ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমদানি পর্যায়েই রসুনে দর বেড়েছে ৭৮ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৪ মে ২০১৬

আমদানি পর্যায়েই রসুনে দর বেড়েছে ৭৮ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ৭ মাসে রসুনের আমদানি মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫৯ টাকা বা ৭৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর ওই সময় খুচরা পর্যায়ে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণপত্রের (এলসি) সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, গত অক্টোবর মাসে প্রতিকেজি রসুনের আমদানি মূল্য ছিল ৭৫ টাকা। কিন্তু ৭ মাস পরে সেই রসুনের আমদানির মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩৪ টাকা। আলোচ্য সময়ে খুচরা পর্যায়ে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশের বেশি। আমদানিকারকদের দেয়া তথ্য মতে, গত অক্টোবর মাসে পণ্যটি কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। কিন্তু ৭ মাস পরে পণ্যটির এখন বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। দর বাড়ার কারণ হিসেবে আমদানিকারকরা বলছেন, এবার দেশীও রসুনের ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি ভারতের উত্তর প্রদেশে রসুনের উৎপাদন কম হয়েছে। আর এই কারণেই এবার বেশিরভাগ রসুনই আমদানি করা হচ্ছে চীন থেকে। আর পণ্যটি এই বছর চীনের বাজারেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে বাংলাদেশের আমদানিকারকদেরও গোনতে হচ্ছে বাড়তি পয়সা। আর এ কারণেই পণ্যটির দাম বেড়েছে। রাজধানীর শ্যামবাজারে দেখা গেছে, পাইকারিতে আমদানি করা রসুন কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর নাটোরের দেশী রসুন (মান ভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত এপ্রিল মাসে রসুন আমদানিতে এলসি খোলা হয়েছে ২ হাজার ৭৫৮টি। তবে আলোচিত মাসে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ৮৩৭টি। যার মোট মূল্য ছিল ৩১ লাখ ১১ হাজার মার্কিন ডলার। গত বছর একই মাসে এলসি খোলা হয়েছিল ২ হাজার ৭৭৯টি। তবে ওই মাসে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ২ হাজার ৬০৬টি। যার মূল্য ছিল ২১ লাখ ৭ হাজার মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময় কেজিপ্রতি রসুনের আমদানি করা মূল্য ছিল ৬৪ টাকা। সেই হিসাবে আমদানি করা রসুনের ক্রয়মূল্য বেড়েছে ১০৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত রসুন আমদানিতে মোট এলসি খোলা হয়েছে ২৭ হাজার ১০৫টি। যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ৫১ হাজার ৯১০টি। আবার চলতি অর্থবছরে এলসি নিষ্পত্তি ২৭ হাজার ৪৮২টি। এবার রসুনের গড় আমদানি মূল্য পড়েছে ৮৯ টাকা। যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ৫৬ টাকা। শুধু এ বছর জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত সময় রসুনের গড় আমদানি মূল্য ছিল ১১১ টাকা। যা গত বছরের একই সময় ছিল ৬১ টাকা। সেই হিসাবে আলোচ্য সময় আমদানিতে দর বেড়েছে ৮১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। কথা হয় শ্যামবাজারের অজয় ট্রেডার্সের মালিক আমদানিকারক অসীম সাহার সঙ্গে। তিনি বলেন, এবার রসুনের ফলন দেশেই কম হয়েছে। আবার বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়েছে বাড়তি দামে। দেশী রসুনের সরবরাহ কম থাকায় বিদেশীী রসুনের চাহিদা বেশি ছিল। আর এই কারণেই দরও বেড়েছে। খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে রসুনের দাম স্বাভাবিক থাকলেও কয়েক মাস পরেও তা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে দেশী রসুনের সরবরাহ কমে গেলেই চায়না রসুনের দাম বেড়ে যায়। তবে এত বাড়তি দরের পরেও রমজানে রসুনের সঙ্কট হবে না বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
×