বিডিনিউজ ॥ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরী বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আজ ও আগামী দিনের জন্য আরও সময়োপযোগী এবং বিজ্ঞানভিত্তিক করে তুলতে হলে এর গুণগত মান উন্নয়ন অতি জরুরী বলে আমি মনে করি।
শনিবার ‘জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৬’র সমাপনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, শিক্ষা হতে হবে কল্যাণধর্মী, বিজ্ঞানমুখী ও বাস্তবসম্মত। নিছক জ্ঞানদান শিক্ষার উপজীব্য হতে পারে না। শিক্ষার্থীকে বিকশিত করে তোলাই হবে শিক্ষার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। অনুষ্ঠানে শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৬ উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৮৯ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি।
শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। আর নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এসব সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের একটি শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে তোলা। শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না- এটা অর্জন করতে হয়। তাই আমি দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাব, আপনারা আপনাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষিত করে তুলুন-তাদের সম্পদে পরিণত করুন, তা হলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জনের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী দিনে তোমরাই দেশের হাল ধরবে, দেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমাদের নেতৃত্বের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। নিজের দেশকে জানতে হবে।
এ সময় তাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ সংগ্রাম ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশটি স্বাধীন হয়েছে। ৩০ লাখ মানুষ আর তিন লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এসেছে এ স্বাধীনতা। তাই তোমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে। নিজের দেশ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নিয়ে গর্ব করবে। অন্যকে নয়, তোমাদের যাতে অন্যরা অনুসরণ করে সে ‘ভিশন’ নিয়ে জীবনে চলতে শিখবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, তোমরা যারা জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছ, তোমরাই এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তোমাদের জ্যোতির্ময়, হীরম্ময় দ্যুতি বিচ্ছুরিত হোক বাংলার ঘরে ঘরে। অভিনন্দন তোমাদের।
বাংলাদেশের সব শিক্ষার্থীর মধ্যে তোমাদের আলোকধারা ছড়িয়ে দাও। একটি জ্ঞানবান, গুণবান, নীতিবান, উদ্যমী ও সৃজনশীল ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ার কাজে তোমরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আমি তোমাদের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন। পরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন তিনি।
