একের পর এক চাকরি যাচ্ছে। রুখতে পারছি না। ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে সংগঠনের মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হতে হবে। মর্যাদা রক্ষায় ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। মালিক শোষণ করবে, শ্রমিক আন্দোলন করবে। কিন্তু সরকার অধিকার আদায় করে দেবে তাহলে হবে না, ঝুঁকি নিতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ না থাকায় অতীতে সাংবাদিক হত্যার বিচার পাওয়া যায়নি। সাগর-রুনী হত্যাকা-ের পর আমি উদ্যোগ নিয়েছিলাম, খসড়াও করেছিলাম। অন্য পক্ষের অনাগ্রহের কারণে পারিনি। দুই ইউনিয়নকে এক করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকতার মর্যাদা রক্ষার জন্য সকল সাংবাদিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে। নিরপেক্ষতার কথা বলি আমরা। স্বাধীনতা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, সাংবিধানিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রশ্নে নিরপেক্ষ থাকতে পারি না। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সেই ঐতিহ্য, স্বাধীনতার চেতনা ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদা তখনই আসবে যখন গণমাধ্যম প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে, গণতন্ত্রের বিকাশ হতে হবে। দুটি একে অপরের পরিপূরক। মর্যাদা আদায় করে নিতে হয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে শুক্কুর যে আন্দোলনের প্রতীক হয়েছিল সাংবাদিকদের বিভক্তির কারণে তা আর নেই। দলীয় রাজনীতির বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সম্পাদকীয় ইনস্টিটিউশন বলে আজ কিছু নেই। মর্যাদা হারিয়েছে। তাই সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষার কাজটি দুরূহ হয়ে পড়েছে। ‘সাংবাদিকদের মর্যাদা, শ্রম আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী। খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন সভার উদ্বোধন করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, সিইউজের সাবেক সভাপতি অঞ্জন কুমার সেন, এম নাসিরুল হক, সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সমীর কান্তি বড়ুয়া। সিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ড. সেকান্দর চৌধুরী, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিইউজের নির্বাচন কমিশনার মোয়াজ্জেমুল হক, সিইউজের সাবেক সভাপতি মাহাবুব উল আলম, মোস্তাক আহমদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন মহাজন, নির্মল চন্দ্র দাশ, নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য নওশের আলী খান, সাংবাদিক হাউজিং কো অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি আবুল মনসুর ও সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মোঃ রেজা। খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের সাংবাদিকেরা পিছপা হন না। এদেশের সংবাদপত্র প্রয়োজনের সময় বিরাট কাজ করেছে। আমাদের দেশে সাংবাদিকতার ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল। এ সরকার গণতান্ত্রিক সরকার। তাই সাংবাদিকদের মৌলিক দাবি সরকার মেটাবে। অধিকারের আন্দোলন কখনও থামে না, চালিয়ে যেতে হয়।
×