ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

ঘুষ না দেয়ায় নিহত ছাত্রলীগ নেতার পরিবারকে হয়রানি

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২৭ মে ২০১৬

ঘুষ না দেয়ায় নিহত ছাত্রলীগ নেতার পরিবারকে হয়রানি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রকৃত আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশীট প্রদান, দাবিকৃত মোটা অংকের টাকা ঘুষ না দেয়ায় নিহত রাসেলের ছোটভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার, ওসি কর্তৃক মামলার বাদীকে (নিহতের মা) গ্রেফতারের হুমকিসহ পুরো পরিবারকে হয়রানির অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত ছাত্রলীগ নেতার মা নুরুননাহার বেগম। গৌরনদী প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে গিয়ে সন্তানহারা মা নুরুননাহার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নুরুননাহার বেগম লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমি পুলিশী হয়রানির শিকার এক সন্তানহারা ও অপর নিরপরাধ সন্তানের মা। এক বছর পূর্বে মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য দেয়া পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে আমার পুত্র ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীকে আগৈলঝাড়ার সেরাল গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মাস্টারের পুত্র সাগর সেরনিয়াবাত, গৌরনদীর উত্তর পালরদী গ্রামের আতিক মিয়া, বিল্বগ্রামের তনু তালুকদার ও তাদের সহযোগীরা টেমার গ্রামের সিরুর দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রাসেলকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তিনি (নিহতের মা) নুরুননাহার বেগম বাদী হয়ে রাসেলের ওপর হামলাকারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাগর সেরনিয়াবাত, মনির শিকদার, মাসুদ মীর, আতিক মিয়া, রুবেল, তনু তালুকদার, চঞ্চল শরীফ, সজিব সরদার, পলাশ মোল্লা, আমিন, রেজাউল সরদার, ইউসুফ, মামুন, মহসিন ও বিপ্লবের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়Ñ মামলা দায়েরের পর পুলিশ আজও প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেনি। থানা পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নাম বাদ দিয়ে সম্প্রতি সময়ে আদালতে চার্জশীট প্রদান করে। ফলে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রুবেল সরদার, চঞ্চল শরীফ, মহসিন, মাসুদ সেরনিয়াবাতসহ অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি (মামলার বাদী) আদালতে চার্জশীটের বিরুদ্ধে নারাজি দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা এখন তাকেসহ পরিবারের সকল সদস্যদের রাসেলের ন্যায় হত্যা করা হবে বলে হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও আসামিরা নিহত রাসেলের কলেজ পড়ুয়া বোনকে অপহরণের হুমকি দিয়ে আসছে। ফলে ওই কলেজছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়া হয়। নুরুননাহার আরও অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে থানা পুলিশ আমার ছোট ছেলে রাজ্জাককে অহেতুক গ্রেফতার করে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। তাদের দাবিকৃত ঘুষের টাকা না দেয়ায় রাজ্জাককে একটি মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। বিষয়টি থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলনের কাছে জানতে চাইলে সে (ওসি) ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে (নুরুননাহার) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ গ্রেফতারের হুমকি প্রদর্শন করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি (নুরুননাহার) থানার ওসির হয়রানি থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে নুরুননাহার বেগমের অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মনগড়া দাবি করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন বলেন, অভিযোগকারী নুরুননাহার ও তার ছেলেরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। ওই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইনে থানায় ২২টি মামলা রয়েছে।
×