ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার

ফাইনালে হায়দরাবাদ না গুজরাট ফয়সালা আজ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৭ মে ২০১৬

ফাইনালে হায়দরাবাদ না গুজরাট ফয়সালা আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গুজরাট লায়ন্স চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) নবাগত দল। এরপরও দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছে তারা প্রাথমিক পর্বে এবং শীর্ষ দল হিসেবেই উঠেছে শেষ চারে। কিন্তু হেরে গেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর কাছে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। আজ তাদের দ্বিতীয় সুযোগ ফাইনালে ওঠার। লড়তে হবে মুস্তাফিজুর রহমানের সানরাইজার্স হায়দরাবাদের। আগে দু’বারের মোকাবেলাতেই হায়দরাবাদের কাছে পাত্তাই পায়নি গুজরাট। দু’ম্যাচেই বাংলাদেশী পেস বিস্ময় মুস্তাফিজের ‘সেøায়ার’ আর ‘কাটারে’ বিপর্যস্ত হয়েছে তারা। সেই মুস্তাফিজ ‘জুজু’ আবার। হায়দরাবাদ এলিমিনেটর ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (কেকেআর) ২২ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ইতোমধ্যেই ফাইনালে ওঠা ব্যাঙ্গালুরুর প্রতিপক্ষ হতে পারবে হায়দরাবাদ? আরেকবার লড়াই হবে বিরাট কোহলি-মুস্তাফিজ? জানতে হলে আজ রাতে চোখ রাখতে হবে দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামের দিকে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটের। শুরুর দিকটা দারুণ ছিল গুজরাটের। একের পর এক চমক দেখাতে থাকা দলটি প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল হায়দরাবাদের কাছেই। সেই ম্যাচে মুস্তাফিজই যেন মূল প্রতিপক্ষ ছিল উড়তে থাকা গুজরাটের। গত মাসের ২১ এপ্রিল সেই মোকাবেলায় ১০ উইকেটের লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করে সুরেশ রায়নার দলটি। ভয়ঙ্কর মুস্তাফিজ ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়েই নিয়েছিলেন ১ উইকেট। ফিজের বোলিংয়ের কারণেই তেমন বড় সংগ্রহ পায়নি তারা। সেজন্যই হার দেখতে হয়েছিল। ব্যবধানটাও ছিল দারুণ অবমাননাকর। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার আগ পর্যন্ত কয়েকটি ম্যাচে হারতেও হয়েছে। কিন্তু কক্ষপথেই ছিল গুজরাট লায়ন্স। তবে ৬ মে ফিরতি ম্যাচে আবারও হায়দরাবাদের কাছেই নতি স্বীকার করে রায়নারা। এবার ৫ উইকেটে হারের ম্যাচে মাত্র ১২৬ রান তুলতে সক্ষম হয় গুজরাট। এবারও এত কম রানের জন্য দায়ী মুস্তাফিজই। এবার আরও ভয়ানক ছিলেন তিনি। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। এ দুটি পরাজয়ই মূলত গুজরাটকে পিছিয়ে দিয়েছিল অনেকখানি। কিন্তু শেষের দিকটা আবারও দারুণ কেটেছে দলটির। অধিনায়ক রায়না ব্যাট হাতে এবং মাঠে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। তবে দলগত প্রচেষ্টাতেই এতদূর এসেছে দলটি। শেষ পর্যন্ত সবার চেয়ে বেশি ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান অর্জন করে শেষ চারে পা রাখে গুজরাট। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরুর কাছে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর ৪ উইকেটে পরাজিত হয়ে ফাইনালে উঠতে পারেনি। কিন্তু সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ডোয়াইন স্মিথ, অস্ট্রেলিয়ার এ্যারন ফিঞ্চ, নিউজিল্যান্ডের বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম এবং দিনেশ কার্তিকরা একসঙ্গে জ্বলে উঠতে পারেননি কোন ম্যাচে। আজ তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারলে ফাইনালে ওঠার পথটা কঠিন হবে না। আর বোলিংয়েও এখন এগিয়ে গেছে দলটি। বিশেষ করে ধাওয়াল কুলকার্নি প্রথম কোয়ালিফায়ারে অবিশ্বাস্য বোলিং করেছেন। ১৩ ম্যাচে ১৮ উইকেট এ মিডিয়াম পেসারের। এছাড়া প্রবীন কুমার, ডোয়াইন ব্রাভো, জেমস ফকনার ও ডেল স্টেইনরা আছেন লাইনআপে। আর স্পিন বিভাগ পুরো আসরেই দারুণভাবে সামলেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। মুস্তাফিজ হয় তো তেমন ভাগ্যবান বোলার নয়। পুরো আসরে দারুণ বোলিং করেছেন এ ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি তরুণ। কিন্তু খুব বেশি উইকেট পাননি। কিন্তু হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারসহ দলের অন্য বোলাররাও দাবি জানিয়েছেন মুস্তাফিজের তৈরি করা চাপই অন্যদের উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। কথাটার সত্যতা মাঠেই দেখা গেছে। ডেথ ওভারগুলোতেও দারুণ মিতব্যয়িতা দেখিয়েছেন মুস্তাফিজ। প্রতিপক্ষ শিবিরে যে ব্যাটসম্যানই থাকুন না কেন ফিজের বলে রান নেয়াটাই কঠিন। তবে বাজে কয়েকটা দিনও গেছে তার। অনেক রান দিয়েছেন। টানা খেলার চাপকেই এজন্য অনেকে দায়ী করেছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন গুজরাট তখনই যেন আরও কিপটে হয়ে যান তিনি। আগের দুই মোকাবেলায় সেটাই দেখা গেছে। এবারও গুজরাটের সবাই মুস্তাফিজের দিকেই তাকিয়ে থাকবে। সঙ্গে আছেন ২১ উইকেট নিয়ে শীর্ষে থাকা পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও বারিন্দার স্রান। আর ব্যাটিংয়ে দারুণ ফর্মে থাকা অধিনায়ক ওয়ার্নার ছাড়াও আছেন যুবরাজ সিং ও শিখর ধ্ওায়ান। লড়াইটা বেশ জমজমাটই হবে। কারণ ফাইনালে ওঠার ম্যাচ। সুযোগটা ছাড়তে চাইবে না কেউ!
×