ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাইনুল ইসলাম মানিক

ল্যাংস্টোন হিউজের কবিতা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাহসী উচ্চারণ

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ২৭ মে ২০১৬

ল্যাংস্টোন হিউজের কবিতা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাহসী উচ্চারণ

কবি সত্য ও সুন্দরের পূজারী এক নিভৃতচারী শিল্পী। সমাজ বাস্তবতার ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে যে চিরকালীন দ্বন্দ্ব অবলোকন করে তিনি আরক্ত হন, শব্দের সাথে শব্দের যোজনে দ্রোহের ফুলকিরূপে ফুটিয়ে তোলেন তারই প্রতিরূপ। গতিশীল সময়ের পর্যবেক্ষক হওয়ায় কবির কলমে সেসব অসঙ্গতি উচ্চারিত হয় যা কেউ কোনদিন বলেনি বা বলতে পারেনি। টিএস এলিয়টের ‘ট্র্যাডিশন এ্যান্ড ইনডিভিজ্যুয়াল ট্যালেন্ট’ -এ কবির করণীয় উদ্ধৃত করতে গিয়ে লিখেছেন “ঞযব পড়হংপরড়ঁং ঢ়ৎবংবহঃ রং ধহ ধধিৎবহবংং ড়ভ ঃযব ঢ়ধংঃ রহ ধ ধিু ধহফ ঃড় ধহ বীঃবহঃ যিরপয ঃযব ঢ়ধংঃ’ং ধধিৎবহবংং রঃংবষভ পধহ হড়ঃ ংযড়.ি” (সচেতন বর্তমান সতর্কভাবে ততটুকুই উপস্থাপন করবে যা অতীত সচেতন থেকেও উপস্থাপন করতে পারেনি।) যাদের কর্ম ও চিন্তায় সভ্যতা অবক্ষয়ের পথে ধাবমান, হারলেমের কৃষ্ণাঙ্গ চারণ কবি ল্যাংস্টোন হিউজ আমৃত্যু তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকা এক অকুতোভয় কলম সৈনিক বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের কবি। বর্ণবৈষম্য, ভোগবাদ, অপশাসন ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামী এ কবি একজন স্বপ্নবাজ দেশপ্রেমিক ও সৌন্দর্য পিয়াসু দার্শনিকও ছিলেন। ঘোরতর বর্ণবাদে আক্রান্ত আমেরিকায় নিগৃহীত কৃষ্ণাঙ্গদের পক্ষে যারা কলম ধরে ছিলেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে সফলতম ছিলেন হিউজ। কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে গড়ে উঠা হারলেম রেনেসাঁর পুরোধা ছিলেন তিনি। তঁাঁর কবিতায় আমরা তার অনুরণন দেখতে পাই। ‘ও, ঃড়ড়’ কবিতায় কৃষ্ণাঙ্গ কবিকে তাঁর শেতাঙ্গ ভাইয়েরা রন্ধনশালায় পাঠিয়ে দেয় যখনি কোনো অতিথি আসে। কবি সেখানে হৃষ্টচিত্তে খেয়ে দেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেন আর পরবর্তী দিনে খাবারের টেবিলে বসার স্বপ্ন দেখেন। আগামীকাল অতিথি এলে কেউ আর তাঁকে রন্ধনশালায় আটকে রাখতে পারবে না। আগামীকাল সবাই জানবে, তিনিও একজন আমেরিকান। এই ব্যাপারটি চমৎকারভাবে উঠে আসে কবিতায়- “ও ঃড়ড়, ংরহম অসবৎরপধ/ ও ধস ঃযব ফধৎশবৎ নৎড়ঃযবৎ/ ঞযবু ংবহফ সব রহ ঃযব শরঃপযবহ / ডযবহ পড়সঢ়ধহু পড়সবং/ ইঁঃ ও ষধঁময/ অহফ ও বধঃ বিষষ/ অহফ মৎড়ি ংঃৎড়হম/ঞড়সড়ৎৎড়ি / ও রিষষ নব ধঃ ঃযব ঃধনষব/ ডযবহ পড়সঢ়ধহু পড়সবং/ ঘড়নড়ফু রিষষ ফধৎব ংধু ঃড় সব/ ঊধঃ রহ ঃযব শরঃপযবহ/ঞযবহ.” মাত্র বারো বছর বয়সেই হিউজ জীবিকার তাড়নায় আমেরিকার ছয়টি অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণ করেন। যখন তাঁর প্রথম বইটি প্রকাশিত হয় ততদিনে একজন ট্রাক শ্রমিক, বাবুর্চি, পরিচারক, নাবিক, দারোয়ান এবং একজন গ্র্যাজুয়েটের অভিজ্ঞতায় পুষ্ট হন। এ সময় ভ্রমণ করেন হল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, মেক্সিকো, পশ্চিম আফ্রিকাসহ অসংখ্য দেশ। দিকে দিকে নির্মম সমাজ বাস্তবতা প্রত্যক্ষ করার মধ্য দিয়ে হিউজ বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তাঁর ‘খবঃ অসবৎরপধ ইব অসবৎরপধ অমধরহ’ কবিতায় আমরা তাঁকে চরম ঘৃণাসহ বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দেখি। এই কবিতায় অধিকার বঞ্চিত শেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, রেড ইন্ডিয়ান ও অভিবাসীদের প্রতি যে বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রনীতি চাপিয়ে দেয়া হয়েছে হিউজ তার চরম সমালোচনা করেন। তা তাঁর মুখে কবিতার শব্দে উচ্চারিত হয়Ñ “আমি সেই দরিদ্র শেতাঙ্গ যাকে দরিদ্র বানিয়ে দূরে ঠেলে দিলে/ আমি সে নিগ্রো যার কাঁধে দাসত্বের বোঝা দিচ্ছো তুলে/ আমি সেই রেড ইন্ডিয়ান যাকে করেছো দেশান্তর/ আমি সেই অভিবাসী যার স্বপ্ন ভেঙ্গেছো নিরন্তর / আর পুরনো সে রাষ্ট্রনীতি বসিয়াছো খুলে/ কুকুরে কুকুর খায় সবল দুর্বলে।” হিউজের বাবা ছিলেন একজন শেতাঙ্গ আর মা ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ। শৈশবে বাবা কিংবা মা কারো সাথেই বসবাসের অনুমতি পাননি তিনি। বাধ্য হয়েই বৃদ্ধ দাদীর সাথে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। বাবা ও মা কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার বেদনা তাঁকে শঙ্কিত ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্য দিয়ে বড় হতে বাধ্য করেছিল। বাবা-মা দুজন দু’বর্ণের হলে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় একটি শিশুকে যে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় তা খুব চমৎকারভাবে উদ্ভাসিত হয়েছে তাঁর কবিতায়। তাঁর ‘অতিক্রম’ কবিতায় এ বিষয়টি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে - “আমার বাবা ছিলেন বৃদ্ধ শেতাঙ্গ/ আর মা ছিলেন ঘোরতর কালো / যদি কখনো বাবাকে অভিশাপ দিয়ে থাকি/ তবে তা ফিরিয়ে নেয়াই ভালো/ যদি আমার কালো বরণ মাকে অভিশাপ দিই/ আর তাঁর জন্য কামনা করি নরক/ অশুভ কামনার জন্য দুঃখিত আমি/ এখন চাইছি তাঁর ভালো কিছু হোক। / বিশাল সুরম্য বাড়িতে পিতার হয়েছে শরীরপাত/ আর ছোট্ট কুঁড়েঘরে দেহত্যাগ করেছিলেন মা/ বিস্মিত হয়ে ভাবি যদি আমার মৃত্যু হতো/ না আমি শেতাঙ্গ ছিলাম, কৃষ্ণকায়ও না?” ল্যাংস্টোন হিউজের পাশাপাশি হারলেমে বসবাসকারী একদল কবি কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার নিয়ে সরব ছিলেন। তবে হিউজকেই এদের মধ্যে সবচেয়ে সফলতম হিসেবে ধরা হয়। এরও পূর্বে কার্ল স্যান্ডসবার্গের লেখায় আমরা এ ধরনের ধারা দেখতে পাই। কোনো কোনো সমালোচকের মতে, হিউজ প্রথম জীবনে স্যান্ডসবার্গ ও হুইটম্যান দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। জ্যাজ পোয়েট্রির সূচনাকারী কবিদের একজন হিসেবেও তিনি প্রবল সমালোচিত। স্যান্ডসবার্গ অবশ্য সাদাকালো ছাপিয়ে সবার ঊর্ধ্বে রেখেছিলেন মানুষকে আর বর্ণবাদকে দেখিয়েছিলেন বৃদ্ধাঙ্গুলি। তাঁর ‘ঈরৎপষব’ কবিতায় সে দৃষ্টিভঙ্গিরই পরিচয় মেলে -“শেতাঙ্গ লোকটি একটি ক্ষুদ্র বৃত্ত এঁকে দিল বালির উপর আর / রেড ইন্ডিয়ান লোকটিকে বললো- ইন্ডিয়ানরা অতটুকু জানে/ অতঃপর একটি বৃহৎ বৃত্ত এঁকে ক্ষুদ্রটির পাশে, বললো- / শেতাঙ্গরা অতটুকু জানে।/ কঞ্চিটি হাতে নিয়ে রেড ইন্ডিয়ান বৃত্ত দুটির চারপাশ ঘিরে / আরেকটি বিস্তীর্ণ বৃত্ত এঁকে বললেন-/ শেতাঙ্গরা আর কৃষ্ণাঙ্গরা মিলে এইটুকুও জানে না।” বস্তুবাদী ও ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনায় মুখর ছিলেন হিউজ। তাঁর কবিতায় এই সত্য প্রতিভাত হয়েছিল যে, আধুনিকতার নিক্তিতে বস্তুবাদী ও ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থার যতটা উত্তরণ ঘটেছে, মূল্যবোধের নিক্তিতে ঘটেছে ততটা অবনমন। তাঁর “৫০-৫০” কবিতায় ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থাকে চরমভাবে কটাক্ষ করেছেনÑ “বলল রমণী, এই পৃথিবীতে আমি নিঃসঙ্গ একা/ একই শয্যায় পাইনি তো কারো দেখা / পাইনি কাউকে যে আমার হাতটি ধরে / সত্যিকারের ব্যাপার হলো, পাইনি তো কোনো নরে। / মুখ খুলে যুবক বললো সে কথা/ বিপত্তি হলো, তুমি কখনো খাটাওনি মাথা/ থাকতো যদি বুদ্ধি আর ব্যবহার করতে মন/ আমাকে তোমার কাছে পেতে সেই তো কখন/ বলল রমণী, তবে করণীয় কি, যুবা হে?/ অর্ধেক ভাগ দাও বিছানা ও বিত্তে, বললো সে।” ‘আটক’ কবিতায় রূপকের আশ্রয় নিয়ে ভোগবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আঙুল তুলেছেন হিউজ। কবিতায় তরুণ জেলের জালে একটি মৎস্যকন্যা ধরা পড়ে যার অর্ধেক নারী আর অর্ধেক মাছ। কবিতার শেষ ছত্রটি আমাদের চমৎকৃত করে- ‘‘যুবক মৎস্য শিকারি তাই/ পেয়েছে মৎস্যকন্যা/ যার অর্ধেক ছিল মাছ/ চালাতে জীবন/ অর্ধেক নারী ছিল/ করিতে রমণ।” ভোগবাদে মত্ত মানুষের মূল্যবোধের অবনমনের স্বরূপ বর্ণনা করতে গিয়ে ‘ঔঁংঃরপব’ কবিতায় লিখেছেন- “ঐবৎ নধহফধমব যরফবং ঃড়ি ভবংঃবৎরহম ংড়ৎবং/ ঞযধঃ ড়হপব ঢ়ৎৎযধঢ়ং বিৎব বুবং.” হিউজের গধফধস অহফ ঞযব জবহঃবফ গধহ, গড়ঃযবৎ ঃড় ংড়হ, ঘরমযঃ ঋঁহবৎধষ রহ ঐধৎষবস ইত্যাদি কবিতায় পুঁজিবাদী সমাজের প্রতি বুকের সবটুকু শ্লেষ ঢেলে দিয়েছেন। ‘ঘরমযঃ ঋঁহবৎধষ ওহ ঐধৎষবস’ কবিতায় আমরা দেখতে পাই, জনৈক দরিদ্র ব্যক্তির মৃত্যুর পর ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বকেয়া যথাসময়ে পরিশোধ না করায় তারা তার গাড়ি দুটি নিয়ে যায়। তবে তারা ঐ ব্যক্তির দাফনের জন্য এক টুকরো কাপড় দিয়েছিল। কয়েকজন বন্ধু এই আশায় ফুলের তোড়া দিতে এসেছিল যাতে তাদের প্রয়াণে দুয়েকটি ফুলের তোড়া ভাগ্যে জোটে। জনৈক পাদ্রী সমাধির অদূরে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিল পাঁচ ডলারের বিনিময়ে। পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত সম্পদের পিছু ছুটতে ছুটতেই আমরা হারিয়ে যাই জীবন থেকে। সম্পদের হাত বদল হয়। কেউ জয়ী হয়, কেউ পরাজিত। কিন্তু জীবন থেকে যে হারিয়ে যায় এসব তার কাছে অর্থহীন। ‘চবধপব’ কবিতায় হিউজের এ মনোভাবের পরিচয় মেলে- “ডব ঢ়ধংংবফ ঃযবরৎ মৎধাবং/ ঞযব ফবধফ সবহ ঃযবৎব/ডরহহবৎং ড়ৎ ষড়ংবৎং/উরফ হড়ঃ পধৎব/ ওহ ঃযব ফধৎশ/ ঞযবু পড়ঁষফ হড়ঃ ংবব/ ডযড় যধফ মধরহবফ ঃযব ারপঃড়ৎু.” ল্যাংস্টোন হিউজ একজন স্বপ্নবাজ কবি ছিলেন। সমাজ বাস্তবতার ঘাত-প্রতিঘাতে বিদীর্ণ হৃদয়ে বপন করেছিলেন অসংখ্য স্বপ্নের বীজ- একটি বৈষম্যবিহীন রাষ্ট্রের, একটি উদারমনা সমাজের যেখানে বর্ণবাদ, ভোগবাদ, পুঁজিবাদ আর যান্ত্রিক জীবনের কালোছায়া থাকবে না; থাকবে শুধু সাম্য আর মৈত্রীর মেলবন্ধন। ‘খবঃ অসবৎরপধ ইব অসবৎরপধ অমধরহ’ কবিতায় আমরা সে ধারাভাষ্য খুঁজে পাই। ‘ও উৎবধস অ ডড়ৎষফ’ কবিতায় তিনি লিখেছেন- “অ ড়িৎষফ ও ফৎবধস যিবৎব নষধপশ ড়ৎ যিরঃব/ ডযধঃবাবৎ ৎধপব ুড়ঁ নব/ ডরষষ ংযধৎব ঃযব নড়ঁহঃরবং ড়ভ ঃযব বধৎঃয/ অহফ বাবৎু সধহ রং ভৎবব.” একটি সমৃদ্ধশালী গণতন্ত্রের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন হিউজ। অর্থবহ গণতন্ত্রের উত্তরণে সমাধানও দিয়েছেন তাঁর ‘উবসড়পৎধপু’ কবিতায়- “উবসড়পৎধপু রিষষ হড়ঃ পড়সব/ ঞড়ফধু, ঞযরং ুবধৎ/ ঘড়ৎ বাবৎ/ ঞযৎড়ঁময পড়সঢ়ৎড়সরংব ধহফ ভবধৎ./ ঋৎববফড়স রং ধ ংঃৎড়হম ংববফ/ চষধহঃবফ রহ ধ মৎবধঃ হববফ.” ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধেও তিনি ছিলেন একজন উচ্চকিত সমালোচক। কিছুটা নাস্তিক্যবাদের প্রভাবও লক্ষ্য করা যায় কোনো কোনো কবিতায়। ‘স্বীকৃতি’ কবিতায় স্রষ্টার প্রতি আক্ষেপ করে তিনি লিখেছেন –“স্রষ্টা তাঁর সীমাহীন জ্ঞান হতে/ আমাকে করেনি জ্ঞানী/ তাই যখনি করি বোকামিপূর্ণ কাজ/ সেগুলো স্রষ্টাকে চমকে দেয় না একটুখানি।” তাঁর ‘এড়ফং’ কবিতায় মানুষের সৃষ্ট স্রষ্টাকে সমালোচনায় ব্যবচ্ছেদ করেছেন- “ঞযব রাড়ৎু এড়ফং/ অহফ ঃযব বনড়হু এড়ফং/ অহফ ঃযব এড়ফং ড়ভ ফরধসড়হফ-লধফব/ অহফ ঃযব ংরষষু ঢ়ঁঢ়ঢ়বঃ এড়ফং/ ঞযধঃ ঃযব ঢ়বড়ঢ়ষব ঃযবসংবষাবং /ঐধাব সধফব.” হারলেমের এ চারণ কবি রোমান্টিকতার জগতেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রেয়সীকে নিয়ে লেখা ‘অরডেলা’ কবিতায় তিনি লিখেন- “তোমাকে আমি তুলনা করতাম/ তারাহীন কোনো রাতের সাথে/ তোমার দ্যুতিময় চোখের কারণে পারিনি তা/ তোমাকে উপমিত করতাম কোনো স্বপ্নহীন ঘুমের সাথে / অথচ পারিনি তা তোমার গানের জন্যে।” ‘তোড়া’ কবিতায় আমরা হিউজের কবিমনের নান্দনিকতার পরিচয় পাই- “তোমার জানা যত গান/ নিয়ে আসো দ্রুত/ অন্ধকারের বাইরে/ আর সেগুলো তুষারের মতো ঝরে যাবার আগেই/ ছুড়ে দাও সূর্যের দিকে।” বঞ্চনা হিউজকে করেছিল সমৃদ্ধ, বৈষম্য করেছে অধিকার আদায়ে সোচ্চার, যা কিছু সুন্দর তাঁকে করেছে প্রেমিক। জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকা আখ্যান হতে তুলে আনা অভিজ্ঞতা ঢেলে দিয়েছেন সাহিত্যের বেলাভূমিতে। কবিতার পাশাপাশি উপন্যাস আর গদ্যেও তিনি খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। বিশ্ব সাহিত্যের আকাশে স্বমহিমায় জ্বলজ্বলে তারা হয়ে নিরন্তর আলো ছড়াবেন ল্যাংস্টোন হিউজ। ২২ মে এই মহান কবির ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী।
×