ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনিয়মই নিয়ম

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৫ মে ২০১৬

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অনিয়মই নিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ থানা শিক্ষা অফিসগুলোতে অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেতন ফিক্সিশন, এরিয়ার বিল, স্লিপ বাজেট অনুমোদনসহ কোন কাজই এখানে ঘুষ ছাড়া হয় না। কোন রাখঢাক নয়, ঘুষ দেয়া-নেয়া এখানে রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাতওয়ারি শিক্ষকদের ৫শ’ থেকে হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। কেউ টাকা না দিতে চাইলে তার কাজটি আটকে থাকছে মাসের পর মাস। একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, অন্যান্য জেলার শিক্ষকরা মার্চ মাসে এরিয়ার বিল পেয়ে গেছে কিন্তু আমাদের জেলার অধিকাংশ থানায় এখনও বিল প্রস্তুত করা হয়নি। আমরা এরিয়ার বিল বাবদ ঘুষ দেব না জানিয়ে দেয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তারা গড়িমসি করছেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, শুধু এরিয়ার বিল নয়, ছোটখাটো সব বিল পাস করাতে থানা শিক্ষা অফিসকে টাকা প্রদান করতে হয়। টাকা না দিলে কোন বিল পাস হয় না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত কোতোয়ালি থানাধীন প্রতিটি স্কুলকে থানা শিক্ষা অফিসে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ হাজার টাকার মতো ঘুষ প্রদান করতে হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষককে বেতন ফিক্সিশন, এরিয়ার বিলসহ বিভিন্ন বিল পাস করাতে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা প্রদান করতে হয়েছে। কোতোয়ালি থানাধীন একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসে থানা শিক্ষা অফিসে বিনামূল্যে বিতরণকৃত বই রিসিভকালে ১০০ টাকা, থানা পর্যায়ে বই বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজনের ফি বাবদ ৩০০ টাকা, বই পরিবহনের বিল পাস করাতে ১০০ টাকা, শিক্ষা/মিনা মেলার ফি বাবদ ৩৫২ টাকা, খেলাধুলা ও প্রাক-প্রাথমিক উপকরণ ক্রয়ের বিল পাস করাতে ৪৯০ টাকা, থানা পর্যায়ে ক্রীড়া পরিচালনার খরচ বাবদ ৫০০ টাকা, থানা পর্যায়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ২৭৫ টাকা, বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ল্যাপটপ আনার খরচ বাবদ ১০০০ টাকা ও প্রজেক্টর আনার খরচ বাবদ ৮০০ টাকা প্রদান করেছেন। এই পাঁচ মাসে শিক্ষকদের প্রত্যেককে বেতন ফিক্সিশন বাবদ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, এরিয়ার বিল পাস করাতে ৫ শতাংশ, টাইম স্কেল মঞ্জুরে একেকজন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং স্লিপ বাজেট পাস করাতে ৫০০ টাকা থানা শিক্ষা অফিসকে প্রদান করতে হয়েছে। অথচ ওপরের এসব খাতে বিল পাশস করানোর ক্ষেত্রে টাকা প্রদানের কোন বিধান নেই। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা রূপাঞ্জলী কর বলেন, ঘুষ চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ আমরা এখনও এরিয়ার বিল প্রস্তুতই করিনি। বেতন ফিক্সিশনসহ স্কুলের বিভিন্ন উপকরণ পরিবহন বাবদ টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি বার বারই লাইন কেটে দিয়েছেন।
×