ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভাঙ্গনের মুখে আমতলী পৌর শহর

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২৯ মে ২০১৬

ভাঙ্গনের মুখে আমতলী পৌর শহর

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ২৭ মে ॥ পায়রা নদীতে ফের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। সিসি ব্লক সরে যাওয়াতে ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে আমতলী পৌর শহর। পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘসুত্রিতার কারণে মেরামতের কাজ এখন হিমাগারে। ঘূর্নিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন সর্বশেষ গত শনিবার বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে আমতলী পৌর শহর সংলগ্ন পায়রা নদীর সিসি ব্লক সরে ও ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতে ভয়াবহ ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, কাঠপট্রি, পুরাতন লঞ্চঘাট ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা নদী বক্ষে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে নতুন করে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৮ সনে পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ফেরীঘাট থেকে পাউবোর অফিস পর্যন্ত ১ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধিনে সিসি ব্লক ফেলে শহর রক্ষাবাধঁ নির্মাণ করা হয়। সিডর আইলা, মহাসেন ও রোয়ানু ঘূর্ণিঝড়ে ব্লকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা পায়রা নদীর অস্বাভাবিক আচরনে ঢেউ গুলো তীরে আচার খাচ্ছে। ব্লকগুলো সরে যাচ্ছে এবং দুর্বল অনেক ব্লক ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হচ্ছে। অনেক স্থানের ব্লক সরে গিয়ে ঘর-বাড়ী ভেঙ্গে যাচ্ছে। পাউবো বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার ৪টি উপজেলা আমতলী, তালতলী, বরগুনা সদর ও রাঙ্গাবালীতে বেড়িবাধঁ মেরামত, স্লুইজগেট মেরামত, নতুন গেট ও কালভার্ট নির্মাণ এবং পায়রা নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে আমতলী ও তালতলী উপজেলাকে রক্ষায় ৫ কিলোমিটার নদীর তীরে ব্লক ফেলার প্যাকেজ প্রকল্পের কাজের টেন্ডার আহবান করে। প্রকল্পের নাম দেয়া হয় সিডর প্রকল্প। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সিডর প্রকল্পের কাজ পেয়েছে “ এমবিইএল এন্ড ভারতীয়া জয়েন্ট ভেন্সার” কোম্পানী। দু’ বছর মেয়াদী প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের সেপ্টম্বর মাসে এবং শেষ হবে ২০১৬ সালের সেপ্টম্বর মাসে। এ কাজের প্যাকেজে আমতলী পৌরসভাকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ১ কিলোমিটার ব্লক মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ পর্যায় সিসি ব্লক নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায় চলে এলেও পায়রা নদী ভাঙ্গন এলাকায় সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু হয়নি। জানাগেছে আমতলী পৌর শহর রক্ষা বাঁধের পুরাতন ব্লক সরিয়ে নতুন ব্লক স্থাপনের জন্য প্রাক্কলনে কোন অর্থ বরাদ্ধ না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করছে না। এমবিইএলএন্ড ভারতীয়া জয়েন্ট ভেন্সার কোম্পানির ম্যানেজার সাইদ মিয়া জানান বিশ্বব্যাংকের পরামর্শকদের নিদের্শে ১০৯০ মিটার সিসিব্লক স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি পুরাতন ব্লক সরানোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন পাউবো স্থান নির্ধারণ করে দিচ্ছে না। পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন ফেড়ীঘাট থেকে পাউবোর আমতলী অফিস পর্যন্ত এক কিলোমিটার পুরাতন ব্লক সরিয়ে নতুন ব্লক স্থাপনের কথা ছিল। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনো কাজ শুরু করছে না।
×