ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী

সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ও ভাতা বাড়ানো হবে

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৭ মে ২০১৬

সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ও ভাতা বাড়ানো হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দরিদ্র-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের দেখভাল করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি আরও বলেন, এ লক্ষ্যে আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ও তাদের ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর বাজেটে প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম। ১৪টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ অর্থ বরাদ্দের দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে প্রতিবন্ধী ফোরাম নেতৃবৃন্দের এক প্রাক-বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে ফোরামের দাবির প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিবন্ধীরা একটি বিশেষ শ্রেণীতে পড়ে। একজন দরিদ্রকে সহায়তা আর একজন প্রতিবন্ধীকে সহায়তা করা এক লেভেলের নয়। প্রতিবন্ধীদের সহায়তা একটু ব্যয়বহুল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে কারণে আমরা যতটুকু পারি সেটাই করি। এবারও তা করা হবে। এবারও সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীদের এখন বহুতল ভবনে ওঠার ব্যবস্থা করা হলেও যানবাহনে চলাফেরার কোন ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন দেশে এটা আছে। ঢাকা শহরে প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের জন্য কোন পাবলিক টয়লেট নেই। এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগ নিতে পারে। প্রতিবন্ধীদের সমস্যার বিষয়ে সরকার অবগত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি অটিজম ও নিউরো ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের জন্য সাভারে একটি বিশেষ খেলার মাঠও করা হবে। প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের পক্ষে দাবিসমূহ অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। সংসদ সদস্য সেগুফতা ইয়াসমিন, সংগঠনের সভাপতি মোঃ রজব আলী খান নজিব, মহাসচিব সেলিনা আখতারসহ ফোরামের আওতাভুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ওই সময় উপস্থিত ছিলেন। মতিন খসরু বলেন, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ চাই, যাতে তারা নিজের পায়ে স্বাবলম্বী হিসেবে দাঁড়াতে পারে। আমরা কারও ভিক্ষাবৃত্তি বা করুণার ওপর বাঁচতে চাই না। সম্মান ও সম মর্যাদার ভিত্তিতে বাঁচতে চাই। প্রস্তাবনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু, স্থানীয় সরকার, যুব ও ক্রীড়া, গণপূর্ত, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, অর্থ মন্ত্রণালয় আইসিটি, সংস্কৃতি, পরিকল্পনা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থানসহ মোট ১৪টি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ৩ হাজার ১৪৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানানো হয়। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন বলেন, প্রতিবন্ধীরা যে মানুষ, তাদের কাজ ও সব কিছুকে নিয়েই যে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে- সেটা কয়েক বছর আগেও আমরা জানতাম না। নিজের পরিবারে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী। চার্টার্ড এ্যাকাউটেন্ট, বর্তমানে সিএ ইনস্টিটিউটের কনসালটেন্ট। সে সব জায়গায় যেতে চায়। সব মিটিংয়ে সব কিছুতে। কিন্তু প্রায় প্রতিটা জায়গার পরিবেশ প্রতিবন্ধীবান্ধব না। দুইজন মানুষ টেনে উঠায়, নাহলে চারজন মানুষ টেনে চেয়ারসহ উঠায়। শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত প্রতিবন্ধীদের এই অবস্থা হলে অন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কী অবস্থা হতে পারে- সেই দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, তাদের চলাফেরা সহজ করে দিতে হবে। তাদের চলাফেরা খুবই কঠিন।
×