ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গর্ভপাত ॥ যুবতীর লাশ মিলল পুকুরে

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৫ মে ২০১৬

গর্ভপাত ॥ যুবতীর লাশ মিলল পুকুরে

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেস্টিন গ্রামে অবৈধ গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে রেশমা বেগম (১৭) নামের এক যুবতীকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে কথিত সালিশের নামে ওই যুবতীকে তিন দিন ধরে পার্শ্ববর্তী আরেক গ্রামের অপর একটি বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল। এ বাড়িতেই ওই যুবতীর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে রাঙ্গাবালী থানার পুলিশ অভিযোগের তদন্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে। চরবেস্টিন গ্রামের ওই যুবতীর দিনমজুর বাবা এমাদুল হাওলাদার অভিযোগ করেছেন, একই গ্রামের সেলিম হাওলাদারের ছেলে মোটরসাইকেল ড্রাইভার আল আমীনের (২৮) সঙ্গে বছরখানেক আগে তার মেয়ে রেশমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আল আমীন আগে থেকেই বিবাহিত। তার একটি মেয়ে শিশু রয়েছে। এরপরেও আল আমীন বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রেশমার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে রেশমা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। আল আমীন গোপনে রেশমার গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে। এজন্য রেশমাকে গলাচিপা উপজেলা শহরেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গর্ভপাত করাতে পারেনি। পরবর্তীতে আল আমীন রেশমাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার কয়েক প্রভাবশালী সালিশের নাম করে শনিবার রাতে রেশমাকে চরলক্ষ্মী আদর্শ গ্রামের মতি হাওলাদারের বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। মতি হাওলাদার রেশমার ভাইয়ের শ্বশুর। মঙ্গলবার সকালে মতি হাওলাদারের পুকুরে রেশমার লাশ পাওয়া যায়। রেশমার মা কমেলা বিবি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আল আমীন তার মেয়ের গর্ভপাত করানোর জন্য অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছে। কিন্তু গর্ভের সন্তানের বয়স বেশি হওয়ায় তা করাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ওই বাড়িতে নিয়ে গ্রাম্য ডাক্তার দিয়ে গর্ভপাত করাতে গিয়ে তার মেয়ে রেশমাকে পরিকল্পিত ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। ‘রেশমা পুকুরের পানিতে ডুবে মারা গেছে’, এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীর এমন প্রচারণার জবাবে কমেলা বেগম বলেন, ‘রেশমা পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যেতে পারে না। সে সাঁতার জানতো। তাকে হত্যা করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে। আল আমীনরা প্রভাবশালী। তাই মেয়ে বেঁচে থাকতে বিচার চেয়েও পাইনি। এখন নানা অপপ্রচার শুরু হয়েছে।’ আল আমীনের চাচা স্থানীয় এক নম্বর ওয়ার্ড চরবেস্টিনের ইউপি মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি ঘটনার সালিশ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই রেশমা মারা যায়।
×