ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজীবন নজরুলসঙ্গীত কণ্ঠে ধারণ করতে চাই ॥ সুস্মিতা আনিস

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৬ মে ২০১৬

আজীবন নজরুলসঙ্গীত কণ্ঠে ধারণ করতে চাই ॥ সুস্মিতা আনিস

সাজু আহমেদ ॥ মানুষের মুখের কথাও যে গানের মতো লাগে তা ফুপির সঙ্গে না থাকলে বুঝতাম না। এত মিষ্টভাষীর মানুষ এ জামানায় খুঁজে পাওয়া সত্যিই কষ্টকর। তার সান্নিধ্যে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। কথাগুলো বলছিলেন বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতশিল্পী সুস্মিতা আনিস। বাংলাদেশের প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগম সম্পর্কে তার ফুপু হন। তার মুখে নজরুলসঙ্গীত নানা ইতিকথা শুনে ও শিখে বড় হয়েছেন সুম্মিতা। বলা যায় সঙ্গীতের হাতে খড়ি তার হাতেই। লেখা পড়ার তাগিদে কিছুদিন দেশের বাইরে থাকলেও ফিরে এসে আবার সঙ্গীতেই পথচলা। আবারও ফুপুর সান্নিধ্য এবং ধীরে ধীরে নজরুলসঙ্গীত নিয়ে বেড়ে ওঠা। সুস্মিতা জানান, একটা সময় ছিল দিন রাত পার হয়ে গেছে নজরুলের একেকটা গান কণ্ঠে তুলে নিতে। ফুপুকে দেখে মনে হতো কত সহজের গেয়ে ফেলছেন গানগুলো। অথচ যখন নিজে সঠিকভাবে তুলতে যেতাম তখন বোঝা যেত গানটা কতটা সাধনার। একদিন দুই দিনে যে শিল্পী হওয়া যায় না তা নিজঘর থেকেই বুঝতে পেরেছি। যে কারণে কখনই গানকে সহজলভ্য ভাবিনি। আজ অবধি সাধনা অব্যাহত রয়েছে আমার। কি প্রাপ্তি কি ফলাফল কোন কিছুই মুখ্য মনে হয়নি আমার। যখনই এ্যালবামের কাজ করেছি প্রতি গানের ভোকাল দেয়ার আগে যতদিন ফুপুকে পেয়েছি তার ইয়েস নিয়ে তবেই ভোকাল দিয়েছি। চেষ্টা করেছি শুদ্ধ সুরে ও স্বরে নজরুলের গান গাওয়ার। আমার চেষ্টা বৃথা যায়নি। সব কষ্ট ভুলে গেছি যখন শ্রোতা ও বোদ্ধারা আমার গানের প্রশংসা করেছেন। বর্তমান সময়ে অনেক ব্যস্ততায় দিন কাটালেও কখনই মনে হয়নি গান থেকে দূরে সরে যাই। প্রতিদিনই গানের জন্য সময় বের করে আনি। আমার আত্মার সঙ্গে মিশে আছে গান। এ থেকে আলাদা হওয়া অসম্ভব। তিনি বলেন, নজরুলের গান যখনই গাই তখনই মনে হয় একটা মানুষের পক্ষে কিভাবে এমন লেখনী লেখা সম্ভব। অতিমানবীয় না হলে তো সম্ভব নয়। আমাদের জীবনের এমন কোন অধ্যায় নেই যেখানে এই সাম্যবাদের কবি বিচরণ করেননি। আর এসব ভাবলেই প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত হই। সুস্মিতা আনিস বলেন, এবারেও নজরুল জন্মজয়ন্তীতে দেশে ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বেশকিছু অনুষ্ঠান ও টিভি চ্যানেলে গান করছি। আজ পশ্চিম বঙ্গের রূপসী বাংলা চ্যানেলে সরাসরি গানের অনুষ্ঠানে থাকছি নজরুল বিভিন্ন আঙ্গিকের গান নিয়ে। কাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত রবীন্দ্রসরোবর অনুষ্ঠানে গান গাইব। ২৮ মে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থান চুরুলিয়াতে নজরুল জন্মোৎসবে গান করছি। এসব অনুষ্ঠানে যতই গান করি ততবারই অন্যরকম ভাল লাগে কাজ করে। কারণ নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে আসি। আর ভালবাসার টান না থাকলে এ আমন্ত্রণ তো পেতাম না। এ ভালবাসা নিয়ে আজীবন নজরুল সঙ্গীত নিজ কণ্ঠে ধারণ করে যেতে চাই।
×