ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বুদ্ধ পূর্ণিমা

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২১ মে ২০১৬

বুদ্ধ পূর্ণিমা

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ। গৌতম বুদ্ধের শুভজন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অপর নাম দেয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ সরকারী ছুটির দিন। খবর বাসসর। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায় তাদের এ প্রধান ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করবে। এ উপলক্ষে সকাল ১০টায় বুদ্ধ পূজা ও সংঘদান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ ধর্মীয় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জমান নূর প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। সভায় বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাথেরোর সভাপতিত্ব করবেন। এর পর বিশ্ব শান্তি কামনায় প্রদীপ প্রজ্ব¡লন ও সমবেত প্রার্থনা শেষে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আয়োজিত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন তারা। বাসাবো সবুজবাগ ধর্মরাজি বৌদ্ধ মহাবিহার বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সকাল ৮টায় প্রভাত ফেরির আয়োজন করেছে। প্রভাত ফেরি বাসাবো বৌদ্ধমন্দিরের সামনে থেকে শুরু হয়ে মুগদা স্টেডিয়ামের সামনে গিয়ে শেষ হবে। এছাড়াও সমবেত প্রার্থনা, ধর্মীয় আলোচনা সভা ও বুদ্ধপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সবুজবাগ বৌদ্ধবিহার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। সভায় সভাপতিত্বে করবেন শুদ্ধানন্দ মহাথেরো। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির বাণী ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রাচীনকাল থেকে বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে বৌদ্ধদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা ও কৃষ্টি গভীরভাবে মিশে আছে। তিনি অনুসন্ধিৎসু গবেষণার মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মের প্রাচীন সভ্যতা, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে পরিচিতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরার জন্য বিদগ্ধ গবেষক, প-িত ও বৌদ্ধ চিন্তাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২০১৬ উপলক্ষে শুক্রবার এক বাণীতে তিনি এ আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার সাথে সম্পৃক্ত। প্রধানমন্ত্রীর বাণী ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়সহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা সকলের জীবনে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক’- এ কামনা করে তিনি শুক্রবার এক বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেন, এ দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে জ্ঞান, মেধা, কর্মদক্ষতা ও কৃতিত্বে নিজেদের আরও উর্ধে তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, ‘মহামতি বুদ্ধের অহিংস, সাম্য ও মৈত্রীর বাণী এবং তাঁর জীবনাদর্শ ধারণ ও লালন করে আমরা এদেশকে একটি মানবিক, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হব।’ প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, ভয়, লোভ, লালসাকে অতিক্রম করে গৌতম বুদ্ধ সারা জীবন মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, মৈত্রী ও করুণার বাণী প্রচার করেছেন।
×