ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কমানোর পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ২৭ মে ২০১৬

টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন কমানোর পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেসরকারী টেলিভিশনগুলোতে আরও বেশি শিক্ষামূলক ও সামাজিক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার চান দর্শকরা। পাশাপাশি তারা মানসম্পন্ন নাটক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখতেও আগ্রহী। মূলত বাংলাদেশের নাটক যে অসাধারণ সময় পেরিয়ে এসেছে, তা আর আগের অবস্থানে নেই। সেই শূন্যতা থেকেই ভিনদেশী সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়ার সূত্রপাত। সম্প্রতি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পরিপ্রেক্ষিতের উদ্যোগে ‘জনগণের গণমাধ্যম মনষ্কতা-বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশী টেলিভিশন চ্যানেলের দর্শক বৃদ্ধির জন্য প্রধান উপায় হিসেবে দর্শকরা বিজ্ঞাপনের পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে ‘পে-চ্যানেল’ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, যার ফলে বিজ্ঞাপনের বাহুল্য কমিয়েও চ্যানেল মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। পাশাপাশি বিদেশী চ্যানেলের ওপর করারোপ করা যেতে পারে। তবে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মানোন্নয়ন ব্যতীত এগুলোর মাধ্যমে দর্শক ধরে রাখা সম্ভব নয় বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি উদ্ভাবনী ও সৃজনশীল অনুষ্ঠানের সঙ্গে তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের তাগিদও দেয়া হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশের ২৬ ভাগ মানুষ ক্যাবল টিভি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। অর্থাৎ ৫০ লাখ মানুষ এই সুবিধা ভোগ করছে। কেবল দশনার্থীর একটি বড় অংশ নগরকেন্দ্রিক। ৪৬ ভাগ পরিবারে একটি করে নিজস্ব টেলিভিশন রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে দেশে ৯০টির বেশি চ্যানেল সম্প্রচারের কাজ করছে। সেগুলোর একটি বড় সংখ্যা ভিনদেশী ভাষাভাষী চ্যানেল। যেগুলোর বেশিরভাগই ভারতীয় বাজারভিত্তিক। এগুলোর মধ্যে ৪০ টির বেশি ভিন্ন ভিন্ন ভাষার। যার মধ্যে হিন্দী ও বাংলা অন্তর্ভুক্ত। দেশে বর্তমানে ৪১টি অনুমোদিত বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। যার মধ্যে দুটি সাময়িক নিষিদ্ধ আছে। গবেষণায় বলা হয়, ক্যাবল টিভির অনুপ্রবেশের পর দর্শকদের দু’ভাগে ভাগ করেছে। একশ্রেণীর দর্শক ভারতীয় চ্যানেলের ওপর নির্ভরশীল। এক্ষেত্রে নারীরা সিরিয়ালের প্রতি বেশি আসক্ত। আরেকটি অংশ ভারতীয় চ্যানেল দেখেন না। পাশাপাশি হিন্দী সিরিয়াল ও কার্টুনের কারণে বাংলাদেশী চ্যানেলের দর্শকের সংখ্যা উপর্যুপরি হ্রাস পেয়েছে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের মান বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, অধিকাংশ মানুষ টেলিভিশনের ওপর নির্ভরশীল। ১১ ভাগ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহী। পাঁচ ভাগ মানুষ পত্রিকা ও একভাগ বেতার ব্যবহার করেন। এরমধ্যে ২৬ ভাগ তথ্যদাতা দৈনিক তিন ঘণ্টা গণমাধ্যমের পেছনে ব্যয় করেন। সব মিলিয়ে মানুষ তার মূল্যবান সময়ের একটি বড় অংশ গণমাধ্যমের সঙ্গে কাটান। তথ্যদাতাদের মধ্যে ১৪ ভাগ পছন্দ করেন চ্যানেল আই। ১১ ভাগ সময় টিভি, আট ভাগ আর টিভি, তিন দশমিক নয়ভাগ পছন্দ করেন বিটিভি, ছয় দশমিক সাত ভাগ ইটিভি, ছয় দশমিক পাঁচ ভাগ এটিএন বাংলা, একই মানদ-ে বাংলাভিশন, গাজী টিভি পাঁচ দশমিক নয় ভাগ, মাছরাঙ্গা তিন দশমিক সাত ভাগ, এটিএন নিউজ তিন ভাগ, চ্যানেল ২৪ তিন ভাগ, একাত্তর দুই দশমিক আট ভাগ, মাই টিভি দুই দশমিক পাঁচ ভাগসহ অন্যান্য চ্যানেল ১২ ভাগ। গবেষণা শেষে দেশের চ্যানেলগুলোর উন্নয়নে নয় দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
×