ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুইফটের নিরাপত্তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

ঝুঁকির মুখে বিশ্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৯ মে ২০১৬

ঝুঁকির মুখে বিশ্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ আর ভিয়েতনামের ব্যাংকে সুইফট মেসেজিং নেটওয়ার্ক হ্যাকের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ পাচারের চেষ্টা চালানোর ঘটনায় সুইফটের নিরাপত্তা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় ব্যাংকগুলো। দুই এশিয়ান ব্যাংকে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছে ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবাদাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান জেপিমরগান। সেইসঙ্গে সুইফট নেটওয়ার্ক এ্যাকসেসের ক্ষমতায়ও সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে। এখন নির্দিষ্ট কিছু কর্মীই কেবল এই নেটওয়ার্ক এ্যাকসেস করতে পারছেন, এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে জানিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। ব্যাংকের সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের বরাতে ওই দৈনিক জানায়, এই পদক্ষেপ নির্দিষ্টিভাবে জেপিমরগানের সুইফট নেটওয়ার্কের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হয়নি। তবে, নিরাপত্তা হুমকির খবরগুলো জানার পর নির্দিষ্ট কিছু সিস্টেমে ব্যবহারকারীদের এ্যাকসেস পুনরায় যাচাইয়ে এটি একটি অংশ। জেপিমরগানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। অন্যদিকে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান ব্যাংকগুলো চায়, এই আক্রমণের ঘটনাগুলোর পর সুইফট সতর্ক হবে ও তাদের নিরাপত্তা বাড়াবে। পরিচয় না দেয়া এক সূত্রের বরাতে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, সুইফট কোনো নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে কিনা আর ব্যাংকগুলোকে তাদের সিস্টেম আরও নিরাপদ করতে সহায়তা করবে কিনা তা নিয়ে সুইফটের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় কিছু মার্কিন ব্যাংক। একই প্রতিবেদনে অন্য আরেকটি পরিচয় গোপন রাখা সূত্রে জানানো হয়, পরবর্তী কোনো আক্রমণের ঝুঁকি যাতে কমে আসে, সেজন্য সুইফট প্রযুক্তিগত কোন সমাধান নিয়ে আসবে বলেও আশা করছে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ব্যাংক। ব্রিটিশ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বিএই সিস্টেমস-এর সূত্র ধরে ব্লুমবার্গ জানায়, চলতি সপ্তাহে ভিয়েতনামের টিপি ব্যাংকে যে সাইবার আক্রমণের ঘটনার কথা জানা গেছে, ওই আক্রমণে ব্যবহৃত ম্যালওয়্যারে অন্তত সাতটি আন্তর্জাতিক ব্যাংকের সুইফট কোড লেখা ছিল। ওই ব্যাংকগুলোতে হওয়া লেনদেনের মেসেজগুলো লুকিয়ে ফেলতে এই ম্যালওয়্যার ব্যবহার করা হতো, এমন তথ্যও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন এই সংবাদ সংস্থা। এটি জানায়, এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অফ চায়না লিমিটেড, ব্যাংক অফ টোকিও, মিতশুবিশি ইউএফজে লিমিটেড, ইউনিক্রেডিট এসপিএ, অস্ট্রেলিয়া এ্যান্ড নিউ জিল্যান্ড ব্যাংকিং গ্রুপ লিমিটেড, ইউনাইটেড ওভারসিজ ব্যাংক লিমিটেড অফ সিঙ্গাপুর আর জাপানের মিজুহো ব্যাংক লিমিটেড। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সূত্র ধরে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এমন বগ বড় ব্যাংকগুলোর নাম উঠে আসায়, উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন বৈশ্বিক ঋণদাতারা। আক্রমণকারীরা শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকেই নজর দিচ্ছে- এমনটা ভাবারো আর কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়ে সুইফটের একজন মুখপাত্র কোন মন্তব্য করতেই রাজি হননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
×