ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বরাদ্দ বাড়ছে ‘ফ্লপ’ পিপিপি খাতে

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৬ মে ২০১৬

বরাদ্দ বাড়ছে ‘ফ্লপ’ পিপিপি খাতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারি (পিপিপি) খাতে বেশি অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি প্রকল্পের সংখ্যাও বাড়ছে। চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। এটা আবার তিন হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে ‘নব উদ্যোগ বিনিয়োগ প্রয়াস’ নামে একটি পিপিপি উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বরাদ্দ রাখা হয় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু বেসরকারী খাতের আগ্রহ না থাকায় বরাদ্দের পুরো অর্থ খরচ হয়নি। তাই ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের পর থেকেই পিপিপি স্রেফ কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। তারপরও আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকারী-বেসরকারী অংশীদারি (পিপিপি) খাতকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে ছোট-বড় চুক্তি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে ভোগান্তি কমাতে জাতীয় সংসদে পিপিপি আইন পাস হয়েছে। এর ফলে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্প বাস্তবায়নে একমাত্র মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার ছাড়া তেমন সফলতা না থাকলেও ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হতে পারে। পিপিপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪৪টি প্রকল্পের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ তিনটি প্রকল্পের কাজ। সূত্র জানান, ২০০৯ সালে অর্থমন্ত্রী দেশে পিপিপির মাধ্যমে সমুদ্র ও বিমানবন্দর, সাধারণ ও বিশেষায়িত হাসপাতাল, সড়ক ও রেলপথ এবং বড় বড় সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। প্রতি বছর ৩৯ হাজার কোটি টাকা হিসাবে ৫ বছরে ১ লাখ ৯৬ হাজার কোটি টাকা পিপিপি থেকেই পাওয়া যাবে বলে আশা করেছিলেন তিনি। সে সময় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, পিপিপির উদ্যোগে বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হবে। তাই ২০০৯-১০ অর্থবছরে পিপিপি খাতে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। আর ওই অর্থবছরের পর থেকে টানা পাঁচ অর্থবছরই এ খাতে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু সেই অর্থ কোন সময় পুরোপুরি অর্থ খরচ হয়নি। বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে না পারায় চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বরাদ্দ কমিয়ে ২ হাজার কোটি টাকা করা হয়। চলতি অর্থবছর বরাদ্দ কমানো হলেও সফলতা আসেনি। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজেও হতাশ। তবে দমে না গিয়ে আবার নতুন করে শুরু করতে চাইছেন তিনি। তাই পিপিপিতে সফলতা আনতে নেয়া হচ্ছে নতুন উদ্যোগ। আবারও বাড়ানো হচ্ছে বরাদ্দ। সূত্র জানান, আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে আবার তিন হাজার কোটি টাকা করা হচ্ছে। বাজেটে পিপিপি সফল করতে নতুন উদ্যোগের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবেন মন্ত্রী। মুহিত আশা করছেন, নতুন উদ্যোগে পিপিপি বিমুখ বেসরকারী খাত নতুন করে আগ্রহী হবে। বাজেট বক্তৃতায় এ ব্যাপারে কিছু আশার বাণীও শোনাতে পারেন তিনি। এ খাত নিয়ে তার ‘খেদ’ থাকলেও চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় শুধু তিনি ‘পদ্ধতিগত’ ভুলের কথা বলেন। পিপিপি হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারি ব্যবস্থা, যেখানে জনগণকে সেবা দেয়ার উদ্দেশ্যে বেসরকারী খাত বিনিয়োগ করে থাকে। এতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারী খাতের চুক্তি হয়। সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দরসহ বড় বড় স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণ, যা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় বা কঠিন, তা পিপিপির মাধ্যমে করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় বড় স্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন বা নির্মাণ হয়েছে।
×