ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইরানের বন্দর ব্যবহারে ভারতের পরিকল্পনা সম্পর্কে মার্কিন সিনেটরদের প্রশ্ন

চাবাহার নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৬ মে ২০১৬

চাবাহার নিয়ে অনিশ্চয়তা

ইরানের সঙ্গে সদ্য স্বাক্ষরিত চাবাহার উন্নয়ন চুক্তি আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে শুরুতেই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ইরানে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর নিয়ে সম্পাদিত চুক্তিটি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কয়েকজন মার্কিন সিনেটর। এছাড়া এ অঞ্চলের অপর বৃহৎ শক্তি চীনকে পাশ কাটিয়ে ইরান, আফগানিস্তান ও ভারত কার্যকরভাবে যোগাযোগ নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করতে পারবে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পর্যবেক্ষকরা। খবর ফার্স্ট পোস্ট ও এনডিটিভি অনলাইনের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শনি ও রবিবার ইরান সফর করেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমন্ত্রণে মোদির দেশটি সফর করেন। সোমবার ইরানে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির উপস্থিতিতে তিন নেতা চাবাহার নিয়ে ৫০ কোটি ডলারের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি করেন। ওমান উপসাগরের তীরে অবস্থিত ইরানে চাবাহার বন্দর তিনটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে চুক্তিতে। ২০০১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী ইরান সফরের ওই বন্দর ব্যবহারের লক্ষ্যে চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরপর ইরানের ওপর একের পর এক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ায় ওই উদ্যোগ বেশিদূর এগোয়নি। চুক্তি হওয়ার পরদিনই এর আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মার্কিন আইন প্রণেতারা। সিনেটের ফরেন রিলেশন্স কমিটির সদস্য ডেমোক্র্যটিক দলের সিনেটর বেন কার্ডিন এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল বলেছেন, ‘চাবাহার ঘোষণার বিস্তারিত আমরা খতিয়ে দেখছি।’ বিসওয়াল আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক মূলত জ্বালানি ও বাণিজ্য নির্ভর। এছাড়া ভারতের বাণিজ্য রুট উন্নয়নেরও প্রয়োজন আছে। ভারত যে ইরানের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি করছে না যুক্তরাষ্ট্র তা অবগত আছে।’ মোদি আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা হওয়ার পর চলতি বছর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা আংশিক প্রত্যাহার করে নেয়। মানবাধিকার ও সন্ত্রাস ইস্যুতে উন্নয়ন সাপেক্ষে বাদবাকি নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। এই চুক্তির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক পাকিস্তানকে এড়িয়ে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক রুটের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে ভারত। বন্দরটি তখন তিনটি দেশকে সংযুক্ত করবে। পাকিস্তানকে বাইপাস করে ভারত সরাসরি আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য করতে পারবে। চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে সেটি ভারতের বাণিজ্যিক কর্মকা-ে নতুন যুগের সূচনা করবে ঠিকই। কিন্তু কয়েকটি কারণে এখনই এ নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। প্রথমত বন্দরের ভৌগোলিক অবস্থান। পাকিস্তান থেকে খুব কাছে ওমান উপসাগরে এটি অবস্থিত। পাকিস্তানের গাওয়াদার থেকে এর দূরত্ব ১শ’ মাইল। পাকিস্তানের মাকরান উপকূলে চীনের সহায়তায় গাওয়াদার বন্দরের কাজ অব্যাহত রয়েছে। সেদিক থেকে বলতে গেলে চাবাহারের অনতি দূরে এখন অবস্থান করছে চীন। ভারতের প্রকল্প বাস্তবায়নের হার যথেষ্ট মন্থর। এদিক থেকে চীন অনেক এগিয়ে।
×