ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভালবাসার বিয়ে

স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশন

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২৯ মে ২০১৬

স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশন

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ ‘ভালবেসে ভুল করেছি। আগে জানা ছিল না পরিণতি এমন হবে। যার জন্য ঘর ছেড়েছি সে আমার সাথে প্রতারণা করবে, কখনও ভাবতে পারিনি। প্রেম করে বিয়ে করেছি অথচ স্ত্রীর অধিকার পাচ্ছি না। এখন পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে আমাকে। কলকাতা ছেড়ে দেশে এসে স্বামীর দেখা পেয়েছি। কিন্তু সে আমাকে কোনভাবেই মেনে নিচ্ছে না। আমার মতো এমন দশা যেন আর কারও না হয়। স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশনরত শিপ্রা মজুমদার এভাবে নিজের ক্ষোভ, দুঃখ আর হতাশা কথা ব্যক্ত করেন’। তিনি জানান, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হাড়িয়ারঘোপ গ্রামের মৃত অরুন মজুুমদার তার বাবা। আড়াই বছর আগে একই উপজেলার পঙ্গাশিয়া গ্রামের বিমল ম-লের ছেলে বিপ্লব ম-লের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের প্রেমের বিষয়টি দুটি পরিবারে জানাজানি হলে কেউই মেনে না নেয়ায় শিপ্রা ও বিপ্লব দুজনে ভারতে পালিয়ে যায়। সেখানে শিপ্রা তার মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বিপ্লবও কাছাকাছি অবস্থান করেন। এ অবস্থায় দুুজনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। বিয়ে করে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখে তারা। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি শিপ্রার মামার বাড়ির লোকজন জানতে পেরে বিপ্লবকে বিয়ের জন্য বলে। তিনি শিপ্রাকে বিয়ে করতে রাজি হন। তাদের দু’জনার সম্মতিক্রমে শিপ্রার মামার বাড়ির লোকজনের হস্তক্ষেপে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। তারা বিয়ের পর কলকাতা শহরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। বিয়ের কিছুদিন পর বিপ্লব বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি নেন। মোটামুটি ভালই চলছিল তাদের সংসার। এক সময় বিপ্লব চাকরিতে বদলি হয়ে কলকাতার বাইরে গুজরাটে চলে যান। এর পর থেকে তিনি শিপ্রার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ পরিস্থিতিতে শিপ্রা বিপাকে পড়েন। নিজের ভরণ-পোষণ যোগাতে বিউটি পার্লারে কাজ শুরু করেন। এরপরও আশায় থাকেন যে বিপ্লব তার কাছে ফিরে আসবে। কিন্তু বিপ্লব আর ফিরে না আসায় হতাশ হয়ে পড়েন। এমনকি বিপ্লব ফোনেও শিপ্রার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন। এ পরিস্থিতিতে শিপ্রা জানতে পারে কয়েকদিন আগে বিপ্লব ভারত থেকে বাংলাদেশে তার গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন। এ খবর পেয়ে শিপ্রা কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে শুক্রবার বিপ্লবের খোঁজে তার বাড়িতে এসে হাজির হন। বিপ্লব তাকে দেখে ক্ষেপে যান। বিপ্লবের স্ত্রী হিসেবে শিপ্রা পরিচয় দিলে ওই বাড়ির কেউ তাকে মেনে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন। গত দু’দিন অনাহারের উল্লেখ করে বলেন, স্ত্রী হিসেবে তাকে যতক্ষণ মেনে না নেয়া হবে তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। শিপ্রা তার স্ত্রীর অধিকার ফিরে পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
×