ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সুতির শাড়ি আরামের সঙ্গী

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৭ মে ২০১৬

সুতির শাড়ি আরামের সঙ্গী

বাজারে এখন অনেক ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। সিল্ক শাড়ি, জর্জেট শাড়ি, কাতান শাড়ি, জামদানি শাড়ি, টাঙ্গাইল শাড়িসহ নিত্যনতুন অনেক শাড়ি। নিত্যনতুন এই শাড়িগুলো নারীর পছন্দ বলেই বাজারে এইসব শাড়ির কদর প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। নারী শাড়ি পছন্দ করে ঠিকই, কিন্তু শাড়ির নতুন নতুন আবির্ভাব ঘটছে ডিজাইনারদের আধুনিক চিন্তার ফলে। শাড়িতে যখন আধুনিক ধ্যান-ধারণা লিপিবদ্ধ হয় তখন তা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে দোকানিরা পসরা সাজিয়ে বসে। দোকানগুলোতে দেখতে পাওয়া যায় বহু ধরনের শাড়িতে শোভা পাচ্ছে সেখানকার আলমারিগুলো। কয়েকদিন আগের একটি অভিজ্ঞতার কথা না বললে লেখাটা খানিক অসমাপ্ত থেকে যায়... ধানম-ি এলাকায় টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির-এর শো-রুমে গিয়ে নতুন ধরনের কোন শাড়ি চোখে পড়ল না। দোকানের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার অলস সময় কাটাচ্ছেন। শো-রুমটির এমন অবস্থা কেন তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের শো-রুমে নতুন শাড়ি আসবে বলে অপেক্ষা করছি। এখন গরম চরমে উঠেছে তাই সময়টা সুতি শাড়ির জন্য খুব উপযোগী। সুতি শাড়ি আসবে বলেই আমাদের অপেক্ষা চলছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই প্রচুর শাড়ি আসবে আর বেশিরভাগ শাড়ি হবে সুতি কাপড়ের।” এখানে সুতি কাপড় আসতে হয়ত একটু দেরিই হয়ে গেছে। তাই বলে কী ঢাকায় অবস্থিত অন্যান্য শো-রুমের মালিকেরা বসে আছে, তা জানার আগ্রহ বেড়ে গেল। এবার এলিফ্যান্ট রোড হয়ে নিউমার্কেটের দিকে কয়েকটি দোকানে গিয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। শাড়ির দোকানগুলোতে অসম্ভব রকমের ভিড়। দূর থেকে দেখে মনে হলো ঈদ কিংবা পুজোর কেনাকাটা শুরু হয়েছে। আসলে তা নয়। গরমে সুতি শাড়ির খোঁজেই ক্রেতাদের এমন আনাগোনা। কারণ সুতি শাড়ি সুন্দর আরামের সঙ্গী বলে জানালেন ইফফাত চৌধুরী বন্যা। অসম্ভব গরম মানেই তো বসে থাকা নয়। যে কোন কারণেই হোক মানুষকে ঘর থেকে বের হতে হয়। আর নারীদের তো কাজ থাকুক বা না থাকুক, শুধুমাত্র ঘোরার উদ্দেশ্যে হলেও তাদের ঘর থেকে বের হওয়া ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। ঘুরতে যাওয়া নারীদের কথা বাদ দিলে দেখা যাবে অফিসগামী নারীদের প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতেই হয়। এই সময় গরমে তাদের বেশিরভাই সুতি শাড়ি পরতে দেখা যায়। সার্বিক বিষয় যখন সামনে চলে আসে তখন সবকিছু উপেক্ষা করে ফ্যাশনের বিষয়টিও সামনে দাঁড়িয়ে যায় স্বমহিমায়। এখন দেখা যাক ফ্যাশন আর গরম মিলে সুতি শাড়ির কদর কেমন- মূলত গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই সুতি শাড়িতে আস্থা রাখেন নারীরা। এক্ষেত্রে যে তাদের ফ্যাশনে ঘাটতি হচ্ছে তেমনটি বলার জো নেই। কারণ সুতি শাড়িতে বাহারি ধরন ইতোমধ্যেই যুক্ত হয়েছে। বোমকাই ইন্ডিয়ান, অ্যালিগেন্ট এবং অ্যাডোরেবল প্রিন্ট, ইউনিক এবং অ্যাট্রাকটিভ প্রিন্ট, সিজলিং প্রিন্ট, ফ্যাসিনেটিং প্রিন্ট, ট্রপিক্যাল ফ্লোরাল প্রিন্ট, ফ্রেন্স রোজ প্রিন্ট, পপরোজ, ডোরিস এবং প্রুসিয়ান সুতি কাপড়গুলো সেই সাক্ষ্যই দেয়। সুতি শাড়ি এ দেশের ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের নাম। কখনও কখনও মিশ্র সুতি কাপড় শাড়ির গুণগত মান বাড়িয়ে দেয়। এক গবেষণায় দেখা যায় গোটা বিশ্বে বাংলাদেশী, ইন্ডিয়ান সুতি শাড়ির যথেষ্ট কদর রয়েছে। এর পেছনে মূল কারণ হলো এই শাড়ি শুধুমাত্র গরমে আরামদায়ক বলেই নয়, বরং স্টিপ সুতি শাড়ি, হ্যান্ডলুম সুতি শাড়ি পরলে নারীদের ‘বালকি’ [অধিক সৌন্দর্য] দেখায়। সুতি শাড়ির আরেকটি গুণ হচ্ছে- এর কাপড় আরামদায়ক, অধিক কোয়ালিটি সম্পন্ন। তাই তো এর নিউমারিউস রঙ আর সৃষ্টিশীল ধরনের কারণে নারীদের আকর্ষণীয় করে তোলে। সুতি শাড়ি বা কাপড়ের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছেÑ কাপড় ॥ ভিন্ন ধরনের কাপড়গুলোর মধ্যে, ক্রেপ, ভিসকোস, টিস্যু, দু-পিয়ান সিল্ক, জ্যাকুয়ার্ড, ভ্যালভেট, কটন সিল্ক, লিলেন, জুট কটন ইত্যাদি। কাজ ॥ সুতি কাপড়ে, এ্যামব্রয়ডারি, প্রিন্ট, হ্যান্ডলুম, ব্রাসো, প্লেইনসহ অনেক ধরনের কাজ করা থাকে। ধরন ॥ সুতি শাড়ি বিভিন্ন ধরনের হয়- প্যাঁচ ওয়াক, রেসাম এ্যামব্রয়ডারি, জরি, স্টোন, সিকুইন, কাটডানা, বিডস, ফ্লোরাল প্রিন্ট, এ্যাবস্ট্রাক্ট প্রিন্ট, বাঙালী হ্যান্ডলুম, জিওম্যাট্রিক প্রিন্ট-এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। বাজারে এই গরমে সুতি শাড়ির কদর যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনি এর ডিজাইনেও এসেছে ভিন্নতা। তাই সহজেই চোখে পড়ে ‘নেট এবং পারপেল সুপার নেট’, ‘অলিভ গ্রীল সুতি’ যা ‘পটলা বেনারশি’ সুতি শাড়িতেও নারীর সৌদর্য বাড়িয়ে দেয়। কোয়ায় পাওয়া যাবে ॥ সুতি শাড়ির জন্য আলাদা কোন মার্কেট নাই। তাই ঢাকা শহরে অবস্থিত যে কোন মার্কেটে সুতি শাড়ি পাওয়া যাবে। বিলাসবহুল মার্কেট থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর ক্রেতার জন্য সচারাচর যে মার্কেটগুলো আছে সেখানেও সুতি শাড়ি পাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা’র বাইরে বিভিন্ন জেলা শহর বা মফস্বল বাজারগুলোতেও সুতি শাড়ি পাওয়া যায়। দর-দাম ॥ সুতি শাড়ির দাম ক্রেতাভেদে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এই ধরনের শাড়ি যাতে সবাই ক্রয় করতে পারে সেভাবেই দামের তারতম্য রাখা হয়। ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০, ৬০০০, ৭০০০, ৮০০০ বা এর অধিক দামেরও সুতি শাড়ি পাওয়া যাবে। মডেল : হৃদি ও ফারহানা মিলি
×