ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমাদের মুনতাসীর মামুন

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৪ মে ২০১৬

আমাদের মুনতাসীর মামুন

মু মুনি ঋষিতে তার নেই কোন ভক্তি ন নয় তিনি কোন অধ্যাত্মবাদী তা তার মন পড়ে থাকে দেশের মানুষের ’পর সী সীমা নেই তার দেশকে ভালবাসার র রক্ষায় সতত ব্যস্ত তিনি মানুষের অধিকার মা মা ভাই-বোন সবাইকেসহ মু মুুখে হাসি আর বুকে আশা নিয়ে ন নতুন জীবনের স্বপ্নে তিনি থাকেন বিভোর। মুনতাসীর মামুন। নামের আটটি বর্ণ অবলম্বনে আটটি লাইনের কবিতায়, যথার্থ মানুষের যথাযথ চরিত্র চিত্রণ করেছেন জাতির সর্বজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক কবীর চৌধুরী। ২০০৩ সালে কবিতাটি রচনা করে মুনতাসীর মামুনকে উপহার দিয়েছিলেন, যা মুনতাসীর মামুনের জন্য তথা এক বিবেকবান ব্যক্তিত্বের জন্য মূল্যবান অর্জন। তেরো বছর বয়স থেকে লিখতে শুরু করেছেন। লিখতে হলে জানতে হয়, পড়তে হয়। দেখতে হয় মানুষকে, প্রকৃতিকে। বুঝতে হয় ধর্ম কি, সমাজ কি, রাজনীতি কি? জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়ে নিজের পায়ের তলার মাটিকেও উপলব্ধিতে নিয়ে আসতে হয়। আর তাই তো দেখি, প্রথম লেখা দিয়েই তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ের পাকিস্তানের বাংলাভাষী শিশু-কিশোর লেখকদের প্রতিযোগিতায় কিশোর মুনতাসীর মামুন দেশের শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে বিবেচিত হয়ে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার অর্জন করেন। তারপর আর থেমে থাকা নয়। অধ্যয়ন, জ্ঞান অন্বেষণ, লেখালেখি, গবেষণা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য, হারিয়ে যাওয়া ও চেপে রাখা সত্যকে উদ্ঘাটন করেছেন। একই সঙ্গে ঐতিহাসিক সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর ক্ষুরধার লেখনীতে বিশ্লেষণ করে চলেছেন অবিরত। প্রগতিশীল রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা। যিনি অকপটে মুখোশ উন্মোচন করেন মোনাফেক রাজনীতিকের, দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসকের, সামরিক ও বেসামরিক শক্তির অপপ্রয়োগের। তাঁর লেখালেখিতে সাম্প্রদায়িক এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের ধ্বংসাত্মক অপপ্রয়াসকে তীক্ষè অনুসন্ধিৎসু ও তীব্র সমালোচনার মাধ্যমে জনগণের কাছে তুলে ধরেন। সন্ত্রাস, বোমাবাজির হুমকি, অন্যান্য সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপে জনগণ যখন অতিষ্ঠ এবং রুদ্ধদ্বারে মুখ বন্ধ অবস্থায় তখন সব ভয়ভীতি, অপশক্তির হুমকি এবং তাদের তাক করা আগ্নেয়াস্ত্রকে উপেক্ষা করে মুনতাসীর মামুন তাঁর শক্তিশালী লেখনী উঁচিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। শুধু প্রতিবাদেই তিনি ক্ষান্ত হন না, অপশক্তির হাত থেকে বাঁচার উপায় এবং সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেন। সমাজের ভাল মানুষদের কথা, ভাল কাজের বিষয়ে অকপট প্রশংসা তাঁর লেখায় উল্লেখযোগ্যভাবে স্থান পায়। জনগণের মনের কথা, আশা-আকাক্সক্ষার কথা, স্বপ্নের কথা সময় উপযোগীভাবে তুলে ধরতে পারেন বলেই জনগণের প্রিয় মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বিভিন্ন সঙ্কটে দেশের বিবেক হিসেবে এক গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছেন। যেসব দৈনিক কাগজে তার লেখা প্রকাশিত হয়, সংবাদপত্র পাঠকরা তাঁর লেখা পড়ার জন্য উদগ্রীব অপেক্ষা করেন। কোনদিন বা কখনও কয়েকদিন তাঁর লেখা পড়তে না পারলে পাঠকরা হতাশায় ভোগেন। সম্পাদকের কাছে টেলিফোন, চিঠি ও নানারকম তাড়া আসে, মুনতাসীর মামুনের লেখা ছাপুন। এমনকি লেখকের কাছেও অনুরোধ আসে আপনি লিখছেন না কেন? আর এভাবেই মুনতাসীর মামুন এক প্রিয় লেখক, অন্ধকারের বাতিঘর হিসেবে জনগণের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গেড়ে নিতে পেরেছেন। এভাবেই চৌষট্টি বছর পার হয়ে মুনতাসীর মামুন পরিচিত হয়ে উঠেছেন, মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন, জাতির বিবেক হিসেবে, মানবতার বিবেক হিসেবে। যা তিনি নিজে হয়ত উপলব্ধি করতে পারেন না। বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে মুনতাসীর মামুনের নেতৃত্ব ও প্রধান ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ৩২নং ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, ঢাকা নগর ভবনে ঢাকা নগর জাদুঘর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক-এর টাকা জাদুঘর। জাদুঘর স্থাপনা, সরকারী-বেসরকারী বহু প্রতিষ্ঠানের বিকাশে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ বাস্তবায়নের বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য, স্থাপত্য পরিকল্পনা ও ম্যুরাল শিল্পকর্মের জুরি বোর্ড সদস্য; সারাদেশে ১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পাক হানাদার বাহিনীকৃত বধ্যভূমিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধের স্থাপনা জুরি বোর্ড ও বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে স্থপতি, চিত্রশিল্পী ও ইতিহাসবিদ সমন্বয়ে রূপকারের তিনি একজন, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত এ যাবতকালের দেশের সর্ববৃহৎ ম্যুরাল শিল্পের ৪ জন রূপকারদের (চিত্রশিল্পী ও ইতিহাসবিদ) অন্যতম মুনতাসীর মামুন। শিল্পকলা আইনের অন্যতম প্রণেতা, জাতীয় গ্রন্থাগারনীতি তাঁরই নেতৃত্বে প্রণীত হয়েছে। শিল্পকলা পরিষদের অন্যতম সদস্য এবং জাতীয় জাদুঘর, বাংলা একাডেমি, জাতীয় আর্কাইভ ও পাঠাগারসহ দেশের বহু শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিকাশে তিনি দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা তিনি। একটা জাতিকে মেধাশূন্য করা এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেয়ার জন্য স্বাধীনতার শত্রুদের একটি চক্র দীর্ঘকাল ধরে ইতিহাস পাঠ বিষয়টি শিক্ষার ব্যবস্থা থেকে প্রায় উঠিয়ে দিয়েছিল। মুনতাসীর মামুনই এমন একটি অন্যায় এবং চক্রান্ত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। ইতিহাস পাঠকে যথাযথভাবে শিক্ষার সর্বস্তরে পাঠ্য করার জন্য কিছু তরুণ ইতিহাসবিদ সমন্বয়ে আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলেছেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী নামে সংগঠন। যেটি দুটি আন্তর্জাতিক সফল সম্মেলন করেছে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজ পর্যায়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টি আবশ্যিক বিষয় হিসেবে পাঠের অন্তর্ভুক্ত করেছে। মুনতাসীর মামুনের নেতৃত্বে সম্প্রতি বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর উদ্যোগে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর এই প্রথম প্রতিষ্ঠা হলো খুলনায় ‘বাংলাদেশ-৭১ গণহত্যা আর্কাইভ ও জাদুঘর।’ এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম জানবে- পাক হানাদার বাহিনী, রাজাকার ও জামায়াতের নৃশংস হত্যার কাহিনী, গণহত্যা ও নির্যাতনের ছবি দেখে বুঝতে পারবে- কেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির দাবি, ৩০ লাখ বাঙালী কিভাবে দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে, ২ লাখ মা-বোন নির্যাতন ভোগ করেছে। পঁয়ষট্টি বছরে পদার্পণ করেছেন ড. মুনতাসীর মামুন। শিশু-কিশোরদের জন্য গল্প লিখেছেন তরুণ বয়সে। তারপর গবেষণা, ইতিহাস ঐতিহ্য, রাজনীতি ও সমাজ সমীক্ষা, দেশ, মানুষ, মানুষের পেশা, শিক্ষা, সাহিত্য সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত সৃষ্টি করেছেন তিন শতাধিক ছোট বড় গ্রন্থ। গবেষণা-সমালোচনা ও বিশ্লেষণমুখী লেখাও যে জনপ্রিয় হতে পারে মুনতাসীর মামুন তা প্রমাণ করেছেন। দুরূহ বিষয়গুলো তাঁর অনুসন্ধিৎসু বিচার বিবেচনা, তাঁর শ্রম ও মেধার গুণে পাঠকের মনকে ছুঁয়েছে, আলোড়িত করেছে। তাই তার বেশিরভাগ গ্রন্থের অনেক সংস্করণ হয়েছে। বাংলাদেশে ক্যালেন্ডার বা দিনপঞ্জির প্রকাশনার এক শৈল্পিক ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন মুনতাসীর মামুন। দিনপঞ্জিকে বিষয়ভিত্তিক করে জনসাধারণকে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিমনস্ক করে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা শহরে ‘ইতিহাস’ বিষয়ে রফিকুন নবীর চিত্র সংবলিত প্রথম প্রয়াস মুনতাসীর মামুনই তৈরি করে বাংলাদেশ টোব্যাকো বা সংক্ষেপে বিটিসির ১৯৮৫ সালের ক্যালেন্ডার। সমাজে আদৃত হয় ক্যালেন্ডারটি। এরপর শুধু বিটিসিই নয়, বহু প্রতিষ্ঠান এই বিষয়ভিত্তিক ক্যালেন্ডার তৈরি করার ধারাটি গ্রহণ করে এবং এখনও করে যাচ্ছে। অবশ্য ইতোপূর্বে বিটিসি বা দু’একটি প্রতিষ্ঠান সুন্দর আলোকচিত্র ও চিত্রশিল্পীদের চিত্রকলার রিপ্রোডাকশন দিয়ে কখনও কখনও ক্যালেন্ডার করতেন। ড. মুনতাসীর মামুনের শিল্পকলার প্রতি ভালবাসা সেই তরুণ বয়স থেকেই। লেখালেখির চেষ্টা করেছেন। দেশী-বিদেশী বই খুঁজে বেড়াচ্ছেন, শিল্পকলার প্রদর্শনীতে নিয়মিত যাচ্ছেন। নামী-দামী থেকে শুরু করে তরুণতম শিল্পীদের ছবি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেনÑ অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় করেছেন শিল্পীর গভীরে প্রবেশ করার জন্যে। এক সময় নিয়মিত লিখতেন শিল্পী ও শিল্পকলা বিষয়ে। মাঝে মধ্যে এখনও লেখেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংগৃহীত বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীদের চিত্রকলা ও কয়েকটি ম্যুরালের চমৎকার ও মূল্যবান এ্যালবাম। এ্যালবামের যৌথ সম্পাদক হলেনÑ মুনতাসীর মামুন ও হাশেম খান। শুধু কি লেখার জন্য? না শিল্পকলা তাঁকে এমন কিছু দিয়েছে যার আকর্ষণ তিনি এড়াতে পারেননি। ক্যানভাসে রং রেখা অবয়বে শিল্পী যে নতুন জগত তৈরি করেন মুনতাসীর মামুন সেই জগতে প্রবেশ করতে পারেন অনায়াসে। তাই অনেক গুণী শিল্পী, তরুণ শিল্পী ও তাঁর চেয়ে বয়স্ক শিল্পীদের কাছে তিনি আদৃত। অনেকেই তাঁর সুহৃদ ও বন্ধু। যখন কোন শিল্পকর্ম তাঁকে আকৃষ্ট করেছে, তাঁর মনকে দোলায়িত করেছে, সংগ্রহ করার চেষ্টা করেন। সবসময় পেরেছেন এমন নয়। সাধ থাকলেও সাধ্যে কুলায়নি। কারণ নামী-দামী শিল্পীদের চিত্রকর্মের মূল্য অনেক। তার তরুণ বয়সের একটি ঘটনা এখানে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭০ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউটের একটি প্রদর্শনীতে দুটি মূল্যবান ছবি কেনার পর মাত্র সত্তর টাকার জন্যে সেই সময়ে শফিউদ্দিন আহমেদের একটি ছোট কাঠখোদাই ছবি কিনতে পারেননি বলে তাঁর আক্ষেপের শেষ ছিল না। সেই আক্ষেপ ও বেদনা আজও পোষণ করে চলেছেন। লেখালেখি ও প্রকাশিত বইয়ের সামান্য সম্মানীর অর্থ প্রায় সবই ব্যয় করেন তাঁর মানসিক আনন্দের জন্য। তাঁর এই আনন্দ দেশে-বিদেশের বিভিন্ন বিষয়ের বই কেনা চিত্রকলা সংগ্রহ ও ছোট ছোট শৈল্পিক গুণসম্পন্ন পাত্র, পুতুল ইত্যাদি সংগ্রহ করে। আর এ কাজটি সহজে পারেন তাঁর স্ত্রী ফাতেমা মামুনের কল্যাণে। স্বামীর মেধা ও গুণের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শিল্পকলা যে আনন্দ ও মানসিক প্রশান্তির কারণÑ স্বামীর সঙ্গে সেই আনন্দে ফাতেমা মামুনও একাত্ম হওয়ার শক্তি রাখেন। সাংসারিক অনেক দায়-দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। পারিবারিক একটি ট্রাস্ট গঠন করেছেনÑ মুনতাসীর মামুন ও ফাতেমা ট্রাস্ট নামে। যার মাধ্যমে কয়েকজন গরিব মেধাবী ছাত্রের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মুনতাসীর মামুনের রচনা, বিভিন্ন সংগ্রহ ইত্যাদিকে যথাযথভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সংগ্রহের রূপ দিচ্ছেন। মুনতাসীর চিত্রকলার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে দুই শতাধিক। বই, চিত্রকলা ও অন্যান্য শিল্পকর্মে শোভিত মুনতাসীর মামুনের বসতবাড়িটি আজ এক রুচিশীল মূল্যবান মিনি জাদুঘরে রূপ নিয়েছে। শিল্পকলার প্রতি ভালবাসা মুনতাসীর মামুনের পারিবারিক ধারাবাহিকতার একটি ফসল। তাঁর বাবা-মা ও পিতৃব্যরা শিল্পকলা চর্চায় অনুরক্ত। চাচা অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিল্প সমালোচক। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে কয়েক শত মূল্যবান চিত্রকলা। আরেক চাচা ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। তিনিও প্রায়শ খ্যাতিমান থেকে শুরু করে নবীনদের উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম সংগ্রহ করে থাকেন। অসংখ্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত মানুষ মুনতাসীর মামুন। শিক্ষকতা, গবেষণা ও সাংগঠনিক কাজ যে নিষ্ঠা নিয়ে করেন, সংসারের খুঁটিনাটি কাজ থেকে শুরু করে সব কাজই গুরুত্বসহকারে সমাধা করেন। আত্মীয়, ছাত্র, বন্ধু, গুরুজন কিংবা বিপন্ন মানুষের প্রয়োজনে অপরিসীম ভালবাসা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ান, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ মানসিকতা নিয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে, দেশের বিভিন্ন রকম সঙ্কটে ও মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে নিজের লেখনীকে সবসময়ই সচল রেখেছেন। শিল্প, সাহিত্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রের বহু সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রতিনিধিত্ব অনিবার্য। আর নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে তিনি দায়িত্বপালন করে যাচ্ছেন।
×