ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাকি খেতাব চিনিয়ে দিল কারা বাংলার মীরজাফর

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৮ মে ২০১৬

পাকি খেতাব চিনিয়ে দিল কারা বাংলার মীরজাফর

পাকিস্তানকে ধন্যবাদ। শোকরানা আদায় করি। তারা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে নিজামীরা কাদের লোক ছিলেন। আর যাই হোক তারা আমাদের মতো গাদ্দার বা মীরজাফরের জাত নয়। এর আগে আমরা রাজা ত্রিদিব রায়ের বেলায়ও তাদের এমন আকুলতা দেখেছি। এটা পাকিস্তানীদের সাকসেস। দেশ স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরও তাদের দালাল বা চামচারা বদলায়নি। বরং বদলে দাও বদলে যাও বলে এ দেশের অনেক প্রগতিবাদীও এখন তাদের পরোক্ষ দালাল। এদের বদলে যাওয়া মনে পাকিপ্রেম এখনও ভয়াবহ। তারা সব সময় বলেন, অতীত নিয়ে এত বাড়াবাড়ির কিছু নেই। এও বলতে ছাড়েন না সরকার বা চেতনাধারীরা বাড়াবাড়ি করছে। এত এত বছর পর সবাই যখন বাংলাদেশী তখন বিচার বা শাস্তির কোন দরকার ছিল না। মাঝে মাঝে আমরাও কেমন জানি দোটানায় পড়ে যাই। তাই তো। এর কি আদৌ কোন প্রয়োজন ছিল? পাকিস্তানকে দোসরা ধন্যবাদ। তারা সেটার প্রয়োজনীয়তাও দেখিয়ে দিয়েছে। আরেকটি দেশের ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে বলেনি যে, এই মানুষগুলো এখনও তাদের হয়ে লড়াই করছিল। তারা এও বলছে, পাকিস্তানের সংবিধান ও অখ-তার লড়াই করতে গিয়েই নাকি জান দিয়েছে তারা। এরপর আর কি বলার আছে রাজাকার ও সুশীল দালালদের? খন্দকার মাহবুব, তুহিন মালিক, আসিফ নজরুল বা ফরহাদ মজহাররা কি এর পরও বলতে পারবেন তারা পাকি প্রেতাত্মার হয়ে লড়েননি? আর যদি তারা এখনও এ কাজ জায়েজ মনে করেন তো তারা এ দেশের মানুষ হয়েও মূলত মীরজাফর। অন্যদিকে পাকিস্তান ভুল করেনি। তারা তাদের বীর, তাদের অনুগত, তাদের চামচাদের পদকে খেতাবে ভূষিত করে নিজেদের দায় মেটাচ্ছে। এবার তারা সরাসরি মাঠে নেমে গেছে। কারণ, পাকিস্তান এক করার খোয়াব দেখানো মানুষগুলো আর নেই। বেকুব উজবুক পাকিরা মোরারজি দেশাইকেও এমন খেতাব দিয়েছিল। এ নেতাকে ভারতে কেউ মনেও রাখেনি। রাজা ত্রিদিব বা নিজামীদের কেউ মনে না রাখলেও তাদের প্রভু রেখেছে। মরণের পরও নিশানই পাকিস্তান পাওয়া এরা কার নিশান বহন করতেন এখন কি তা পরিষ্কার, না এখনও দালালির জায়গা রয়ে গেছে? পাকিস্তান যাই করুক এখনও বাংলাদেশ তার আপন চেতনায় জাগরুক। কেউ ভাবেনি এ দেশে হঠাৎ বলশালী হয়ে ওঠা জামায়াতের নেতারা টপাটপ জেলে ঢুকবে। তার পরও তাদের আস্ফালন কমেনি। একেকজন বিচার প্রক্রিয়ার সময় এমন সব কথা বলত, এমন আচরণ করত যেন তারাই দুনিয়া চালায়। তাদের আরেক ভাই রাজাকার শিরোমণি সাকা বলত, তাকে নাকি সাইজ করার কোন মানুষের পয়দা হয়নি। জেলখানার গরাদের ভেতর থেকে এত বড় বড় কথা প্রকৃতিও মেনে নেয়নি। নিজামীদের বড় ভরসার জায়গা ছিল বিএনপি। তারা কোন দিন ভাবতে পারেনি খালেদা জিয়া ও তার দলের এমন করুণদশা হতে পারে। সময় তাদের এমন অকেজো করে ঘরে ঢুকিয়ে দেবে এটা তারা কল্পনাও করতে পারেনি। সময় যে শেখ হাসিনাকে এমন কাজের জন্য তৈরি করে রেখেছিল এটাও কেউ চিন্তায় আনেনি। অথচ এরই নাম বাংলাদেশ। পাকিস্তানের ইতিহাসই হলো পরাজয়ের ইতিহাস। একাত্তরে তারা জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে ভূখ- হারানো আর বাঙালী নেতৃত্বের প্রতি রাগে তারা এখনও অন্ধ। তাদের পেয়ারা জামায়াতও তাই। এরা নানাভাবে জাতিকে বিপথে ঠেলার চেষ্টা করেছে সারাজীবন। তিন তিনবার নিষিদ্ধ হওয়া এ দলের অতীত বলে দেয় এরা কতটা হিংস্র। কতটা ভয়ঙ্কর। জামায়াতীরা বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চেয়েছিল তার জানান দিয়েছে পাকিস্তান। ওরা বলে দিয়েছে পাকি করণের পুরস্কার দেয়ার জন্যই যত খেতাব আর শোক বা নিন্দা জানানো। ওদের মিনিস্টার, সাংসদ, ইমরান খান সবাই তাই এক দলে। এক ভাষায় বাংলাদেশবিরোধী। আর আমরা? নানাভাবে বিভক্ত আমাদের জাতিকে নতুন একটা সুযোগ দিয়েছে পাকিস্তান। তাদের কাছ থেকে শিখতে হবে কারা এ দেশের শত্রু। সঙ্গে এটাও এখন পরিষ্কার শেখ হাসিনা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী কতটা সাহসী। কতটা দূরদর্শী। তিনি আসল জায়গায় হাত দিয়েছেন বলে আজ পাকিস্তানের চেহারা ও তাদের দালালদের চেহারা বেরিয়ে এসেছে নতুনভাবে। তবে আমাদের আসলেই কোন ভয় নেই। এই তো হেগেও কূল পায়নি জামায়াতীরা। আর পাকিরা যাদের সঙ্গে তাদের পরাজয় ছাড়া জয় দেখেছে কেউ কোন দিন? সাবধান বাঙালী, সাবধান বাংলাদেশ।
×