ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ, ফেসবুকে প্রচার

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৪ মে ২০১৬

ময়মনসিংহে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ, ফেসবুকে প্রচার

বাবুল হোসেন, ময়মনসিংহ ॥ ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) ও ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের উপনির্বাচনে ‘নৌকা প্রতীক’ প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জোর লবিংয়ের পাশাপাশি নানা মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে অনেকে ফেসবুকে রঙিন ছবিসহ পোস্টার ও এলাকাবাসীর প্রতি শুভেচ্ছার ব্যানার আপলোড করে প্রার্থিতা জানান দিতে প্রচারের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এলাকার মোড়ে মোড়ে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ছাড়াও হাট-বাজার এবং উপজেলা প্রশাসন ভবন এলাকাতেও শোভা পাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছবিসহ নানা শুভেচ্ছা ও শোকবার্তার পোস্টার-ব্যানার। প্রতিদিনই প্রচারে মাত্রায় যোগ হচ্ছে নতুন মুখ। যতই দিন যাচ্ছে নতুন মুখের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। প্রচারে নতুন মাত্রা যোগ করে এরই মধ্যে এলাকায় শোরগোল ফেলে ভোটার ও কর্মী-সমর্থকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে আলোচনায় ঝড় তুলেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজনীন আলম, ডাঃ এমএ আজিজ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আহমদ ও সাবেক ছাত্রনেতা ফারুক আহমদ খান। সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন ডাঃ মুজিবুর রহমান ফকির এমপি গত ২ মে ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন এমপি গত ১১ মে মারা যাওয়ায় আসন দুটি শূন্য হয়। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোন আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হবে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গৌরীপুর ও হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া আসনের উপনির্বাচন সামনে রেখে কেন্দ্রে লবিংয়ের পাশাপাশি এলাকায় গণসংযোগ করে ভোটারদের নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত কিংবা জাতীয় পার্টি থেকে এই দুটি আসনে প্রার্থী হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। মূলত আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাই এলাকায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। গণসংযোগসহ প্রয়াত নেতাদের নামে শোকবার্তার পোস্টার টানানোর সঙ্গে সঙ্গে ছবিযুক্ত পোস্টার ও ব্যানার টানিয়ে প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন অনেকে। গৌরীপুর আসনে নৌকা প্রত্যাশীরা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নেত্রী নাজনীন আলম। গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বাধা বিপত্তি ও হামলার শিকারসহ নানা প্রতিকূলতার পরও নাজনীন আলম হরিণ প্রতীকে ১৯ হাজার ৬২৩ ভোট পান। নৌকা প্রতীক নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন ডাঃ মুজিবুর রহমান ফকির ৪৩ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এরপর থেকে মাঠ ছাড়েননি নাজনীন আলম। এলাকার মাঠঘাট চষে বেড়ালো ও ভোটারদের ধর্না দেয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রে জোর লবিং করছেন বলে দলীয় স্থানীয় সূত্র জানায়। স্থানীয়দের দাবি গৌরীপুর আসনে মনোনয়ন না পেলেও নাজনীন আলম ফ্যাক্টর। কারণ তার সিমপ্যাথি ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আহমদ, স্বাচিপের কেন্দ্রীয় মহাসচিব প্রয়াত এমপি ডাঃ মুজিবের ঘনিষ্ট সহচর ও গৌরীপুরের মাঠঘাট চষে বেড়ানো জনপ্রিয় নেতা অধ্যাপক ডাঃ এমএ আজিজ, কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ ড. সামীউল আলম, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের ভাতিজা অধ্যাপক ডাঃ মতিউর রহমান, ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা অধ্যাপক একেএম আব্দুর রফিক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আহম্মদ খান পাঠান সেলভী, সাবেক ছাত্র নেতা নজরুল ইসলাম অনু, গোলাম মোস্তফা বাবুল ওরফে ভিপি বাবুল মনোনয়ন প্রত্যাশী। স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এমএ আজিজ জনকণ্ঠকে জানান, সব সময় এলাকাবাসীর খোঁজখবর রাখছি, সুখে দুখে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। দল চাইলে এলাকার উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করব। গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ডাঃ আজিজ এলাকায় ব্যাপক গণজোয়ার ও জনমত সৃষ্টি করেছিলেন। ড. সামীউল আলম লিটন জানান, প্রতিটি নির্বাচনে এলাকাবাসীর কাছে গিয়েছি, দলের জন্য কাজ করেছি। ভোটাররা উপনির্বাচনে আমাকে চায়। হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া আসনে আনন্দ মোহন কলেজের সাবেক ভিপি তুখোর ছাত্রনেতা ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, হালুয়াঘাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ খান, বিশিষ্ট চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিএন সরকার চন্দন, আইনজীবী ও যুবলীগের সাবেক নেতা এ্যাডভোকেট পীযুশ কান্তি সরকার, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন, প্রয়াত সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর পুত্র জুয়েল আরেং মনোনয়ন প্রত্যাশী। প্রার্থীদের মধ্যে ফারুক আহমদ খান, এ্যাডভোকেট পীযুশ কান্তি সরকার ও ডাঃ সিএন সরকার চন্দন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। ক্লিন ইমেজ রয়েছে এবং কোন বিতর্ক নেই এমন পরীক্ষিত ও যোগ্য নেতার মনোনয়ন চান সীমান্তের এলাকাবাসী।
×