ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডো-বেনজামাকে পাওয়ার আশা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের

তিন বছরের জন্য ওল্ডট্রাফোর্ডে মরিনহো

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৬ মে ২০১৬

তিন বছরের জন্য ওল্ডট্রাফোর্ডে মরিনহো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লুইস ভ্যান গাল বরখাস্ত হয়েছেন সোমবার। ওল্ডট্রাফোর্ড ছাড়া দু’দিন অতিবাহিত হয়েছে ডাচ কোচের। সঙ্গত কারণেই জোশে মরিনহোর সঙ্গে নতুন চুক্তি কবে হচ্ছে সেদিকে দৃষ্টি গোটা ফুটবল বিশ্বের। কিন্তু দু’দিনেও চুক্তি না হওয়ায় অনেকেই সন্দিহান, আদতে কি মরিনহো ওল্ডট্রাফোর্ডে আসছেন! কিন্তু এমন চিন্তার কোন কারণই নেই বলে মনে করছেন মরিনহোর এজেন্ট জর্জ মেন্ডেস। এই সপ্তাহের মধ্যেই ম্যানইউর সঙ্গে মরিনহোর চুক্তি হতে যাচ্ছ বলে জানিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে স্পেশাল ওয়ানের এজেন্ট আলোচনা করেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান এড উডওয়ার্ডের সঙ্গে। লন্ডনে হওয়া বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মরিনহোর সঙ্গে নাকি তিন বছরের চুক্তি হবে রেড ডেভিলসদের। প্রতি মৌসুমে ১৯ মিলিয়ন ইউরো পারিশ্রমিকে এই চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ইতোমধ্যে খবর রটেছে, নিজের একাধিক পছন্দের ফুটবলার নিয়ে ইউনাইটেডে আসছেন মরিনহো। সেই তালিকায় আছে ইব্রাহিমোভিচ, হিগুয়াইনদের নাম। এবার শোনা যাচ্ছে এই তালিকায় থাকতে পারেন রিয়াল মাদ্রিদের দুই সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও করিম বেনজামা। মরিনহোর স্বদেশী সি আর সেভেন। রিয়াল মাদ্রিদে দু’জন একসঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে ম্যানইউ ছেড়ে রিয়ালে নাম লেখান রোনাল্ডো। ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে তাকে বিক্রি করেছিল ইংলিশ ক্লাবটি। সাত বছর পর সেই ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে পারবে বলে জানিয়েছে এক এজেন্ট। ইংলিশ সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মরিনহোর পছন্দের তালিকায় আছেন রোনাল্ডো ছাড়াও বেনজামা। ইউনাইটেডের দল বদলের দায়িত্বে থাকা উডওয়ার্ডকে মরিনহো ইতোমধ্যে একজন নতুন সেন্টার ব্যাক, রাইট মিডফিল্ডার, সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার ও সেন্টার ফরোয়ার্ড কেনার পরামর্শ দিয়েছেন। কোচ হিসেবে ব্যাপক সুনাম মরিনহোর। বর্তমান বিশ্ব ফুটবলেরই অন্যতম সেরা কোচ তিনি। তার নামের পাশে সেঁটে গেছে স্পেশাল ওয়ানের তকমা। কিন্তু পর্তুগীজ এই কোচ তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দুঃসময় অতিবাহিত করছেন সাম্প্রতিক সময়ে। ম্যানইউ’র হয়ে এবার সেই দুঃসময় ঘোচানোর মিশন ৫৩ বছর বয়সী এই তারকা কোচের। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় দফায় চেলসির কোচ হিসেবে আসার পর সাফল্যে ভাসান স্ট্যামফোর্ড ব্র্রিজের দলটিকে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপাও জিতিয়েছেন। কিন্তু সদ্য শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ মৌসুমে যেন আকাশ থেকে পতন হয় ব্লুজদের। হারতে হারতে রীতিমতো দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তাদের। অব্যাহত ব্যর্থতার কারণে লীগের মাঝপথেই মরিনহোকে ছাঁটাই করে ব্লুজরা। সেই থেকে বেকার পর্তুগীজ কোচ। ম্যানইউ’র হয়ে এবার বেকারত্ব ঘোচাতে যাচ্ছে তিনি। ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চেলসির কোচের দায়িত্বে দারুণ সাফল্য পেয়েছিলেন মরিনহো। লন্ডনের ক্লাবটিকে জিতিয়েছিলেন দুটি ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ও একটি এফএ কাপের শিরোপা। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব নিয়েও চেলসিকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন। তার অধীনে ২০১৫ সালে পঞ্চমবারের মতো প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিতেছিল ব্লুজরা। প্রথমবার দায়িত্ব নেয়ার আগে দীর্ঘদিন লীগ শিরোপা বঞ্চিত ছিল চেলসি। ২০০৪-০৫ মৌসুমে ৫০ বছর পর চেলসি সমর্থকদের শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসিয়েছিলেন স্পেশাল ওয়ান। পরের মৌসুমেও প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা গিয়েছিল স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে। ২০০৬-০৭ মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগে না পারলেও চেলসিকে লীগ কাপ ও এফএ কাপের শিরোপা জিতিয়েছিলেন। মরিনহো মানেই শিরোপা। পরিসংখ্যানও তাই বলে। কোচ হিসেবে স্বদেশী ক্লাব এফসি পোর্তোর হয়ে দুই মৌসুমে মরিনহো শিরোপা জিতেছিলেন ছোট বড় ছয়টি। চেলসির হয়ে তিন মৌসুমে ছয়টি। ইন্টার মিলানের হয়ে দুই মৌসুমে পাঁচটি। এর মধ্যে পোর্তো ও ইন্টার মিলানের হয়ে জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা। চেলসির হয়ে টানা দুটি লীগ শিরোপা। এবার ম্যানইউ মিশনে কি করেন সেটাই দেখার।
×