ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে সেচ সঙ্কটের আশঙ্কা

খাল দখলের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২৭ মে ২০১৬

খাল দখলের হিড়িক

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ২৬ মে ॥ কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নে খাল দখলের হিড়িক চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রভাবশালীরা এলাকার সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত সরকারী খালে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে প্রথমে দখল করছেন এবং এরপর বানাচ্ছেন পুকুর। আর এভাবে পুকুরের মালিক হয়ে ওই জায়গার মালিক বনেও যাচ্ছেন রাতারাতি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সকলের জন্য উন্মুক্ত এ খালে অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণে বাধা দিয়ে অনেকেই হুমকি-ধমকির মধ্যে আছেন। প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সমাধান পাওয়া যায়নি। সরেজমিন দেখা যায়, পারুলিয়া ইউনিয়নের বড়-পারুলিয়া দক্ষিণপাড়া বটতলা থেকে সোনাডাঙ্গা ব্রিজ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ওই ইউনিয়ন পরিষদের নামে রেকর্ডীয় সরকারী খাল; যেটির সংযোগস্থল কুমার নদীর সঙ্গে এবং খালটিতে নিয়মিত জোয়ার-ভাটার পানি যাতায়াত করত। কিন্তু বছরখানেকের মধ্যে খালটির বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পুকুর নির্মাণ করার কারণে খালটি মৃত প্রায়। এলাকাবাসী জানান, কৃষিজমিতে সেচ-ব্যবস্থাসহ ওই এলাকার সকল প্রাণীর দৈনন্দিন পানির চাহিদা মেটানোর একমাত্র উৎস্য হলো ওই সরকারী খাল। এলাকার সেচ-মেশিন মালিক ইমারত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালীরা খালটির অধিকাংশ স্থানে বাঁধ দিয়ে পুকুর বানানোর ফলে এখন আর খাল নেই। স্থানীয় মোঃ দেলোয়ার শরীফ তৌহিদসহ কয়েক প্রভাবশালী ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য প্রবহমান খালের ওপর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণ করে গোটা খালটিই দখল করে নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য এলাকার ৬ জন সেচ-মেশিন মালিক গত ১২ মে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন; কিন্তু এখনও কোন সুফল তারা পাননি। এলাকার গরিব কৃষক মিজান শরীফ বলেন, পানির অভাবে ধান-পাট কিছুই হচ্ছে না, কৃষককুল চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কাশিয়ানীর ইউএনও মোঃ মুনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি খালটি ইউনিয়ন পরিষদের নামে রেকর্ডীয়। সেখানে কে বা কারা মৎস্য অধিদফতরের একটি প্রজেক্ট পেয়েছেন। তারপরও আমি এখনই এ্যাসিল্যান্ডকে পাঠাচ্ছি। জনস্বার্থে ব্যবহৃত সরকারী খালটি পুনরুদ্ধার করা হবে এবং দখলকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, স্থানীয় নানান চাপে সেখানে বড়োপিট না হলেও ৩-৪শ’ ফুট লম্বা একটি স্কিম দেয়া হয়েছে; কিন্তু সেটা যে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত সরকারী খালের ওপর করা হয়েছে, তা আমাদের জানা ছিল না। দুই-এক দিনের মধ্যেই ওই স্কিম বাতিল করে ওই খাল পুনরায় উন্মুক্ত করা হবে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×