ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৩:১৩, ২৫ মে ২০১৬

জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রথমে সদর উপজেলা ও পরে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। গত ১৩ মে’১৬ শরীয়তপুর সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে ঘোষনা করা হয়। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত বর্তমানে শরীয়তপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দীর্ঘ দিন পালন করেন জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি আঃ রব মুন্সী। বীরের মত দাড়িয়ে স্বাধীনতার পূর্বে থেকে অত্র এলাকার শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে সুশিক্ষিত করে তুলছে। ম্যানেজিং কমিটির অদম্য মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে গড়ে তোলা মনোরম পরিবেশে বর্তমানে ১ হাজার ৫৩ জন শিক্ষার্থীর পাঠ দান চলছে বিদ্যালয়টিতে। শিক্ষক পরিষদও অত্যন্ত মেধাবী। তাদের মেধা দিয়ে অন্যান্য বিদ্যালয়ের তুলনায় ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয় অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ১২জন এবং প্রধান শিক্ষক সহ শিক্ষক মন্ডলীর সংখ্যা ১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ এবং মহিলা ৭ জন। কম্পিউটার ল্যাব সহ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। রয়েছে সুবিশাল বিজ্ঞানাগার ও পাঠাগার। বয় স্কাউট ও গার্লস গাইড দল, সহপাঠ ক্রমিক কার্যাবলি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অংশ গ্রহন করে প্রতিবছর চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জনও রয়েছে। বিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো ভালো এবং শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে সুন্দর মাঠ। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা সুনামের সাথে অংশ গ্রহন করে আসছে। পরীক্ষার ফলাফলের তুলনায় জেএসসি ২০১৩ সালে পাশের হার ৮০.৩১ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৯৭.২২ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৯৭.৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ২০১৩ সালে ৮৩.১২ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৯৬.৩৩ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৯৫.১৮ শতাংশ ও ২০১৬ সালে ৯৭.৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। বিদ্যালয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে চাকুরীতে কর্মরত রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসক, শরীয়তপুর সরকারী কলেজে সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপকসহ প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, আইনজীবী ও সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯০ সালের ছাত্র বর্তমানে শরীয়তপুর সরকারী কলেজে প্রাণী বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবদুস সোবাহান বাবুল জানান, বীরের মত দাড়িয়ে আজও আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে সুনামের সহিত শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক জেলা আওয়ামীলীগ সাবেক সভাপতি আঃ রব মুন্সী অক্লান্ত পরিশ্রম করে তিল তিল করে গড়ে তুলেছে বিদ্যালয়টি। রাজনীতি জীবনের পাশা-পাশি তৎকালীন (প্রতিষ্ঠা লগ্ন কাল) থেকে আজও পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ রাখতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৮ সালের শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যয়নরত আলাল হোসেন আবির, বিভিন্ন মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী আবির পারভেজ, সাগর সাহা, অভিজিৎ সাহা, রাজা সাহা, রাকিবুল ইসলাম সম্রাট, সুজন কুমার দাস, এবং ২০১১ সালের শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়াংকা দেবনাথের সাথে আলাপ কালে জানায়, লেখা পড়া করার জন্য প্রথমে দরকার একটি সুন্দর পরিবেশ। আর সেই পরিবেশ রয়েছে আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্বাধীনতার আগে থেকে বাবা-মা’র ভূমিকা পালন করছে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক মন্ডলী। শিক্ষার্থীদের স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে ভালো ফলাফল করার বিষয়ে সব সময় উৎসাহ উদ্দীপনা দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী। আজ শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সরকারী ভাবে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হয়েছে। আমরা আশা রাখছি আগামীতে আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়টি বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্ব ছিনিয়ে আনবে। আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আনোয়ার কামাল একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আংগারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের আন্তরিকতা ও শিক্ষক মন্ডলীদের আপ্রাণ চেষ্ঠায় অতীতের সুনাম আজও ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিদ্যালয়টি। এলাকায় পিছিয়ে পড়া শিশুদের এগিয়ে নিতে শিক্ষকদের আন্তরিকতা যথেষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষার্থীদের মনোরম পরিবেশে পাঠদান, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমের মাধ্যমে পাঠদান দেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমি মনে করি এই আনন্দ শুধু শিক্ষক মন্ডলীর না এ আনন্দ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। কারণ কারো একার পক্ষে এতো বড় সফলতা বয়ে আনা সম্ভব না। আমরা ভবিষ্যতেও এ সফলতা ধরে রাখতে চাই। রিপোর্ট ক্রাইম ভিশন
×