ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানকে পাশ কাটিয়ে আফগানিস্তানে পণ্য রফতানি করবে ভারত

ইরান সফরে মোদি

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ২৪ মে ২০১৬

ইরান সফরে মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবার দু’দিনের সফরে ইরানে পৌঁছেছেন। এক দশকের বেশি সময় পর এই প্রথম ভারতের কোন প্রধানমন্ত্রী ইরান সফরে গেলেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমন্ত্রণে মোদি দেশটি সফর করছেন। খবর বিবিসি, ডিনএনএ ও এনডিটিভি অনলাইনের। মোদি এমন এক সময় ইরান সফরে গেলেন যখন ইরান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এর আগে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ২০০১ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ ইরান সফর করেন। রবিবার তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে ইরানের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী আলী তৈয়বনিয়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দর থেকে মোদি প্রথম যান তেহরানের এক ভাই গঙ্গা সিংসভা গুরুদুয়ারায়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিখ সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে তিনি আলাপ করেন। এই শিখরা ইরানের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক বন্ধন বজায় রেখেছে। মোদির সফরসঙ্গীদের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক, জনপথ ও জাহাজ চলাচল মন্ত্রী গড়করি রয়েছেন। মোদির এবারের ইরান সফরে আঞ্চলিক যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও জ্বালানির মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পাচ্ছে। সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেন মোদি। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিরও এদিন ইরান পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তিন নেতার উপস্থিতিতে ইরানের চাবাহার নামে একটি বন্দর উন্নয়নে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হতে পারে। বন্দরটি হলে পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারতীয় পণ্য সরাসরি আফগানিস্তানে যেতে পারবে। পাকিস্তান ছাড়াও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব এড়িয়ে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ভারতকে নেয়া মোদির এ সফরের অন্যতম লক্ষ্য। মোদির এ সফরে ইরান ও ভারতের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। চাবাহার বন্দর ছাড়া অন্য যেসব চুক্তির কথা রয়েছে সেগুলো হলো- ত্রিপক্ষীয় ট্রানজিট চুক্তি। ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি হলে স্থলবেষ্টিত দেশ আফগানিস্তানে পণ্য পৌঁছাতে পারবে ভারত। ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় চাবাহার স্থলবন্দর তিনটি দেশের মধ্যে কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। বর্তমানে এই বন্দরের মধ্য দিয়ে কেবল ইরান ও আফগানিস্তানের জারনাজের মধ্যে পণ্য পরিবাহিত হয়ে থাকে। নতুন চুক্তিতে আফগানিস্তানের হেরাত, কান্দাহার, কাবুল ও মাজার-ই-শরিফের মতো বড় শহরগুলোও বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। ৩. ইরান থেকে অশোধিত তেল আমদানি চুক্তি। ইরানের অশোধিত তেলের অন্যতম ক্রেতা ভারত। নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভারত ইরান থেকে দীর্ঘদিন তেল আমদানি করতে পারেনি। এ বছর আরও আগের দিকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ১ এপ্রিল থেকে ভারত প্রতিদিন ৪ লাখ ব্যারেল অশোধিত তেল আমদানি করছে। চুক্তিটি হলে ঘুরপথে না এনে ইরান থেকে সরাসরি তেল আনা সম্ভব হবে। ৪. জ্বালানি চুক্তি। এ চুক্তির আওতায় ইরানের ফারজাদ বি ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন করতে পারবে ভারত। ২০০৮ সালে এখানে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ৫. সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়ন চুক্তি। ইরান ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধন জোরদার করা মোদির বর্তমান সফরের আরেকটি লক্ষ্য। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্সের পরিচালক সি রাজাসেখার বলছেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো উঠে যাওয়ার পর ইরানের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এখন সহজতর হয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে দেশ দুটির মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। দুটি দেশই বগ দুটি সভ্যতার জন্ম দিয়েছে।
×