ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম

প্রসঙ্গ ইসলাম ॥ তকদির ও তদবির

প্রকাশিত: ০৫:০০, ২৭ মে ২০১৬

প্রসঙ্গ ইসলাম ॥ তকদির ও তদবির

তকদিরে বিশ্বাস করা ইমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সাধারণত তকদির বলতে আমরা বুঝি নিয়তি, অদৃষ্ট, বিধিলিপি, ভাগ্যের লিখন, কপাল, বরাত, কিস্্মত ইত্যাদি। কথায় আছে, ভাগ্যের লিখন কে খ-াতে পারে? ইংরেজীতেও একটি কথা আছে, হোয়াট ইজ লটেড ক্যান নট বি ব্লটেড! তকদির শব্দের শব্দমূল হচ্ছে কদর। কদর বা কাদ্্রুন শব্দের অর্থ হচ্ছে পরিমাণ নির্ধারণ, পরিমাপ, পরিমিতি, মূল্যায়ন, নির্দিষ্ট সীমা, মূল্য নিরূপণ, অদৃষ্ট, নিয়তি, ভাগ্য ইত্যাদি। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি : সার্বভৌমত্বের তাঁর কোন শরিক নেই। তিনি তাবত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করেছেন যথাযথ অনুপাতে। (সূরা ফুরকান : আয়াত ২), তুমি তোমার মহান রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, যিনি সৃষ্টি করেন ও সুঠাম করেন এবং যিনি পরিমিত বিকাশ সাধন করে ও পথনির্দেশ করেন। (সূরা আ’লা : আয়াত ১-৩)। এসব আয়াতেকারিমা থেকে এটা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, সৃষ্টি জগতের মহান স্রষ্টা আল্লাহ জাল্লা শানুহু তাবত কিছুর প্রত্যেকটিকে এক নির্ধারিত পরিমাপে সৃষ্টি করেছেন এবং যে পরিকল্পনাধীনে ও উদ্দেশ্যে যা সৃষ্টি করেছেন তার মধ্যে সেই অনুযায়ী স্বভাবগুণ ও বৈশিষ্ট্যও দান করেছেন এবং নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আল্লাহ জাল্লা শানুহু ইরশাদ করেন : নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (কাদার)। (সূরা কামার : আয়াত ৪৯)। আর সূর্য পরিক্রম করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে, এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ (তকদির) এবং চন্দ্রের জন্য আমি নির্দিষ্ট করেছি (কাদ্্দারনা) বিভিন্ন মন্যিল (চন্দ্রকলার হ্রাস-বৃদ্ধি দ্বারা নিরূপিত ও সীমাবদ্ধকাল তথা তিথি)। অবশেষে তা শুষ্ক বাঁকা পুরনো খেজুর ডালের আকার ধারণ করে। সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া ও রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করে। (সূরা ইয়াসিন : আয়াত ৩৮-৪০)। আল্লা জাল্লা শানুহুর নির্ধারিত নিয়মেই খাদ্যশস্যাদি, ফল-মূল এবং অন্যান্য জিনিস উৎপন্ন হয়- এটাও তকদিরের অন্তর্গত। এ ছাড়াও পৃথিবীতে যে বৃষ্টিপাত হয় এবং রাত আসে দিন যায়, দিন আসে রাত যায়- এ সবই আল্লাহর নির্দিষ্ট নিয়মেই হয়। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে- আল্লাহই নির্ধারণ করেন দিন ও রাতের পরিমাণ। (সূরা মুয্্যাম্মিল, আয়াত-২০)। আল্লাহ শানুহু ইরশাদ করেন : আর এই যে পৃথিবী তাকে আমি বিস্তৃত করেছি, তাতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে প্রতিটা জিনিস উদ্্গত করেছি সুপরিমিতভাবে এবং তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্য। আমারই নিকট আছে প্রত্যেক বস্তুর ভা-ার এবং আমি তা পরিজ্ঞাত পরিমাণেই (বি কাদারিম মা’লুমি)। সরবরাহ করে থাকি। (সূরা হিজর : আয়াত ১৯-২১), এবং আমি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করি পরিমিতভাবে (বি কাদ্্রিন) অতঃপর আমি তা মাটিতে সংরক্ষণ করি, আমি তা অপসারিত করতেও সক্ষম। অতঃপর আমি তা দ্বারা তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙ্গুরের বাগিচা সৃষ্টি করি, এতে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর ফল, আর তা থেকে তোমরা আহার করে থাক। (সূরা মু’মিনূন : আয়াত ১৮-১৯)। সূরা যুখরুফের ১১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে : এবং যিনি (আল্লাহ) আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন পরিমিতভাবে (বি কাদ্রিন)। অতঃপর আমি (আল্লাহ্্) তা দিয়ে সঞ্জীবিত করি নির্জীব জনপদকে। মানুষ আল্লাহ্্র সেরা সৃষ্টি। আল্লাহ্্ জাল্লা শানুহু তাবত সৃষ্টির মতো মানুষেরও তকদির নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কুরআন মজীদে মানুষের সৃষ্টি এবং বিকাশ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : তিনি (আল্লাহ) তাকে (মানুষকে) কোন্ বস্তু হতে সৃষ্টি করেছেন? শুক্রবিন্দু (নুত্্ফা) হতে। তিনি তাকে সৃষ্টি করেন, তার পর তার পরিমিত বিকাশ সাধন করেন। (খালাকাহু ফাকদ্্ দারাহু)। (সূরা আবাসা : আয়াত ১৮-১৯)। কুরআন মজীদে উল্লিখিত কাদর বা তকদির বিষয়ক আয়াতে কারিমাসমূহ পুঙ্খানুুপুঙ্খ পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তকদির হচ্ছে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর বিশ্বজনীন নিয়ম-নীতি যা আল্লাহ জাল্লা শানুহুর বিশাল কায়েনাতের জন্য, সৃষ্টি জগতের তাবত কিছুর জন্য, আল্লাহর সেরা সৃষ্টি মানুষের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। আল্লাহর এই নিয়ম-নীতি ও ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকরণ অধীনে বিশ্ব জগত পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে আসছে। তকদিরের সঙ্গে কাদর ও কাদা (ফারসী উচ্চারণ কাযা)-এর সংশ্লিষ্টতা নিবিড়। তকদিরের শব্দ মূল কাদরের অর্থের সঙ্গে কাদা শব্দের অর্থেরও অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মূলত কাদা হচ্ছে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর সৃষ্টি জগত সংক্রান্ত বিধি-ব্যবস্থা; যাকে নিয়তি, ভাগ্য, অদৃষ্ট ইত্যাদিও বলা যেতে পারে। কাদার অর্থ সিদ্ধান্ত, হুকুম, মীমাংসা বা ফয়সালা ইত্যাদিও হতে পারে। কুরআন মজীদে কাদা শব্দটি বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : আর যখন তিনি (আল্লাহ) কোন কিছু করার সিদ্ধান্ত (কাদা) গ্রহণ করেন তখন সে জন্য শুধু বলেন, হও (কুন) আর তা হয়ে যায় (ফাইয়াকুন)। (সূরা বাকারা : আয়াত ১১৭)। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম বাপ ছাড়াই জন্মগ্রহণ যে করেন তা সর্বজনবিদিত এবং এটা আল্লাহ জাল্লা শানুহুর কুদরতের এক মহারহস্য। হযরত আদম আলাইহিস সালামও বিনা মা-বাপেই সৃষ্টি হন আর তাঁর বাম পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে উদ্ভব ঘটানো হয় মা হাওয়া আলায়হাস সালামকে। এ সবই আল্লাহর বিধি ব্যবস্থা। কুরআন মজীদে হযরত মরিয়ম আলায়হাস সালাম কুমারী অবস্থাতেই সন্তানসম্ভবা হচ্ছেন টের পেয়ে যেসব কথা বলেছিলেন তার বিস্তর বিবরণ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : যে (মরিয়ম) বলল : হে আমার রব্্ আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি, আমার সন্তান হবে কিভাবে? তিনি (আল্লাহ) বললেন : এভাবেই, আল্লাহ যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কিছু স্থির (কাদা) করেন তখন বলেন, হও (কুন) আর তা হয়ে যায় (ফাইয়াকুন)। (সূরা আল-ইমরান: আয়াত ৪৭)। কুরআন মজীদে জীবন-মরণ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : তিনিই (আল্লাহ) জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং যখন তিনি কোন কিছুর সিদ্ধান্ত (কাদা) গ্রহণ করে থাকেন বলেন হও (কুন) আর তা হয়ে যায় (ফাইয়াকুন)। (সূরা মু’মিন : আয়াত ৬৮)। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেনÑ এই চেতনা লালন করা এবং তার বিধি ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি। কোন মঙ্গলজনক বা কল্যাণকর কিছু ঘটলে আল্লাহর উদ্দেশে শোকর বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে, আর অমঙ্গলজনক কিছু ঘটলে তওবা-ইসতিগফার করতে হবে এবং ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এই সঙ্গে আল্লাহ জাল্লা শানহুর রিযামন্দি (সন্তুষ্ট) ও নৈকট্য (কুরবত) পাওয়ার ইচ্ছে প্রবল করতে হবে এবং তদবির ও আমল (কর্ম) করে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে রিদা বিল কাদা অর্থাৎ আল্লাহর বিধি ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্য দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জন করা যায়। নৈরাশ্যের বেদনাকে মুছে ফেলে আশার আলো জ্বালাতে হবে। তকদিরের সঙ্গে তদবিরের কোন সংঘাত নেই। তদবিরের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস রেখে কাজ করে যেতে হবে। কার্য সম্পাদনের জন্য, সুফল ও কল্যাণ লাভের জন্য উপায়-উপকরণ ইত্যাদি অবলম্বনের মধ্যেই তদবিরের মর্ম নিহিত রয়েছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : সে (মানুষ) ভাল যা উপার্জন করে তা তারই এবং সে মন্দ যা উপার্জন করে সেটাও তারই। (সূরা বাকারা : আয়াত ২৮৬), প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের দায়ে আবদ্ধ। (সূরা মুদ্দাছ্ছির : আয়াত ৩৮)। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না ওরা নিজ অবস্থা নিজে পরিবর্তন করে। (সূরা রা’দ : আয়াত ১১)। আল্লাহ জাল্লা শানুহু বিশ্ব জগত সৃষ্টি করেছেন তাঁরই সৃষ্ট ফিত্্রাত বা প্রকৃতি তথা স্বভাব অনুযায়ী, একেই ইংরেজীতে বলা হয় ন্যাচার। সব মানুষকে আল্লাহ জাল্লা শানুহু সৃষ্টি করেছেন নিষ্পাপ এবং নিষ্কলুষ করে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে : তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজকে দীনে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর ফিত্্রতের অনুসরণ কর, যে ফিত্্রতের ওপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দীন (আল্লাহর দেয়া পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থাÑইসলাম)। সূরা রূম : আয়াত ৩০)। প্রত্যেক নবজাতক যে ভূমিষ্ঠ হয় ফিত্্রতের ওপর এ সম্পর্কে বেশ কয়েকখানি হাদিস রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : প্রতিটি নবজাতক জন্মগ্রহণ করে ফিত্্রতের ওপর। এরপর তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী, নাসারা এবং মুশরিক বানায়। (বুখারী শরীফ, তিরমিযী শরীফ)। মূলত কাদা ওয়াল কাদর তথা তকদির লওহে মাহ্্ফুজে লিপিবদ্ধ রয়েছে। সেখানে বিস্তারিত বিবরণ লেখা রয়েছে এবং এটাও লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, তাঁর (আল্লাহর) অনুকম্পা তাঁর ত্রোধের চেয়ে অগ্রবর্তী। (বুখারী শরীফ)। কুরান মজীদে ইরশাদ হয়েছে : ফাল্লাহু খায়রুন হাফিজাও ওয়া হুয়া আরহামুর রাহিমীনÑ আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সূরা ইউসুফ : আয়াত ৬৪)। আল্লাহ জাল্লা শানুহু মানুষকে ভাল-মন্দ, আলো-অন্ধকার, শুভ-অশুভ, গোনাহ্্-সওয়াব ইত্যাদির বিচার ক্ষমতা দান করেছেন এবং অসৎ পথ থেকে ফিরে এসে সৎ পথে চলবার নির্দেশ দিয়েছেন, পথের দিশা দিয়েছেন, দিশারী দিয়েছেন। মানুষ এই আল্লাহ্ প্রদত্ত সুযোগ ও ক্ষমতাকে অপব্যবহার করলে বিপদে পড়বে এবং আখিরাতে শাস্তিভোগ করবে, এটাই স্বাভাবিক। আল্লাহ মানুষকে চিন্তা করার, কর্ম করার শক্তি ও স্বাধীনতা দিয়েছেন। এর অর্থ এই নয় যে, মানুষ স্বৈরাচার হয়ে যা ইচ্ছে তাই করবে, অপকর্ম করবে, ধ্বংসের পথে নিজেকে ঠেলে দেবে, অশান্তি সৃষ্টি করবে। আল্লাহ জাল্লা শানুহু নির্দেশ করেছেন : পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি কর না। (সূরা বাকারা : আয়াত ১১)। কুরআন মজীদে আরও ইরশাদ হয়েছে : যারা সৎ পথ অবলম্বন করবে তারা তো নিজেদের মঙ্গলের জন্যই সৎ পথ অবলম্বন করবে এবং যারা পথভ্রষ্ট হবে তারা তো পথভ্রষ্ট হবে ধ্বংসের জন্য এবং কেউ অন্য কারও ভার বহন করবে না। (সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত ১৫)। ইসলামে যে সমস্ত বিষয়ের ওপর ইমান আনয়ন অপরিহার্য করা হয়েছে তার মধ্যে তকদিরও রয়েছে। তকদির যে আল্লাহর তরফ হতে নির্র্ধারিত এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে। মানুষ তকদির রদ করতে পারে আল্লাহর মহান দরবারে যথাযথ দোয়া করার মাধ্যমে। হযরত সালমান রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, হযরত রসূলুল্লাহ্্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তকদির রদ করতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (তিরমিযী শরীফ)। হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহ তায়ালা আনহু বলেন : একবার আমরা তকদির সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক করছিলাম, এমন সময় হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার কাছে আগমন করলেন। তিনি ভীষণ রেগে গেলেন, তাঁর চেহারা মুবারক এমন লাল হয়ে গেল যে, তাঁর দুই গালে যেন বেদনার নিংড়ানো রস মেখে দেয়া হয়েছে। তিনি বললেন : এ বিষয়েই কি তোমরা নির্দেশিত হয়েছ? আর আমি কি এ নিয়েই তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি? তোমাদের পূর্ববর্তীরা যখন এ বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়েছে তখনই তারা ধ্বংস হয়েছে। আমি তোমাদের কঠোরভাবে বলছি, তোমরা এ নিয়ে আর তর্কাতর্কি করবে না। (তিরমিযী শরীফ)। লেখক : পীর সাহেব দ্বারিয়াপুর শরীফ, উপদেষ্টা ইনস্টিটিউট অব হযরত মুহম্মদ (সা) সাবেক পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
×